দুই বছরের মধ্যে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার আশা

  21-03-2021 09:48PM

পিএনএস ডেস্ক : আগামী দুই বছরের মধ্যে মোবাইল হ্যান্ডসেটের চাহিদার শতভাগই দেশে উৎপাদনের প্রত্যাশা করছে স্থানীয় মোবাইল ফোন উৎপাদনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিএ)।

এজন্য এ খাতের বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতির সুযোগ বহাল রাখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএমপিএ।

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যে রোববার এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রাক বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব দিয়েছে তারা। মোবাইলের পাশাপাশি রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনারসহ সব ইলেকট্রিক এবং ইলেকট্রনিক্স পণ্যেই একই রকম সুবিধা চেয়েছে উৎপাদকরা।

এনবিআরের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএমপিআইএ সভাপতি আলম আল মাহমুদ বলেন, ২০২০ সালে হ্যান্ড সেটের চাহিদার ৮৫ শতাংশই দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি বা অ্যাসেম্বল করেছে। সরকারের নীতি সহায়তার কারণে মাত্র ৫ বছরের মধ্যে এটি হয়েছে। আমরা বর্তমানে ভ্যাট অব্যাহতি ও সরকারের দেয়া হাইটেক পার্কের কর ছাড়ের সুবিধা পাচ্ছি। নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রফতানির সুযোগও তৈরি হয়েছে আমাদের জন্য। কমপক্ষে আগামী দুই বছর এ সুযোগ অব্যাহত রাখা দরকার।

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) তথ্যমতে বাংলাদেশে প্রতি বছর নতুন মোবাইল সেটের চাহিদা রয়েছে সাড়ে তিন কোটি। এর মধ্যে ৯০ লাখের মতো স্মার্টফোন এবং ২.৬০ কোটি ফিচার ফোন। বর্তমানে বাংলাদেশের স্থাপিত কারখানাগুলোই ৭৫ লাখের বেশি স্মার্টফোন সরবরাহ করছে। তবে ফিচার ফোনের একটি বড় অংশ এখনো বিদেশ থেকে আমদানি হচ্ছে।

সংগঠনটির তথ্যমতে, চলতি বছরসহ গত তিন বছরে দেশে স্মার্টফোন আমদানি ব্যাপকহারে কমেছে। ২০১৭ সালে দেশে ৮১.৬৮ লাখ পিস স্মার্টফোন আমদানি হলেও ২০১৯ সালে তা ২৪ লাখে নেমে আসে। আর ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এ সংখ্যা আরো কমে সাড়ে ৯ লাখে নেমে এসেছে।

মূলত মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানিতে শুল্কারোপ এবং স্থানীয় উৎপাদনে কর অবকাশ সুবিধা ও ভ্যাট অব্যাহতির কারণে দেশে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পাশাপাশি অ্যাসেম্বলিং কারখানা স্থাপন করেছে প্রায় সবগুলো বড় ব্র্যান্ড। ফলে আমদানি নির্ভরতা কাটিয়ে সম্পূর্নতার দিকে এগোচ্ছে দেশ।

এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে আমদানি করা মোবাইলে সব মিলিয়ে ৫৭ শতাংশ কর দিতে হয়। যেখানে দেশে অ্যাসেম্বলিংয়ে কর দিতে হয় মাত্র ১৮ শতাংশ।

বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে টিভি ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ও কেবিনেটে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সোহেল খান।

বিদ্যুতের কাজে ব্যবহৃত ম্যাটেরিয়ালসে নিত্য প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি মেশিনারি আমদানিতে কর ছাড় চেয়েছেন বাংলাদেশ ইলেট্রিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহাদাত হোসেন।

বিদ্যুতের কাজে ব্যবহৃত অটোমেটিক সার্কিট ব্রেকার আমদানিতে শুল্ক হার ৫ শতাংশ, এলইডি টিউব অ‌্যান্ড বাল্বে ৫ শতাংশ, আদার সুইচেস অ‌্যান্ড সকেট এবং সুইচ-সকেট পার্টসে ২৫ শতাংশ, ইলেকট্রিক ফ্যান মোটরে ১ শতাংশ, ইউরিয়া রেজিনে ৫ শতাংশ; বৈদ্যুতিক ফ্যান (ডোমেস্টিক রুম ফ্যান) ২৫ শতাংশের সঙ্গে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন তিনি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ২৪ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটর আমদানিতে কর অব্যাহতি চেয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি।

পিএনএস-জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন