শেরপুরে ধানের কৃত্রিম সঙ্কট অস্থিতিশীল চালের বাজার

  22-10-2016 05:48PM

পিএনএস,শেরপুর (বগুড়া) :ধানের কৃত্রিম সঙ্কটে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে চালের বাজার। এরই সুযোগ নিচ্ছেন একশ্রেণির মুনালোভী ব্যবসায়ীরা। তারা ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে জোর অভিযোগ উঠেছে। এদিকে চাহিদা অনুযায়ী ধান না পাওয়া এবং অব্যাহত লোকসান ঠেকাতে বাধ্য হয়ে সিংহভাগ চাতাল বন্ধ রেখেছেন ছোট ও মাঝারি স্তরের ব্যবসায়ীরা। গতকাল শুক্রবার (২১অক্টোবর) বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় সরেজমিন ঘুরে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বললে চালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার পেছনের নানা তথ্য ওঠে আসে।

জাহাঙ্গীর আলম চয়ন, জামাল সেখ, আব্দুস সালাম, আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ একাধিক ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ী জানান, উত্তরাঞ্চলের পাটগ্রাম, লালমনিরহাট, বলারহাট, কিচক, গাইবান্ধার বিরাটহাট, বালাশীহাট, নওগাঁর ধামুরহাট, মহাদেবপুর, মদইল ধানের অন্যতম মোকাম। এসব মোকাম থেকে বড় ব্যবসায়ীরা টনে টনে ধান কিনে এনে গুদামে মজুদ গড়ে তুলেছেন। এদের মধ্যে অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন যাদের আগামি দুই আড়াই মাস ধান না কিনলেও চলবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে ধানের মোকামে। যে কারণে মোকামগুলো এখন ধানশুন্য হয়ে পড়েছে। বড় ব্যবসায়ীদের মুনাফালোভী মনোভাবের কারণে বাজারে ধানের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরী হয়েছে বলেও মনে করেন এসব ব্যবসায়ীরা।

তাঁরা আরো জানান, মজুদদারের তালিকায় অসংখ্য মৌসুমী ও মাঝারি ব্যবসায়ীও রয়েছেন। যারা সর্বনিম্ন ২হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০হাজার মণ পর্যন্ত ধান গুদামজাত করে রেখেছেন। মূলত মজুদদারদের কারসাজিতে সৃষ্ট ধানের কৃত্রিম সঙ্কটের কারণেই চালের বাজার অস্থিতিশীল। ফলে সকালেই চালের দাম বেশি আবার বিকেলেই চালের দাম কমে যাচ্ছে। বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় এই ব্যবসায় লোকসান প্রায় নিশ্চিত বলে তারা জানান। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ জানান, এই উপজেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় পাঁচশতাধিক চাতাল রয়েছে। আর চারশ’র মত রাইস মিল রয়েছে। এরমধ্যে ৪টি অটোমেটিক রাইস মিল রয়েছে। মিলগুলো চালু রাখতে ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ি প্রতিটি মিলের জন্য অনেক ধানের প্রয়োজন। কিন্তু মোকামগুলোতে ধান পাওয়া যাচ্ছে না।

স্থানীয় হাটবাজারগুলোর অবস্থাও একই। ফলে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ধান কিনতে পারছেন না। এই কারণে উপজেলার সিংহভাগ চাতাল বন্ধ রয়েছে। এতে করে চাহিদা অনুযায়ি চাল উৎপাদন হচ্ছে না। অন্য উপজেলাগুলোতেও একই অবস্থা। ফলে চালের বাজার অস্থিতিশীল বলে এই নেতা মন্তব্য করেন। স্থানীয় বারোদুয়ারী, মির্জাপুরসহ বেশ কয়েকটি হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, এসব হাটে সীমিত আকারে বিভিন্ন জাতের ধান উঠছে। এরমধ্যে প্রতিমণ বিআর-২৮জাতের ধান ৯২০-৯৫০টাকা, বিআর-২৯ ৯০০-৯২০টাকা, জিরাশাইল ৯০০-৯২০টাকা, কাজললতা ১০৫০-১০৬০টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে। অপরদিকে বিআর-২৮জাতের প্রতিবস্তা (সাড়ে ৯৩কেজি) চাল ৩৪০০-৩৫০০টাকা, বিআর-২৯ ৩২০০-৩৪০০টাকা, জিরাশাইল ৩৪০০-৩৫০০টাকা, কাজললতা ৩৬০০-৩৮০০টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে এসব হাটবাজারে।



পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন