মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব

  04-12-2016 12:40AM

পিএনএস, নারায়ণগঞ্জ : আগামী ২২ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে বৈধ ৮ মনোনয়ন প্রার্থী তাদের হলফনামায় নির্বাচনী ব্যয়ে অর্থের পরিমাণ, ব্যয়ের খাত ও ব্যয়কৃত অর্থের উৎস সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী নির্বাচনী ব্যয় হিসাবে খরচ করবেন ১৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে, বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান খরচ করবেন ৮ লাখ টাকা।

এ ছাড়াও মেয়র প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের মুফতি মাসুম বিল্লাহ ১ লাখ ৪ হাজার ৮শ টাকা, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদাউস ১৩ লাখ টাকা ৩৫ হাজার টাকা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের মোসলেমউদ্দিন ২ লাখ টাকা, এলডিপির কামাল প্রধান ২ লাখ টাকা, ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি এজাহরুল হক ১৫ লাখ এবং বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল ১৫ লাখ টাকা টাকা খরচ করবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

নির্বাচনী ব্যয়ের অর্থের উৎস সম্পর্কে কেউ বেতনভাতা, কেউ ব্যবসা, কেউ আইন পেশা, কেউ আবার অন্যের কাছে থেকে অর্থ নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

সেলিনা হায়াৎ আইভী : নির্বাচনে তিনি ব্যায় করবেন ১৫ লাখ টাকা। উৎস দেখিয়েছেন মেয়র হিসেবে প্রাপ্ত সম্মানী ও বেতনভাতা। পোস্টার ছাপাবেন ৭২ হাজার, যার খরচ ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। নির্বাচনী ক্যাম্প হবে ৩টি ,মোট খরচ ৮৫ হাজার টাকা। নির্বাচনী ক্যাম্পে কর্মীদের জন্য খরচ হবে ৫৫ হাজার টাকা। নিজের বা নির্বাচনী এজেন্ট এবং কর্মীদের পেছনে খরচ হবে ৭০ হাজার টাকা। আসবাবপত্র ভাড়া হিসেবে খরচ হবে ১০ হাজার টাকা। ২ লাখ প্রচারপত্র ছাপানো হবে, খরচ হবে ১ লাখ টাকা। হ্যান্ডবিল বাবদ ১লাখ, ডিজিটাল ব্যানার বাবদ ২লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। নির্বাচনী প্রচারে ১০০টি পথসভায় খরচ হবে ১০ হাজার টাকা। প্রচারে মাইক ব্যবহার বাবদ খরচ হবে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা। পোট্রেট খরচ যাবে ৫০ হাজার। নির্বাচনী প্রতীকের জন্য ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা, অফিস আপ্যায়ন বাবদ ৮০হাজার টাকা। কর্মীদের দৈনিক আপ্যায়নের জন্য ২লাখ ২৫হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারণা বাবদ কোনো খরচ নাই। বিবিধ সর্বমোট খরচ ধরা হয়েছে ১লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

সাখাওয়াত হোসেন খান : নির্বাচনে তিনি ৮ লাখ টাকা খরচ করবেন। তার আয়ের উৎস আইন পেশা। এর মধ্যে বিদেশে চাকরিরত মিল্টন হাওলাদার নামের এক ব্যক্তি সাখাওয়াত হোসেনকে দেবেন ৫ লাখ টাকা। এই ব্যক্তির সঙ্গে সাখাওয়াতের সম্পর্ক মামা-ভাগ্নের। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম দেওভোগ এলাকার মো. আনছার উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বিএনপির এই প্রার্থীকে নির্বাচনে খরচ করার জন্য দান হিসেবে দেবেন ২ লাখ টাকা। অর্থাৎ মেয়র হিসেবে নির্বাচন করতে যে ৮ লাখ টাকা খরচ করবেন সাখাওয়াত হোসেন, এর মধ্যে ৭ লাখই পাবেন দান হিসেবে। সে হিসেবে নিজ সঞ্চয় থেকে মাত্র এক লাখ টাকা খরচ করতে হবে তাকে। আয়ের উৎস হিসেবে রয়েছে আইন পেশার উল্লেখ।

হলফনামায় ব্যয়ের সম্ভাব্য খাতও উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেড় লাখ পোস্টারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে আড়াই লাখ লাখ টাকা। ২৫টি ক্যাম্প অফিস স্থাপনে ৬০ হাজার টাকা। এসব অফিসে কর্মীদের পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। মোট খরচ ১ লাখ ১০ হাজার। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ক্যাম্প বা অফিসের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। প্রার্থী, তার এজেন্ট ও কর্মীদের যাতায়াত বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার টাকা। ঘরোয়া বৈঠকের ভেন্যুর খরচ, শ্রমিকের পারিশ্রমিক ও আসবাবপত্রের ভাড়াসহ এই খাতে খরচ হতে পারে ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা। লিফলেট বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। হ্যান্ডবিলের খরচ ৬০ হাজার টাকা। ব্যানারের খরচ ৬৭ হাজার টাকা। ডিজিটাল ব্যানারের জন্য ৮০ হাজার টাকা। পথসভার জন্য ধরা হয়েছে ১লাখ টাকা। মাইকিং বাবদ ৮৫ হাজার টাকা। নির্বাচনী প্রতীকের জন্য ধরা হয়েছে ২০ হাজার টাকা, অফিস আপ্যায়ন বাবদ ৯হাজার টাকা, কর্মীদের দৈনিক আপ্যায়নের জন্য ১লাখ ৮হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচারণা বাবদ ৭০ হাজার টাকা এবং বিবিধ সর্বমোট খরচ ধরা হয়েছে ১লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

মোসলেমউদ্দিন : নির্বাচনে তিনি ২লাখ টাকা খরচ করবেন। অর্থের উৎস হলো ব্যবসা। হলফনামায় ব্যয়ের সম্ভাব্য খাতও উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার পোস্টারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ১০টি ক্যাম্প অফিস স্থাপনে ২০ হাজার টাকা। প্রার্থীর নিজ খরচ ১০ হাজার টাকা। যাতায়াত খরচ ১০ লাখ। ঘরোয়া বৈঠক খরচ ১০ হাজার। লিফলেট বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। ব্যানার খরচ ৫ হাজার টাকা। পথসভার জন্য ধরা হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। মাইকিং বাবদ ২০ হাজার টাকা। প্রতীক খরচ ১০ হাজার টাকা। কর্মীদের দৈনিক আপ্যায়নের জন্য ৫ হাজার টাকা। কর্মী খরচ ১০ হাজার টাকা। বিবিধ ৬০ হাজার টাকা।

রাশেদ ফেরদৌস : তিনি ১৩ লাখ টাকা ৩৫ হাজার টাকা খরচ করবেন।এর মধ্যে নিজের ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর উৎস হলো ব্যবসা। স্ত্রী সুবর্ণা মির্জার কাছ থেকে নেবেন ৩ লাখ টাকা। তার মা হুমায়ারা বেগম দেবেন ২ লাখ। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে নেবেন ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

হলফনামায় ব্যয়ের সম্ভাব্য খাতও উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১লাখ পোস্টারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে দেড় লাখ টাকা। ৩০টি ক্যাম্প অফিস স্থাপনে ২লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রার্থীর নিজ খরচ ২ লাখ টাকা। যাতায়াত খরচ ২ লাখ টাকা। ঘরোয়া বৈঠকে খরচ ৪০ হাজার টাকা। লিফলেট বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। হ্যান্ডবিল ৪০ হাজার টাকা। ব্যানার খরচ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। পথসভার জন্য ধরা হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। মাইকিং বাবদ ৪০ হাজার টাকা। প্রতীক খরচ ৩০ হাজার টাকা। কর্মীদের দৈনিক আপ্যায়নের জন্য ৯০ হাজার টাকা। কর্মী খরচ ৬০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচারণা বাবদ ৩০ হাজার টাকা।

মুফতি এজহারুল হক : তিনি ১৫ লাখ টাকা খরচ করবেন। এর মধ্যে ৮ লাখ টাকা নিজের। বিদেশে থাকা ভাই জয়নাল আবেদীন দেবেন ৪ লাখ টাকা। আত্মীয় রহমতউল্লাহ দেবেন ৩ লাখ টাকা। ব্যয়ের সম্ভাব্য খাতের মধ্যে দেড় লাখ হাজার পোস্টারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০টি ক্যাম্প অফিস স্থাপনে ১লাখ ১০ হাজার টাকা। এসব অফিসে কর্মীদের পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার টাকা। প্রার্থীর যাতায়াত খরচ ৯৫ হাজার টাকা। বৈঠক খরচ ৬৩ হাজার ৫শ টাকা। লিফলেট বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ২০হাজার টাকা। হ্যান্ডবিল ৬০ হাজার টাকা। ব্যানার খরচ ৬৭ হাজার টাকা। ডিজিটাল ব্যানার খরচ ৮০ হাজার। পথসভার জন্য ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা। মাইকিং বাবদ ৮৫ হাজার টাকা। প্রতীক খরচ ১৫ হাজার। কর্মীদের দৈনিক আপ্যায়নের জন্য ৯হাজার টাকা। কর্মী খরচ ১লাখ ৮ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচারণা বাবদ ৭০ হাজার টাকা। বিবিধ সর্বমোট খরচ ধরা হয়েছে ১লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

কামাল প্রধান : তিনি ২ লাখ টাকা খরচ করবেন। তার আয়ের উৎস ব্যবসা। নিজের সঞ্চয় থেকে এক লাখ এবং বাকি এক লাখ দেবেন তার বন্ধু সোহেল রানা, যার বাড়ি কাশীপুরে।

হলফনামায় ব্যয়ের সম্ভাব্য খাতও উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার পোস্টারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। ৪টি ক্যাম্প অফিস স্থাপনে ২০ হাজার টাকা। এসব অফিসে কর্মীদের পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। প্রার্থীর যাতায়াত খরচ ২০ হাজার টাকা। লিফলেট বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৮হাজার টাকা। পথসভার জন্য ধরা হয়েছে ৫হাজার টাকা। মাইকিং বাবদ ১০ হাজার টাকা। কর্মীদের দৈনিক আপ্যায়নের জন্য ১০হাজার টাকা। কর্মী খরচ ৪ হাজার ৫শ টাকা। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচারণা বাবদ কোনো খরচ নেই। বিবিধ সর্বমোট খরচ ধরা হয়েছে ১০ হাজার টাকা

মাসুম বিল্লাহ : তিনি ১ লাখ ৪ হাজার ৮শ টাকা খরচ করবেন। তার আয়ের উৎস ব্যবসা। নির্বাচনে সম্ভাব্য ব্যয়ের মধ্যে ১০ হাজার পোস্টারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। ৩টি ক্যাম্প অফিস স্থাপনে ৬ হাজার টাকা। প্রার্থীর যাতায়াত খরচ ১৫ হাজার টাকা। লিফলেট বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। ব্যানার খরচ ১০ হাজার ৮শ টাকা। মাইকিং খরচ ২২ হাজার টাকা। নির্বাচনের প্রতীক খরচ ১ হাজার টাকা। বিবিধ খরচ ১০ হাজার টাকা।

মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল : তিনি ১৫ লাখ টাকা খরচ করবেন। তার আয়ের উৎস ব্যবসা। নির্বাচনী ব্যয়ে মোট ১৫ লাখের মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেবেন তার মামা, চাচা ও আত্মীয়-স্বজন। শুভাকাঙ্খী, দলীয় নেতাকর্মী, সদস্য ও সমর্থকদের কাছ থেকে নেবেন ১০ লাখ টাকা। দল তথা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কাছ থেকে নেবেন ৩০ হাজার টাকা।
হলফনামায় ব্যয়ের সম্ভাব্য খাতও উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হাজার পোস্টারের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ৩টি ক্যাম্প অফিস স্থাপনে ২লাখ ৫৫ হাজার টাকা। এসব অফিসে কর্মীদের পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। লিফলেট বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ডিজিটাল ব্যানারের জন্য ১লাখ ১৬ হাজার ১শ টাকা। পথসভার জন্য ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৫শ। মাইকিং বাবদ ৯০ হাজার টাকা। নির্বাচনী প্রতীকের জন্য ধরা হয়েছে ২লাখ ৭০ হাজার। কর্মীদের দৈনিক আপ্যায়নের জন্য ৬০হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রচারণা বাবদ কোনো খরচ নেই।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন