অটোমেশনে কার বেশি লাভ- নারী না পুরুষের?

  07-10-2017 03:30PM

পিএনএস ডেস্ক: ইন্টারনেটে ভার্চুয়াল ওয়েটার কিম্বা ওয়েট্রেস, বিমানবন্দরে মেশিনের সাহায্যে নিজে নিজেই চেক ইন কিম্বা মিউজিক কনসার্টে এক রোবটের সঙ্গীত পরিচালনা --এসবই এখন হচ্ছে অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবটিক্সের কারণে।

বলা হচ্ছে, এটাই ভবিষ্যত কর্মেক্ষত্রের চেহারা, আপনি পছন্দ করুন আর না-ই করুন। কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি নারী ও পুরুষের কর্মজীবনকে কতোটা প্রভাবিত করবে? এর ফলে নারী নাকি পুরুষের বেশি লাভ হবে, অথবা কার ক্ষতি হতে পারে বেশি?

কাজের দুনিয়ায় এর লাভ ক্ষতি নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু এই বাস্তব সত্যকে অস্বীকার করার উপায় নেই যে আরো বেশি রোবট এবং আরো বেশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অর্থই হচ্ছে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ইত্যাদি খাতে আরো বেশি বেশি কর্মসংস্থান।

ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের বৃহৎ বৃহৎ সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের দেশ বলে পরিচিত অ্যামেরিকায় এসব চাকরি আগামী দশকে কয়েক লাখ বাড়বে।

বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, নারী ও পুরুষের বর্তমান যে অনুপাত সেটা যদি ২০২০ সাল পর্যন্ত একই থাকে, তাহলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো খাতে নতুন পাঁচটি চাকরির মধ্যে মাত্র একটি হবে নারীর।

এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, অটোমেশনের কারণে পুরুষের তুলনায় নারীরাই বেশি চাকরি হারাবেন।

আবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক ড. কার্ল ফ্রে বলেছেন, যেসব তথ্য উপাত্ত আছে তাতে অটোমেশনের কারণে বহু পুরুষের চাকরি হারানোর ঝুঁকি আছে। তিনি বলছেন, গত শতাব্দীতে এই অটোমেশনের কারণে আসলে চাকরি-বাকরির ব্যাপারে নারীরাই নানা উপায়ে লাভবান হয়েছে।

মেশিন এমন চাকরির সুযোগ তৈরি করেছে যার জন্যে পড়া ও স্মৃতির মতো কগনিটিভ দক্ষতার প্রয়োজন। নারীর এই দক্ষতা বেশি যা মূলত পুরুষের শারীরিক কাজকে প্রতিস্থাপন করেছে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ২০১৬ সালে 'চাকরির ভবিষ্যৎ' বলে যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে সেখানে বলা হয়েছে অটোমেশনের কারণে নারী ও পুরুষ দুজনেই সমানভাবে চাকরি হারাবে।

প্রাইসওয়াটারহাউজকুপার্স তাদের ২০১৭ সালের গবেষণায় বলছে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং জার্মানিতে অটোমেশনের কারণে পুরুষরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়বে।

তবে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএসইএ বলছে, অটোমেশনের কারণে নারীদেরই চাকরি হারানোর আশঙ্কা বেশি।কেননা বেশিরভাগ অটোমেশনের ঘটনা ঘটবে প্রশাসনিক কাজে যে কাজটা পুরুষের তুলনায় নারীরাই বেশি করে থাকেন।

তবে বিশ্বের একেক জায়গায় ও একেক খাতে এই পরিবর্তন একেক রকমের হবে।অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপরেও এই অটোমেশনের অগ্রগতি নির্ভর করছে।

ভবিষ্যতে এমন চাকরিও তৈরি হবে যে চাকরির অস্তিত্বই হয়তো এখন নেই। এবং রোবট দিয়ে করা যায় এমন চাকরির চাহিদাও হয়তো বৃদ্ধি পেতে পারে।

তবে এসব নিয়ে নৈতিকতার অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। আছে সামাজিক উদ্বেগও। সবার কাছেই কি এসব অটোমেশন সমানভাবে গ্রহণযোগ্য হবে? যেমন ধরুন সবাই কি চাইবে তাদের বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া পিতামাতাকে কোন একটি রোবট দেখাশোনা করুক? খবর বিবিসি।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন