ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর চেষ্টায় পুলিশকে গণপিটুনি

  26-10-2016 08:01PM

পিএনএস: যশোরে সোর্সের মাধ্যমে দোকানে ইয়াবা রেখে ব্যবসায়ীকে আটক করতে গিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা গণপিটুনির শিকার হয়েছেন।
বুধবার বিকেলে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে জেলার চৌগাছা উপজেলা বাজারে।
ঘটনাটি এরকম, প্রথমে সোর্সের মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইয়াবা রাখে পুলিশ। এরপর সোর্স দোকান থেকে বের হলেই পাশেই অবস্থান করা এএসআই সিরাজুল ইসলাম সেখানে হানা দেন।
ব্যবসায়ীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এগিয়ে আসেন অন্য ব্যবসায়ীরা। তারা সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন এবং ঘটনার রহস্য বেরিয়ে আসে। এরপরই পুলিশকে গণপিটুনি দেওয়া শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা পুলিশের এ ঘৃণ্যকাজের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা তাৎক্ষণিকভাবে দোকান বন্ধ করে চৌগাছা শহরে মিছিল করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বুধবার বিকেলে চৌগাছা থানার এএসআই সিরাজুল ইসলাম শহরের মেইন রোডে অবস্থিত সুপার ইলেক্ট্রিক অ্যান্ড ভ্যারাইটিজ নামে একটি দোকানে সোর্স পাঠিয়ে ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে দেন। আর এএসআই সিরাজুল দোকানের অদূরে অপেক্ষা করছিলেন। সোর্স দোকানের মধ্য থেকে বের হলেই এএসআই সিরাজুল ইসলাম সেখানে যান।
তিনি দোকান মালিক রাবণ কুমারকে ‘দোকানে ইয়াবা রাখার অপরাধে’ আটক করে নিয়ে যেতে উদ্যত হন।
এ সময় হইচই শুনে পাশের অন্যান্য দোকানের মালিক-কর্মচারীরা এগিয়ে আসেন। তখন দোকান মালিক রাবণ কুমার বলতে থাকেন, ‘আমি মাদকের কারবার করি না। নিশ্চয় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।’
তখন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। ফুটেজ দেখার সময় এএসআই সিরাজ ও তার অজ্ঞাতনামা সোর্স দোকান থেকে পালাতে উদ্যত হন।
এ সময় উপস্থিত ব্যবসায়ী ও জড়ো হওয়া জনতা এএসআই সিরাজকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি দোকান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। বাজারে এ খবর শুনে অল্প সময়ের মধ্যে শত শত ব্যবসায়ী ঘটনাস্থলে এসে এএসআই সিরাজের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
সংবাদ পেয়ে চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) মারুফ আক্তারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূরউদ্দীন আল মামুন হিমেল ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবাদৎ হোসেন ঘটনাস্থলে এসে ব্যবসায়ীদের শান্ত হতে অনুরোধ করেন। তারা ঘটনার বিচার হবে বলে আশ্বাস দিয়ে ব্যবসায়ীদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বাজারে দোকানপাট বন্ধ করে রাখেন।

চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) মারুফ আক্তার জানান, এ ঘটনায় এএসআই সিরাজুল ইসলামকে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন