মাশরাফি ভক্ত অর্ণি'র গল্প

  17-01-2017 10:48PM

পিএনএস, মেহেদী হাসান আবদুল্লাহ্, ময়মনসিংহ : স্কুল, কোচিং, বন্ধু-বান্ধব বা পরিবার সবাই এক নামেই চিনে মাশরাফির একনিষ্ঠ ভক্ত। রাস্তার পড়ে থাকা পুরোনো পত্রিকা কিংবা দৈনিক পত্রিকায় মাশরাফির ছবি বা কোন লেখা থাকলে তা কেটে নিয়ে আসে সবাই অর্ণি'র জন্য।

জান্নাতুল মাওয়া অর্ণি' ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। বয়স যখন মাত্র ৯ তখন থেকেই মাশরাফির পাগল ভক্ত। দিনে, রাতে এমনকি স্বপ্নেও মাশরাফির ভাবনায় ব্যস্ত থাকে অর্ণি।

মাশরাফি বিন মতুর্জার প্রতি এই ভালবাসা থেকেই মাফরাফির প্রতিটি কর্মকান্ড কে আকঁড়ে রেখেছেন নিজের কাছে।

এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজারের অধিক পেপার কাটিং বা ছবি রয়েছে তার সংগ্রহে। মনের কোনে জমে থাকা ভালবাসার কথা গুলো লিখে তৈরি করেছেন ছবির বোর্ড। ছবির সাথে লিখা রয়েছে মনের যত ভাবনাগুলো।

শুধু যে ছবি বা পেপার কাটিং তা-ই নয়, তার ব্যক্তিগত দুইটি ডায়রী রয়েছে যা শুধু মাশরাফির প্রতিদিনকার কাজ থেকে শুরু করে সবোর্পরি ভালবাসার প্রকাশ। দুইটি ডায়েরীতে মাশরাফির জীবন কাহিনী, ছোট বেলার স্মৃতি, সাফল্য, ইনজুরির বর্ননা নিজের মত করে প্রতিদিন লিখে রাখছে সে।

ব্যবসায়ী বাবা ও উদ্যোক্তা মায়ের এক ছেলে এক মেয়ের সংসারে জান্নাতুল মাওয়া অর্ণি'ই বড়।

যখন থেকে বুঝতে শিখেছে খেলাধুলা তখন থেকেই মাশরাফির একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে উঠেন। তখন থেকে এখন ও মিস হয়না, মাশরাফিকে নিয়ে কোন লিখা পড়া বা অনুষ্ঠান দেখা।

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সৃজনশীল শিল্প -সাহিত্য উৎসবে শিক্ষার্থীরা নিজের পোস্টারে প্রতিভা প্রকাশ করেছিল যার যার লেখনিতে। আর এসব দিয়েই সেজেছিল বিদ্যাময়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। আর সেখানেই কয়েকটি বাধাঁই করা বোর্ড দেখা গেলো, যার মধ্যে মাশরাফির জীবন কাহিনী ও সুন্দর মুহুর্তের ছবিগুলো ক্রমান্নয়ে সাজানো।

এসময় তার সহপাঠিরা জানান- সবাই ওকে মাশরাফির ভক্ত নামেই চিনে, যে যেখানেই মাফরাফির ছবি বা কোন লেখা পেলে তা নিয়ে আসে তার জন্য।

বান্ধবীরা যখন অবসর গুলো অন্যান্য কাজে ব্যয় করে তখন অর্ণি সে সময় মাশরাফিকে নিয়ে নতুন কিছু করেন। হতে পারে ডায়রী লিখা বা নতুন নতুন ছবি দিয়ে নতুন এ্যালবাম সাজানো।

জান্নাতুল মাওয়া অর্ণি বলেন- "আমার বয়স যখন নয় তখন থেকেই মাফরাফির ভক্ত আমি। আর তখন থেকেই মাশরাফি সম্পর্কে কোন লিখা পত্রিকায় ছাপা হলে বা খেলার ছবি সব কিছুই আমি কাটিং করে রেখে দেই। মাফরাফি সারাদিন কি করে, কেমন করে দিনকাল চলে, ব্যক্তিগত জীবন ও পারিবারিক জীবন সব আমার জানা। "

অর্ণি এসময় আবেগ্লাপুত হয়ে বলেন- "আমার একটাই ইচ্ছা মাফরাফি'র সাথে দেখা করা, যদি কখনো দেখা হয়, আমি যে কি করবো জানি না"

অর্ণি এসময় আরো জানান, মাশরাফির বন্ধু-বান্ধব, পরিবার তার সব তার জানা। তার ইচ্ছা মাশরাফি যদি তার স্কুলে আসতো তাহলে বান্ধবীদের বলতে পারতো যে মাশরাফি আসছে তার স্কুলে।

অর্ণির মা বলেন, "আমার মেয়েই একজন মাফরাফি, ওর জন্য বাসার কোন পত্রিকা থাকে সবগুলো কাটাছেড়া, ও এত পাগল মাশরাফির জন্য যে ওইটা কথায় প্রকাশ করা যাবে না, তবে তার এ ভালবাসাকে আমরা খারাপ ভাবে দেখিনা এমনকি কখনো এটা নিয়ে বাধা দেয়না। আমাদের সবার কাছেই মাশরাফি এক জন হিরো, আমরা সবাই তার ভক্ত, তবে আমার মেয়ে একটু বেশিই মাশরাফির প্রতি অনুরাগী।"

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন