শিক্ষকদের বেতনবিলে জালিয়াতি, প্রমাণ মিললেও ব্যবস্থা নেই

  26-10-2016 12:39PM


পিএনএস ডেস্ক: সিরাজগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বিলে কর্মকর্তার সই জালিয়াতি বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হলেও অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে গড়িমশির অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তবে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রেজেয়ান হোসেন দেড় মাস আগে তদন্ত করে এর সত্যতা খুঁজে পান। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ১৫ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়। এরপর ২৬ কর্মদিবস পার হলেও সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালেক অজ্ঞাত কারণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। বরং বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তাদের নিয়ে প্রায়ই অফিসে এমনকি বাইরে দেন-দরবার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এর বেতন নির্ধারণ করতে জন্য অফিসকে সহায়তা করতে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে ডেপুটেশনে এনে জুন মাসে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সদর উপজেলার পানিয়াগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আবুল কালাম, পার-পাচিল প্রাথমিক বিদালয়ের শিক্ষক লাভলী খাতুন, শিয়ালকোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাছিমা পারভীন, চর-কালিদাসগাঁতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক খাদিজা খানম, ঘাগা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাজনীন ইয়াসমিন এবং হাটবয়রা প্রাথমিক বিদালয়ের শিক্ষক ময়দান আলীসহ আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষকের বেতন বিলে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ অফিস সহকারী স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি ফাঁস হলে সদর উপজেলার শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আসলাম উদ্দিন, কান্দাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক গোলাম রসুল, রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, রাজীবপুর-ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সোহেল রানা, পোড়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বেল্লাল হোসেন, পিপুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বহুলুল হোসেন, খোকশাবাড়ি-নিস্তারিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আরিফ হোসেন এবং গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিমকে প্রাথমিকভাবে শিক্ষা দফতর থেকে অভিযুক্ত করে তাদের শো-কজ করা হয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর জেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টির তদন্তের জন্য তার এক সহকর্মীকে দায়িত্ব দেন। তদন্তে ডেপুটেশনে থাকা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সই জালিয়াতির বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে গত মাসের ৭ তারিয়ে নির্দেশ প্রদান করা করলেও শেষ পর্যন্ত এটি ঝুলে রয়েছে।

জেলা শিক্ষা অফিসার শহীদুল ইসলাম বলেন, তদন্তে জালিয়াতির বিষয়টি সুষ্পষ্ট প্রমাণিত হওয়ায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ব্যবস্থা নিতে গত মাসের ৭ তারিখে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

অভিযুক্তদের সঙ্গে দেন-দরবারের বিষয়টি অস্বীকার করে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালেক মঙ্গলবার বলেন, ‘জেলা শিক্ষা অফিসারের চিঠি পেয়ে ৩ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর আগমন ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে তেমন গুরত্ব দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগামীতে বিষয়টি দেখা যাবে।’ সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন