কুমিল্লায় গৃহবধু হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতর

  03-12-2016 05:27PM

পিএনএস, কুমিল্লা : কুমিল্লার হোমনায় পুর্ব শত্র“তার জের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিউটি আক্তার (২৪) নামের এক গৃহবধুকে ভাসুর ও জা-শাশুড়ীর বিরুদ্ধে মধ্যযুগিয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪ নাম্বার কেবিনে মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে সাংবাদিকদের কাছে এক লোমহর্ষক নির্যাতনের অভিযোগ করেন বিউটি আক্তার। এরপর খবর পেয়ে রাতেই হোমনা থানা পুলিশ নির্যাতিতাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে আসেন। পরে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ করেন।

সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কৃপারামপুর গ্রামের হত দরিদ্র মো.মাওলা মিয়ার মেয়ে মোসা. বিউটি আক্তারের গত ৮-৯বছর পূর্বে আছাদপুর ইউনিয়নের চিৎপুর গ্রামের মৃত সুজন মিয়ার ছেলে প্রবাসী ফারুকের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ৮বছরের সংসারে জুই (৭) ও ফাহিম (৪) নামের ফোটফুটে দু’টি সন্তানের জন্ম হয়। দু’টি সন্তান নিয়ে ছোট্ট সংসারে সুখে-শান্তিতে স্বামী-স্ত্রী দিন কাটলেও সে বিষের কাঁটা হয় ভাসুর,জা ও শাশুড়ীর নিকট। গত দুই বছর যাবৎ নানাহ অপবাদ ও বঞ্চনায় জর্জরিত করে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন চালানো হতো বলে জানান ওই গৃহবধূ।

সর্বশেষ গত ২৮নভেম্বর সোমবার রাতে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মিথ্যা কুৎসা রটিয়ে চিৎপুর গ্রামের চাঞ্চল্যকর যুবলীগ নেতা মুসলেম হত্যা মামলার আসামী ইউসুফের নেতৃত্বে তার ভাই মনিরসহ ভাসুর জসিম উদ্দিন, ভাতিজা শাহ-জালাল, শাশুড়ী কম্পন নেছা, খালা শাশুড়ী ফুলবরসহ ৮-১০ জন মিলে চুলের মুঠি ধরে, হাত পা বেঁধে শুরু করে মধ্যযুগিয় কায়দায় এক পাশবিক ও অমানবিক নির্যাতন। টর্চ লাইট, কাঠের লাঠি এবং কিল-ঘুষি লাথি মেরে বুকে-পেটে, সঙ্কুচিত স্থানসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গে জখম করে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখে একটি ঘরে। এভাবে টানা ৩ দিনের দফায় দফায় নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে মুর্ছা যান হাসপাতালের বেডে ওই গৃহবধু।

নির্যাতিতের বাবা মাওলা জানায়, আমি ঢাকায় মাছের ব্যবসা করি। জানতে পারলাম আমার মেয়ে হাসপাতালে অসুস্থ্য পরে এসে জানি এই অবস্থা ওদের বিউটিকে কেউ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে পালিয়ে যান।

নির্যাতিতা জানায়, স্যার আমার অপরাধ হলে বিচার হবে। কিন্তু আমাকে বার বার নির্যাতন করতো। আমি বাঁচবো বলে বিশ্বাস ছিলো না। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। আমি গরীব মানুষ স্যার, আপনারা আমার নির্যাতনের বিচার করবেন।

ভাসুর জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবই জানতে পারবেন। এরপর স্থানীয় মেম্বার মো. স্বপন মিয়াকে ডেকে আনলে তিনি বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য না করলেও বিচার করবেন বলে আশ্বাস দেন।

হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ রসুল আহমদ নিজামী বলেন, আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথেই নির্যাতিতাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছি। এবং একটি অভিযোগ নিয়েছি। তদন্ত করার জন্য এস.আই ওহেদ মুরাদকে দায়িত্ব দিয়েছি। অপরাধী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন