অদ্ভুত উপায়ে দেহের ওজন কমাবে এ যন্ত্র

  03-02-2017 05:46PM



পিএনএস ডেস্ক: সম্প্রতি গবেষকরা নতুন এক ডিভাইস দেহের ওজন কমানোর জন্য ব্যবহারের চিন্তা করছেন। ভিব্লক নামে এ ডিভাইসটি বেশ অদ্ভুত উপায়ে দেহের ওজন কমায়।

এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।

প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইন্টেরোমেডিক্স এ ডিভাইসটির নির্মাতা। ভিব্লক নামে এ মেশিনটি অনেকটা হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন নিয়মিত করতে সহায়ক পেসমেকারের মতো কাজ করে।

কী কাজ করে ডিভাইসটি? ডিভাইসটি মূলত কাজ করে ক্ষুধা কমাতে। আর এর মাধ্যমেই দেহের ওজন কমাতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ ক্ষুধা কমে গেলে মানুষ স্বভাবতই বাড়তি খাবার খেতে আগ্রহী হবে না।

কিভাবে কাজ করে ডিভাইসটি? এ ডিভাইসটি মূলত পাকস্থলির সঙ্গে মস্তিষ্কের সংযোগ স্থাপনকারী স্নায়ুর মাঝে কাজ করে। ক্ষুধার যে সংকেত পেট থেকে মস্তিষ্কে যায়, তা বন্ধ করে দেয় ডিভাইসটি। ফলে ক্ষুধার অনুভূতি কমে যায়।

কোথায় স্থাপন করা হয় ডিভাইসটি? চিকিৎসকরা এ ডিভাইসটি শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে ত্বকের নিচে স্থাপন করেন। পেটের 'ভ্যাগাস' নার্ভের সঙ্গে এর সংযোগ স্থাপন করতে হয় দুটি তারের সহায়তায়। এ তথ্য জানিয়েছেন, চার্লসটনের ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ড. কেনেথ মিশেল।

প্রাথমিকভাবে দেহে স্থাপনের পর দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত রোগীকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এরপর তা চালু করা হয়। এটি একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামের সহায়তায় পরিচালনা করা হয়। এজন্য তারহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করে ডিভাইসটি। একবার স্থাপনের পর সারা জীবন এটি ব্যবহার করতে পারে একজন রোগী। এটি প্রতিদিন প্রায় ১৪ ঘণ্টা করে চালনোর প্রয়োজন হতে পারে। এতে রিচার্জেবল ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়, যা রোগী নিজেই চার্জ করতে পারবেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ব্যাটারিটি ১০ বছর পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছাড়াই চলতে সক্ষম।

এ ডিভাইসটি স্থাপন করেছেন এমন একজন রোগী হলেন ক্যাথি নিউওয়েল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার বাসিন্দা তিনি। তিনি বলেন, বহু বছর ধরেই ওজন কমানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এরপর এ ডিভাইসটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এ ডিভাইসটি স্থাপন করা হয়েছে তার দেহে। ডিভাইসটি স্থাপনের পর তিনি এর ফলাফলে খুবই সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা এ ডিভাইসটির নির্মাতা। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে স্থূল মানুষের সংখ্যা ক্রমে বাড়তে বাড়তে ৩৭ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। আর ২০০০ সালের পর থেকে এ বৃদ্ধি ১২ শতাংশ। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বিশ্বের নানা দেশের মানুষের মাঝেই দেহের ওজন বৃদ্ধির অস্বাভাবিক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণের এ যন্ত্রটি যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ২০১৫ সালেই যন্ত্রটি অনুমোদন করেছে। তবে এটি এখন পর্যন্ত৭৪ জন রোগীর দেহে স্থাপন করা হয়েছে। ডিভাইসটি একবার স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ১৮ হাজার ৫০০ ডলার। বিশেষজ্ঞরা এখনও ডিভাইসটি পর্যবেক্ষণ করছেন। রোগীদের দেহে স্থাপনে সফলতা পাওয়া গেলে পরবর্তীতে এটি আরও রোগীর দেহে স্থাপন করা হবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন