বাউফলে বিনোদন ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা

  19-01-2017 09:29PM

পিএনএস, জাহিদ শিকদার, (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর বাউফলে প্রাথমিক শিক্ষা শতভাগ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নেয়া উদ্যেগ ভেস্তে যেতে বসেছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি বিদ্যালয়ে চালু হওয়া চিত্ত বিনোদন ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, উপজেলায় মোট ২২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। শিক্ষক রয়েছেন মোট ১১২৭ জন। দারিদ্র্যতা, শিক্ষার সাথে বিনোদনমূলক পাঠদান না থাকা ও শিক্ষক কর্তৃক মানসিক নির্যাতন সহ নানা কারণে প্রতি বছর প্রাথমিক স্তরেই ঝরে পড়ছে অনেক শিশু। ঝরে পড়া রোধ, প্রাথমিক শিক্ষা আনন্দদায়ক করার লক্ষ্যে এবং শিক্ষার্থীদের স্কুল মুখি করতে বাউফল উপজেলা পরিষদের অর্থায়ণে অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্থাপন করা হয়েছে মিনি পার্ক।

প্রতিটি মিনিপার্কে স্লিপার ও দোলনাসহ বিভিন্ন প্রকার খেলনা সরবারহ করা হয়েছে। পাঠদানের ফাঁকে ওই মিনি পার্কেই শিশুদের খেলায় মেতে ওঠার কথা। এছাড়াও প্রতিটি বিদ্যালয়ে আধুনিক শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করার কথা রয়েছে। এসব উপকরণের মধ্যে বিখ্যাত কবি,সাহিত্যিক,দার্শনিক এবং মণীষীদের ছবিসহ জীবন বৃত্তান্ত থাকার কথা। কিন্তু এর কোন কিছুই যেন আলোর মুখ দেখেনি। বরং প্রায় ৩০ লাখ টাকার ব্যয়ে নির্মিত অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিনিপার্ক এখন মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে।

বুধবার ৭২ নং নাজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শাম্মি আক্তার তুবা নামের শিশু শ্রেণির এক ছাত্রী খেলনায় দোলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হলে তাকে বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কেবল তাই নয়,মিনিপার্ক নির্মানের ক্ষেত্রে সরকারি বরদ্দকৃত অর্থ অপচয়ের অভিযোগ উঠেছে। কিছ কিছু বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ নেই তাই পুকুর পাড় ও রাস্তার পাশে নির্মান করা হয়েছে ওই সমস্ত পার্ক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিন দ্বিপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খেলার মাঠ না থাকায় বিদ্যালয়ে সংলগ্ন পুকুরপাড়ে নির্মান করা হয়েছে মিনিপার্ক। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেগুলো ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে না। বরং মরিচা ধরে সেখানকার নানা প্রকার খেলনা সামগ্রী ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ করুন অবস্থা প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়েই।

এ দিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, যে কোন সময় এই খেলনায় প্রান হারাতে পারে শিক্ষার্থীদের। তাছাড়া যে উদ্দেশ্য নিয়ে খেলনাগুলো স্থাপন করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এবং যে গুলো নষ্ট হয়ে গেছে তা মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।

একাধিক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রথম দিকে খেলনাগুলো শিক্ষার্থীদের নজর কাড়লেও রক্ষানাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এগুলোর প্রতি শিক্ষার্থীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
উত্তর দাশপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়,খেলনাগুলোর কাছে আমরা ভয়ে ধারেকাছেও যাইনা। এ প্রসঙ্গে বাউফল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষাকর্মকর্তা রিয়াজুল হক বলেন,খেলনা গুলো মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন