পারমাণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা

  05-01-2020 10:54AM

পিএনএস ডেস্ক : পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র বলতে দুটি। পারমাণবিক বোমা ও হাইড্রোজেন বোমা। পারমাণবিক বোমার শক্তি বিশ্ববিদিত। কিন্তু তার চেয়েও শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা। এখন প্রশ্ন কী এই পারমাণবিক বোমা ও হাইড্রোজেন বোমা?

জাপানের উপর যখন আমেরিকা লিটল বয় ও ফ্যাট ম্যান ফেলেছিল, তখন কী হয়েছিল, তা কারোর অজানা নয়। দুটোই ছিল পারমাণবিক বোমা। নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়ায় এই বোমা তৈরি করা হয়। বোমাটি বিস্ফোরণ ঘটালে তার মধ্যস্থিত ইউরেনিয়াম বা প্লুটোনিয়ামের পরমাণু ভাঙতে থাকে। সেখান থেকেই এনার্জি তৈরি হয়। যার পরিণতি ইতিমধ্যেই হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে দেখেছে বিশ্ব।

এ বোমা (অ্যাটোমিক বোমা) প্রথম টেস্ট করা হয় মরুভূমিতে। জায়গাটি ছিল আমেরিকার নিউ মেক্সিকোয়। দিন, ১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই। মনহাট্টন প্রজেক্টের (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি একটি গবেষণা বিষয়ক প্রজেক্ট। ব্রিটেন ও কানাডার সহযোগিতায় আমেরিকা এটি শুরু করে) এটি ছিল সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ। প্রজেক্টের দেশগুলো মনে করেছিল নাজি জার্মানিও এমনই কিছু পরিকল্পনা করেছে।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট আমেরিকা জাপানের হিরোশিমার উপর প্রথম পরমাণু বোমাটি ফেলে। বোমার নাম ছিল লিটল বয়। বিস্ফোরণের ফলে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তবে অবস্থার এখানেই শেষ নয়। এখনও পর্যন্ত এর প্রভাব বয়ে চলেছে হিরোশিমা। এর ঠিক ৩ দিন পর নাগাসাকির উপর ফ্যাট ম্যান ফেলে আমেরিকা। সেখানে ৭৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এই বোমা দুটির বিস্ফোরণের ফলে যে এনার্জি উত্পন্ন হয়, তা প্রায় ২০ হাজার টিএনটি (ট্রাই নাইট্রো টলুইন)-র সমান।

দ্বিতীয় দেশ হিসেবে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায় সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৪৯ সালে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। ব্রিটেন হল তৃতীয় দেশ যেটি পারমাণবিক বোমা টেস্ট করে। চীন, ফ্রান্স, ভারত, উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তানের কাছে আজ পারমাণবিক বোমা রয়েছে। ইজরায়েলের কাছে এই বোমা আছে কিনা তা জানাতে অস্বীকার করেছে তারা।

পারমাণবিক বোমার থেকেও শক্তিশালি হাইড্রোজেন বোমা। এর আর এক নাম থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা। হাউড্রোজেনের আইসোটোপের নিউক্লিয় সংযোজন পদ্ধতিতে এই বোমা কাজ করে। এই বোমা বিস্ফোরণের ফলে যে উত্তাপ তৈরি হয় সেটি সূর্যের মধ্যস্থিত শক্তির সমান। এখনও পর্যন্ত হাইড্রোজেন বোমা কোন যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়নি।

হাইড্রোজেন বোম দুই প্রক্রিয়ায় বিস্ফোরণ হয়। প্রথমে নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণ হয়। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে তাপ উত্পন্ন হয়। তারপর সেটি নিউক্লিয়ার ফিউশনকে উদ্দীপ্ত করে। পুরো প্রক্রিয়ায় বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে।

মার্কিন সেনা প্রথম হাইড্রোজেন বোমা টেস্ট করে ১৯৫২ সালে। পারমাণবিক বোমার চেয়ে এটি ৭০০ গুণ বেশি শক্তিশালী। এর এক বছর পর সোভিয়েত ইউনিয়ন নিজের হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। সালটি ছিল ১৯৬১। তসার বোম্বা নামে একটি হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। বিস্ফোরণের ফলে প্রায় ৫৭ মেগা টন শক্তি উত্পন্ন হয়। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও যুদ্ধে হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়নি।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন