অ্যান্টার্কটিকার হিমবাহের ফাটল বাড়ল আরও ৬ মাইল!

  22-01-2017 11:48AM

পিএনএস ডেস্ক: দ্রুত হারে গলছে আন্টার্কটিকার বরফ। জমাট ‘বরফ-সাম্রাজ্যে’ ফাটল ধরেছিল অনেক আগেই। এখন সেই ফাটল যে হারে বাড়ছে, তাতে রীতিমতো 'থ' হয়ে গিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

থাকে থাকে সাজানো পুরু বরফের চাদরে (হিমবাহ) মোড়া আন্টার্কটিকা। সেই আন্টার্কটিকার সবচেয়ে বড় আর সবচেয়ে পুরু যে বরফের চাদর, সেই ‘লারসেন-সি’ আইস-শেল্ফে ফাটল ধরেছে ১০০ মাইল দীর্ঘ এলাকা জুড়ে। এই জানুয়ারির প্রথম দু’সপ্তাহেই সেই ফাটল আরও ৬ মাইল বেড়ে গিয়েছে। ওই ‘লারসেন-সি’ আইস-শেল্ফের ফাটল সদ্য ফেলে আসা ডিসেম্বরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে বেড়েছিল ১১ মাইল।

তার মানে, এক মাসেরও কম সময়ে আন্টার্কটিকার সবচেয়ে বড় আর সবচেয়ে পুরু বরফের চাদরে কম করে ১৭ মাইল বেড়ে গিয়েছে। এই ফাটল ধরা মানেই সেই ফাটলের ফাঁক গলে ঢুকতে থাকবে সূর্যালোক। ঢুকবে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস। যার ফলে, ওই জমাট বরফ এ বার গলতে শুরু করবে। আন্টার্কটিকার জমাট-বাঁধা ‘বরফ-সাম্রাজ্য’ ভরে যাবে থইথই জলে। আর তা আন্টার্কটিকার ভূগোলে ঘটিয়ে দেবে এক বড়সড় পালাবদল! পৃথিবীর মহাসাগরগুলির পানির-স্তর আরও ৪ ইঞ্চি ওপরে তুলে দেবে। যার ফলে, ওই মহাসাগরগুলির সংলগ্ন বহু এলাকা, বহু দেশ অদূর ভবিষ্যতে চলে যেতে পারে গভীর পানির নিচে।

সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আদ্রিয়ান লুকমানের নেতৃত্বে একটি ব্রিটিশ গবেষকদলের গবেষণায় আন্টার্কটিকার ‘বরফ-সাম্রাজ্যে’ অপ্রত্যাশিত গতিতে ফাটল বেড়ে চলার তথ্যটি প্রমাণিত হয়েছে। গবেষকরা আন্টার্কটিকার ‘বরফ-সাম্রাজ্যে’ বড়সড় ফাটল ধরার তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করেছিলেন মহাকাশে পাঠানো নাসার বিভিন্ন উপগ্রহের মাধ্যমে।

তার গবেষণাপত্রে মূল গবেষক আদ্রিয়ান লুকমান লিখেছেন, ‘মহাসাগরগুলির পানির-স্তরের সমান্তরালেই রয়েছে আন্টার্কটিকার ওই সবচেয়ে বড় আর সবচেয়ে পুরু বরফের চাদর- ‘লারসেন-সি আইস-শেল্ফ’। তবে সৌভাগ্যের কথা একটাই, ফাটল ধরায় ওই বরফ গললেও মহাসাগরগুলিতে এখনই সেই পানি মেশার সম্ভাবনা কিছুটা কম। কারণ, ওই ‘লারসেন-সি আইস-শেল্ফে’র সামনেই রয়েছে ১২ মাইল লম্বা একটা শক্তপোক্ত বরফের প্লেট। সেই প্লেটটাই ‘লারসেন-সি আইস-শেল্ফে’র বরফ গলা জলকে মহাসাগরগুলিতে মিশতে দিচ্ছে না। তাই বিপদটা হয়তো এখনই নেই। কিন্তু ১২ মাইল লম্বা প্লেটটাও যদি অদূর ভবিষ্যতে গলতে শুরু করে দেয়, তা হলে মহাসাগরগুলির পানির স্তর অস্বাভাবিক ভাবে ওপরে উঠে গিয়ে বহু এলাকা আর বেশ কয়েকটি দেশকে ভাসিয়ে দিতে পারে। ’

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন