অন্য প্রাণিরা আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি স্মার্ট!

  28-01-2017 04:11PM

পিএনএস: পৃথিবীর সবচেয়ে স্মার্ট প্রজাতির প্রাণি কোনটি? আপনি হয়তো ভাবতে পারেন মানুষেরাই বুঝি পৃথিবীর সবচেয়ে স্মার্ট প্রাণি। কিন্তু বাস্তবতা সত্যিই বেশ জটিল।

এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তন্যপায়ী প্রাণিবিদ্যা বিশারদ ফ্রান্স ডে ওয়াল “আর উই স্মার্ট এনাফ টু নো হাউ স্মার্ট অ্যানিমেলস আর?” নামের একটি নতুন বই লিখেছেন। এতে তিনি মানুষ ভিন্ন অন্য প্রজাতির প্রাণিদের বুদ্ধিমত্তার শতশত বিস্ময়কর উদারহণ উপস্থাপন করেছেন। এর মধ্যে এমন কিছু উদাহরণও রয়েছে যেসব থেকে মনে হতে পারে অন্য প্রজাতির প্রাণিরা আমাদের মানুষদের চেয়েও বেশি স্মার্ট।

উদারহণত, শিম্পাঞ্জিরা এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে প্রদর্শিত এক সেট নাম্বার স্মরণে মানুষদেরকে সহজেই টেক্কা দিতে সক্ষম।

অক্টোপাসেরা চাইল্ডপ্রুফ ক্যাপ পরা পিল বোতল খোলা শিখতে পারে সহজেই। যা অনেক মানুষই নিজে নিজে শনাক্ত করতে সক্ষম নয়।

কুকুর এবং ঘোড়ারা দেহভঙ্গি দেখে মনের কথা বলে দিতে পারে। যে দক্ষতাটি আমরা মানুষেরা হারিয়ে ফেলেছি।

অনেক প্রজাতিই এমন সব কাজ করতে পারে যা আমরা মানুষেরা এমনকি কল্পনাও করতে সক্ষম নই। বাদুর নিজের সৃষ্ট শব্দের প্রতিধ্বনি থেকে পথের বাধাগুলো শনাক্ত করে তা এড়িয়ে চলতে পারে। পাখিরা উড্ডয়ন এবং অবতরণের জটিল কলাকৌশল জানে।

প্রকৃতপক্ষে প্রতিটি প্রজাতির প্রাণিরই টিকে থাকার প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষতা রয়েছে।

কিন্তু মানুষেরা সাধারণত প্রাণিদের জ্ঞানীয় দক্ষতার মূল্যায়ন করতে গিয়ে বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে তাদের নিজস্ব সংজ্ঞানুযায়ী মূল্যায়ন করে এবং তালগোল পাকিয়ে ফেলে।

অথচ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় মানুষদের সঙ্গে প্রাণিদের বিস্ময়কর মিল আছে।

উদারহণত, মানুষদের ডিএনএর সঙ্গে শিম্পাঞ্জিদের ডিএনএর ৯৯% মিল আছে। গবেষণায় নানা তৎপরতায় দেখা গেছে শিম্পাঞ্জীদের জ্ঞানীয় জটিলতা প্রায় মানুষদের সমপর্যায়ের। আবার এমন কিছু ক্ষেত্র আছে যেখানে শিম্পাঞ্জীদের চিন্তার সক্ষমতা মানুষদের চিন্তার সক্ষমতাকেও ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে রয়েছে সংক্ষিপ্ত মেয়াদে পুরোনো স্মৃতি স্মরণ এবং এক ধরনের সামাজিক সচেতনতা।

ডে ওয়াল বলেন, আমরা একটি নতুন বৈজ্ঞানিক যুগের সুচনাতে রয়েছি। যে বিজ্ঞান প্রাণিদের জ্ঞানীয় দক্ষতার জটিলতা উদঘাটনে সক্ষম।

এই বিজ্ঞানের সুবাদে আমরা শুনেছি যে, ইঁদুরেরা তাদের নিজেদের কোনো ভুল সিদ্ধান্তের জন্য পরে আক্ষেপ বা অনুশোচনা করতে সক্ষম। কাকেরা হাতিয়ার তৈরি করতে পারে।
অক্টোপাসেরা মানুষের চেহারা শনাক্ত করতে পারে। আর বিশেষ নিউরণ বানরদেরকে পরস্পরের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণে সহায়তা করে। প্রাণিদের মধ্যেও সাংস্কৃতিক চর্চা আছে এবং তারাও পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করে এবং পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। কিছুই আর সীমাবদ্ধ নেই। এমনকি যে যৌক্তিক প্রবণতাকে শুধু মানুষের গুণ বলে ভাবা হত সে যৌক্তিক প্রবণতাও দেখা গেছে অন্য প্রাণিদের মধ্যে।

এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের ফলে শুধু যে দুনিয়াটারই আরো ভালো বুঝ পাওয়া সম্ভব হচ্ছে তা নয় বরং এর ফলে প্রাণি অধিকার নিয়েও নতুন করে তর্ক বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিছু কিছু সংগঠন শিম্পাঞ্জীদেরকে মানুষেদের মতো আইনী অধিকার দেওয়ার ব্যাপারে বিতর্ক তুলেছে।

যে ওয়াল বলেন, তিনি প্রাণিদের প্রতি ভালো আচরণে উৎসাহিত করনের বিষয়টিকে সমর্থন করেন। কিন্তু তিনি শুধু সীমিত সংখ্যক কয়েকটি প্রজাতিকেই আইনী অধিকার দেওয়ার সমস্যা নিয়েও কথা বলেছেন।

কারণ বিশেষ কোনো প্রজাতিই বিশেষ কোনো আইনী অধিকার পাওয়ার যোগ্য এটা বলার সঠিক কোনো মানদণ্ড নেই।

সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট


পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন