পটুয়াখালীতে দিন দিন বেড়ে চলছে বাল্য বিবাহ

  11-01-2017 03:27PM

পিএনএস, জাহিদ শিকদার, (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালী জেলার সবকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আইনের চোখে ফাঁকি দিয়ে দিন দিন বেড়েই চলছে বাল্য বিবাহ। কিশোর ও কিশোরীরা শারীরিক, মানসিক এবং অর্থনৈতিকভাবে তৈরি হওয়ার আগেই তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় বিয়ে নামের এক বিরাট দায়িত্বের বোঝা। প্রকৃতপক্ষে শতকরা ৮০ ভাগ বিয়েই হয়ে থাকে অপ্রাপ্ত বয়সে।

বাংলাদেশ সরকারের বিধিমালা অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ও ২১ বছরের কম বয়সী ছেলেদের বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। এই বয়সে কেউ বিয়ে করলে অথবা অভিবাবকরা বিয়ে দিলে এজন্য তাকে শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু অভিবাকরা সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জেলার সবকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দিন দিন বেড়ে চলছে বাল্যবিয়ের প্রবনতা। প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে বাল্য বিবাহ। কিশোরীরা প্রাথমিক শিক্ষাস্তর অতিক্রম করে মাধ্যমিক স্তরে পা রাখার পরে ঝড়ে পড়ছে অনেকেই। যেমন ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও বিভিন্ন এলাকার প্রভাবশালীদের সমর্থনে ও কাজে সহযোগী থাকার কারণে অধিকাংশ বাল্যবিয়ে হচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠনগুলি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করার পরও বন্ধ হচ্ছে না বল্য বিবাহ। সরকারি নীতিমালা না মেনেই মেয়ের বয়স ১৩ থেকে ১৪ এবং ছেলেদের ১৬ থেকে ১৭ হলেই তাদের বিয়ে দিচ্ছেন পরিবারের অভিভাবকরা।

এসএসসি পরিক্ষার পূর্বেই ৫০ শতাংশ ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যায়। টাকার বিনিময় বেশির ভাগই ভূয়া নিবন্ধন কার্ড তৈরি করে এগুলির বিবাহ কাজে ব্যাবহারিত হচ্ছে। কাজীরা বিবাহর কাবিন নামা রেজিষ্ট্রারী করতে গেলে তারাও সনদপত্র ঠিক না থাকার কারণে ডাবল টাকার বিনিময়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বাল্য বিয়ের কারণেই যৌতুক, নারী নির্যাতন ও পারিবারিক কলহের জেরধরে বেশি বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে যাচ্ছে । অপ্রাপ্ত বয়সে বিবাহ হওয়ায় মেয়েরা প্রাপ্ত বয়স হওয়ার আগেই তাদের রূপ লাবন্য শেষ হওয়ায় স্বামীদের চক্ষুসুল হয় এবং বিভিন্ন রোগে রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে। ফলে তাদের উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন।

কেহ কেহ মুখ বুজে সয্য করে তাদের বাকী জীবন কাটিয়ে দেয়। আবার কেহ স্বামীর সাথে অভিমান করে এ পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। অনেকে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে এমন অসংখ্য ঘটনা বর্তমানে কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে।সচেতনদের মতে ইউপি চেয়ারম্যানরা জন্ম নিবন্ধন দেয়ার পুর্বে যাচাই বাচাই করে ভুয়া নিবন্ধন দেয়া থেকে বিরত থাকে তাহলেই গনসচেতনতা ও যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে বাল্য বিবাহ রোধ করা সম্ভব।অন্যথয় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলবে বাল্য বিবাহের প্রবনতা।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন