শুভ জন্মদিন গুগল

  27-09-2020 03:53PM

পিএনএস ডেস্ক: আজ ২৭ সেপ্টেম্বর ইন্টারনেট জায়ান্ট ‘গুগল’ উদযাপন করছে তাদের ২২তম জন্মদিন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তথ্যের ক্ষুধা মেটাতে গুগলের জুড়ি মেলা ভার। যে কোনো প্রয়োজনে গুগল সার্চ করলে তথ্যের ঝাঁপি মেলে ধরে ব্যবহারকারীর সামনে।

জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ অ্যানিমেটেড ডুডল প্রকাশ করেছে এই সার্চ জায়ান্ট।

১৯৯৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন নামের দুজন পিএইচডি কোর্সের ছাত্রের হাত ধরে শুরু হয় গুগলের পথচলা। প্রথমে তারা এর নাম দিয়েছিলেন ‘BackRub’। এটি ব্যক্তিগত ওয়েব পেজের জন্য তৈরি হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে তারা নতুন কোম্পানি শুরুর উদ্যেগ নেন। তখন এর নাম পরিবরর্তন করে নতুন নাম রাখে ‘Google’ রাখেন।

গুগল নামের পেছনে একটি গল্প রয়েছে, যা অনেকেরই হয়তো অজানা। জানা যায়, শব্দের বানান ভুল থেকে গুগল নামের উৎপত্তি। গাণিতিক হিসাবের গোগল (googol)-এর অর্থ একটি সংখ্যার পেছনে একশ শূন্য। একজন প্রকৌশলী আসল নামের বদলে এই ভুল বানানটি লিখেছিলেন। সেই ভুল নামই এখন গুগল!

১৯৯৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ল্যারি পেইজ ও সের্গেই ব্রিন একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে গুগল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৪ সালের ১৯ আগস্ট এটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। সময়ের সঙ্গে নিত্যনতুন পণ্য ও সেবা যোগ করে এই সার্চ ইঞ্জিন প্রযুক্তি দুনিয়ার এক মহীরুহে পরিণত হয়েছে।

বর্তমানে গুগলের সবচেয়ে জনপ্রিয় সেবা গুগল সার্চ। এছাড়া মেইল আদান প্রদানের জন্য জিমেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গুগল প্লাস এবং মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড গুগলের অন্যতম সেবা।

জন্মদিন উপলক্ষে গুগলের ডুডল
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ঢোকা হয় গুগল ওয়েবসাইটে। বর্তমানে এর কর্মী সংখ্যা সোয়া লাখ। এর সদর দফতর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে।

২০০৬ সাল থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর গুগলের জন্মদিন পালন করে আসছে গুগল।

গুগলের শুরু
আজকের পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভিজিট করা ওয়েবসাইটটি ১৯৯৮ সালে শুরু করেছিলেন ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন নামে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন দুই পিএইচডি শিক্ষার্থী। সে সময় ব্যবহূত গতানুগতিক সার্চ ইঞ্জিনের বাইরে গিয়ে তারা কিছু তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তাদের তৈরি করা সার্চ ইঞ্জিন যেটি ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্নেষণ করে ফলাফল দেখাতে সক্ষম, সেই গুগল কিন্তু সে সময় ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল।

যেভাবে গুগল
ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন শুরুতে এই প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছিলেন ব্যাকরাব। যে পদ্ধতিতে একটি ওয়েবসাইট আরেকটি ওয়েবসাইটকে খুঁজে বের করে এবং সেগুলোর পুরোনো লিংকের ওপর নির্ভর করে ওয়েবপেজে র‌্যাংকিং করে, তাকেই বলা হয় ব্যাকরাব। পরবর্তী সময়ে তারা নাম পরিবর্তন করে গুগল রাখেন, যা আসলে ভুল বানানে লেখা 'মড়ড়মড়ষ' থেকে এসেছে। এটি দিয়ে বোঝানো হতো একটি সংখ্যার পেছনে একশত শূন্য। এরপর তা নাম হিসেবে নির্বাচন করা হয়; কারণ তারা অনুসন্ধান ইঞ্জিনের বিশাল পরিমাণ তথ্য প্রদানের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিতে চেয়েছিলেন। প্রথমত, গুগল স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটের অধীনে চলত, যার ঠিকানা ছি- google.stanford.edu Ges z.stanford.edu|

গুগল ডুডল
কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা দিনের স্মারক হিসেবে গুগলের হোম পেজে দিনব্যাপী একটি ছবি ব্যবহার করতে দেখা যায়; যা গুগল ডুডল নামে পরিচিত। ১৯৯৮ সালে বার্নিং ম্যান নামের একটি উৎসব উদযাপনের জন্য প্রথম গুগল ডুডল ব্যবহূত হয়। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় যে, তারা অনেকদিন গুগল ব্যবহার করছেন না! পরে অবশ্য ডুডলের জনপ্রিয়তায় 'ডুডলার' নামে কর্মীও নিয়োগ দিতে হয় ডুডল ডিজাইন করার জন্য। স্যার আইজ্যাক নিউটনের সম্মানার্থে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে গুগল, প্রথমবারের মতো এনিমেটেড ডুডল প্রকাশ করে। প্যাক-ম্যান উদযাপন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডুডল প্রকাশ করা হয় এবং এটির মাধ্যমে ডুডলে হাইপারলিংকও দেওয়া শুরু হয়, যেটিতে ক্লিক করলে ওই বিষয়বস্তু সম্পর্কিত গুগলে সার্চ ফলাফল দেখানো হয়। গুগলের সবচেয়ে স্মরণীয় ডুডলগুলোর অন্যতম হচ্ছে চাঁদে পানির অনুসন্ধান এবং জন লেননের ৭০তম জন্মদিন উদযাপনের জন্য ব্যবহার করা ডুডল। জন লেননের ডুডলটিই ছিল গুগলের প্রথম ভিডিও ডুডল।

গুগলের প্রধান নির্বাহী
গুগলের বর্তমান সিইও সুন্দর পিচাই। সুন্দর পিচাই নামটি অপরিচিত মনে হলেও গুগলের এই প্রধান নির্বাহীর তৈরি কয়েকটি সেবা আপনার খুব পরিচিত। গুগলের ক্রোম ব্রাউজার ও অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে তার। গুগল অ্যালফাবেট নামের একটি মূল প্রতিষ্ঠান তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। গুগল থাকবে অ্যালফাবেটের অধীনে। সুন্দর পিচাইকে গুগলের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব দিয়ে ওই পদ থেকে সরে গেছেন প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ল্যারি পেজ। তিনি অ্যালফাবেটের প্রধান নির্বাহীর পদে দায়িত্ব নিয়েছেন। অ্যালফাবেটের অধীনে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন পিচাই। গুগলের নিজস্ব ই-মেইল সেবা জিমেইলের কথা ঘোষণা করা হয় ২০০৪ সালে ১ এপ্রিল বা এপ্রিল ফুলস ডে'তে। অনেকেই ভেবেছিলেন, এটা আসলে একটা রসিকতা।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন