বাউফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি বিভাগ বন্ধ, ক্লিনিক বাণিজ্য রমরমা

  24-01-2017 06:31PM

পিএনএস, জাহিদ শিকদার, (পটুয়াখালী) : ৫১ শয্যা বিশিষ্ট পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি সেবা বিভাগ প্রায় ১ যুগ ধরে বন্ধ হয়ে আছে। এক দিকে যেমন প্রসূতি নারীরা বাণিজ্যিক ক্লিনিক নির্ভর হয়ে পড়েছে অন্যদিকে দীর্ঘদিন প্রসূতি বিভাগ বন্ধ থাকায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি মরিচা ধরে বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে জাপানের জাইকা প্রকল্পের অর্থায়ণে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিরাপদ প্রসব এবং মা ও শিশুর চিকিৎসার জন্য ইওসি বিভাগ চালু করা হয়। বিভাগটি চালু হওয়ার পর এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই ইওসি বিভাগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রসূতি নারীরা বাণিজ্যিক ক্লিনিক নির্ভর হয়ে পড়েন।

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইওসি বিভাগ বন্ধ থাকায় বর্তমানে বাউফলের অবৈধভাবে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা ক্লিনিকগুলোতে চলছে রমরমা বাণিজ্য। সরকারি হাসপাতালের ইওসি বিভাগ চালু থাকলে মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় করা সম্ভব হত। সেখানে প্রত্যেক প্রসূতি নারীকে সিজার অপারেশনের জন্য ক্লিনিকে ব্যয় করতে হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তাছাড়া ক্লিনিকগুলোতে নোংরা পরিবেশের কারণে ক্লিনিকে থাকা অধিকাংশ রোগীর সেলাইয়ের স্থানে ইনফেকশন হচ্ছে। ফলে ৭ দিনের পরিবর্তে তাদের ১৫ থেকে ২০ দিনও থাকতে হয়।

বাউফলের কালাইয়া কোর্টপাড় এলাকার রবিউল নামের এক ব্যক্তি বলেন, সেবা ক্লিনিকে তার স্ত্রীর সিজার অপরেশন করার পর সেলাইয়ের স্থানে ইনফেকশন হয়। এ জন্য তাকে প্রায় ২০ দিন ওই ক্লিনিকে অবস্থান করতে হয়েছে।

এদিকে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে রয়েছে একাধিক দালাল চক্র। সরকারি হাসপাতালে প্রসূতি রোগী এলেই তাদেরকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে ক্লিনিকে নেয়া হয়। এসব দালাল প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে ১ হাজার টাকা কমিশন পান। এদিকে ক্লিনিকের মালিকদের কারিশমায় বাউফল স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের একসঙ্গে গাইনি সার্জন ও অ্যানেসথেশিয়া চিকিৎসক চাকুরি করতে পারছেন না বলে জানা যায়। ওই দুটি পদে চিকিৎসক থাকলে যথারীতি ইওসি বিভাগ চালু হয়ে যায়। আর সরকারি হাসপাতালে ইওসি বিভাগ চালু হলে বাণিজ্যিক ক্লিনিকের ব্যবসা মন্দা হয়। তাই কৌশলে ক্লিনিক মালিকরা বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক সঙ্গে গাইনি সার্জন ও অ্যানেসথেশিয়া চিকিৎসকের পোস্টিং হতে দেন না।

বাউফল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মঞ্জুরুল আলম বলেন, ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে চিকিৎসকদের কোন প্রকার যোগাযোগ আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে গাইনি সার্জন ও অ্যানেসথেশিয়া চিকিৎসক হলে আমি ইওসি বিভাগটি চালু করতে পারি।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন