মেঘের রহস্য ভেদ করার অভিনব উদ্যোগ

  09-11-2017 06:05PM

পিএনএস ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ফুটিয়ে তুলতে যে মডেল ব্যবহার করা হয়, অনেক সূক্ষ্ম তথ্যের অভাবে তা আজ সম্পূর্ণ নয়৷ বিজ্ঞানীরা এক বিশেষ ও উন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আরও নিখুঁতভাবে গ্যাস পরিমাপ করছেন৷

জলবায়ুর ক্ষেত্রে মেঘের দু-দু'টি ভূমিকা রয়েছে৷ একদিকে মেঘ তার ছায়ার সাহায্যে ভূপৃষ্ঠ শীতল রাখে, অন্যদিকে পৃথিবী থেকে যে উত্তাপ বিকিরণ হচ্ছে, তার প্রতিফলন ঘটায়৷ মেঘেদের সম্মিলিত প্রভাব পরিমাপ করা কঠিন৷ কিন্তু মেঘের পরিবর্তনের ফলে কি বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব আরও জোরালো হচ্ছে?

এক টাস্ক ফোর্স এক প্রাক্তন রুশ গোয়েন্দা বিমান কাজে লাগিয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে৷ এই ‘গেওফিজিকা' বিমান ২০,০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত উড়তে পারে, অর্থাৎ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ছুঁতে পারে৷

এমন এক অ্যাডভেঞ্চারে ভরা মিশনে বিজ্ঞানীরা শুধু মেঘ তৈরির প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে চাইছেন না, তাঁরা মিথেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো জলবায়ুর জন্য প্রাসঙ্গিক গ্যাসগুলিও আরও ভালোভাবে পরীক্ষা করতে চান৷ জলবায়ু গবেষক মার্টিন রিসে বলেন, ‘‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গোষ্ঠী একই লক্ষ্য নিয়ে একত্র হয়ে কাজ করছে৷ আমরা এমন তথ্য সংগ্রহ করছি, যা সহজে পাওয়া সম্ভব নয়৷ কিন্তু জলবায়ুর মডেল আরও উন্নত করতে এই তথ্যের প্রয়োজন রয়েছে৷''

এই ক্যামেরা ক্ষুদ্রতম আলোর পার্টিকেলের সামান্য ইনফ্রারেড বিকিরণও পরিমাপ করতে পারে৷ ফলে বায়ুমণ্ডলে বাতাসের উপকরণ নির্ধারণ করা যায়৷ গেওফিজিকা বিমানের ককপিটের ঠিক নীচে সেই ক্যামেরা বসানো আছে৷

গ্লোরিয়া নামের এই নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে গবেষকরা গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব আরও নিখুঁতভাবে শনাক্ত করে বর্তমান জলবায়ু মডেলের উন্নতি করতে চান৷ গোটা বিশ্বে এই প্রথম নতুন প্রজন্মের এই পরিমাপের যন্ত্র প্রয়োগ করা হচ্ছে৷ ভবিষ্যতে এগুলি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইটে বসানো হবে৷

গ্লোরিয়া-র সবচেয়ে সেরা আকর্ষণ হলো এক ইনফ্রারেড ক্যামেরা, যা নড়াচড়া সত্ত্বেও স্থিতিশীল থাকে৷ সেই ক্যামেরা দিয়ে তোলা উচ্চ মানের ফটোর সাহায্যে জলবায়ুর গ্যাসের ঘনত্ব ও বায়ুমণ্ডলে সেগুলির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা যায়, যেমনটা আগে কখনো সম্ভব হয়নি৷ মার্টিন রিসে বলেন, ‘‘গ্লোরিয়া তার ইনফ্রারেড বিকিরণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে গ্যাস পরিমাপ করে৷ যে কোনো বস্তুর মতো অতি ক্ষুদ্র পার্টিকেল, মেঘের অংশ ও অণুও বায়ুমণ্ডলে ইনফ্রারেড স্তরে বিকিরণ করে৷ সেগুলি শনাক্ত ও পরিমাপ করা সম্ভব৷''

গোটা বিশ্বে মাত্র ৪ জন পাইলট গেওফিজিকা বিমান ওড়াতে পারেন৷ তাঁরা সবাই রুশ বিমানবাহিনীর টেস্ট পাইলট৷ উড়ালের আগে সকাল ১০টা নাগাদ শেষ প্রস্তুতি চলছে৷ উত্তেজনা বাড়ছে৷ গবেষকদের দল অনেক কাজ করেছে৷ গ্লোরিয়ার প্রথম পরীক্ষামূলক উড়াল শুরু হতে চলেছে৷ বিমানের যন্ত্রাপাতিগুলিকে কঠিন পরিস্থিতি সহ্য করতে হবে৷

মার্টিন রিসে বলেন, ‘‘গ্লোরিয়াকে গ্রীষ্মপ্রধান এলাকা থেকে মেরু অঞ্চলে পরিমাপের কাজ চালাতে হয়৷ আমরা রুশ গবেষণা বিমান গেওফিজিকায় এটি ব্যবহার করছি৷ ইউরোপে এটা একটা অভিনব প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে এই যন্ত্র ২১ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছতে পারছে৷ সেখানে ভীষণ ঠাণ্ডা, তাপমাত্রা প্রায় মাইনাস ৮০ ডিগ্রি৷

ইলেকট্রনিক ও যান্ত্রিক সিস্টেমের তা সামলানোর ক্ষমতা থাকতে হবে৷''
প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ালেই কি গ্লোরিয়া ঠিকঠাক কাজ করবে এবং সফলভাবে পরিমাপের কাজ করতে পারবে? প্রায় ২০ কিলোমিটার উচ্চতার পরিস্থিতি কোনো ল্যাবেই সিমুলেট বা নকল করা সম্ভব নয়৷ গেওফিজিকার লক্ষ্য মেরু প্রদেশের ঘূর্ণিঝড়৷ শীতে উত্ত

পিএনএস/জে

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন