সৈকতে রোহিঙ্গা বসতি,হুমকিতে পর্যটকরা

  22-02-2017 09:09PM

পিএনএস,উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র সৈকত এলাকায় বাড়ছে রোহিঙ্গা বসতি।এতে রোহিঙ্গা কর্তৃক উজাড় হচ্ছে ঝাউবাগান। সীবিচ সড়ক ও এর আশপাশের এলাকায় চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা, অসামাজিক কার্যকলাপসহ হরেক রকমের আইন-শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ড। এতে অশান্ত হয়ে পড়েছে শান্ত সমুদ্র জনপদ।

উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার সমুদ্র লাগোয়া ঝাউবাগান ঘুরে ও তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়- মিয়ানমার থেকে আসা অসংখ্য রোহিঙ্গা নামে খ্যাত মিয়ানমারের নাগরিক অবৈধভাবে সীমানা পার হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। এসব রোহিঙ্গারা প্রবেশের পর টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার সমুদ্র সৈকত এলাকা জুড়ে ছোট ছোট ঘরবাড়ি তৈরী করে বস্তি বানিয়ে বসবাস। এরা সমুদ্র সৈকত এলাকায় বসবাসের পর সাগরে মাছ শিকারের অজুহাতে কর্তন করে ফেলছে ঝাউবাগান। এমনকি তাঁরা সেখানে অবস্থান করে সাগরপথে মানবপাচার ও মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট আনা,অস্ত্র বিকিকিনি সহ নিয়মিত অপরাধ কর্ম সংঘঠিত করে যাচ্ছে।

এসব ভাসমান রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে স্থানীয় বিজিবি ও পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রসাশনের কঠোর অবস্থানের পরও অজ¯্র রোহিঙ্গা লোকালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। বিশেষ করে টেকনাফ,বাহারছড়া,শামলাপুর উখিয়ার সোনার পাড়া, নিদানিয়া ও কক্সবাজারের ঝাউবন এলাকাজুড়ে এখন একাধিক রোহিঙ্গা বস্তি। টেকনাফের বাহারছড়া হতে উখিয়া উপজেলার ইনানী পর্যন্ত সীবিচ ও মেরিন ড্রাইভ সড়কের আশপাশ এলাকার গ্রামসমূহ পর্যটক,জেলে ও সাধারণ লোকজনদের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। ঝাউবনে রোহিঙ্গাদের বেপরোয়াভাবে বসবাস করার বিষয়ে বন বিভাগের লোকজনের গাফেলাতিকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। এদিকে টেকনাফ ও উখিয়া রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির ছাড়াও মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ফলে যে রোহিঙ্গারা উখিয়া টেকনাফে ঢুকেছে তাদের পিছনে কিছু রোহিঙ্গা নেতা ও স্থানীয় এক ধরনের র্স্বাথনেষী মহলের প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে রোহিঙ্গারা স্থায়ী হওয়ার তৎপরতা শুরু করেছে। কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিয়ে অনুপ্রবেশের উৎসাহ দিচ্ছে।তাছাড়া স্থানীয় লোকজন কম টাকায় শ্রমিকের কাজ করাচ্ছে রোহিঙ্গাদের দিয়ে।

এদেশের কিছু নেতা রোহিঙ্গাদের জন্য এনজিওদের বরাদ্দকৃত বিতরন নিষিদ্ধ পন্য গোপনে বিতরণ করে নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর অপচেষ্টার ফলেও রোহিঙ্গারা এদেশে আশ্রয় পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় স্থান গুলোতে জীববৈচিত্র সংরক্ষন করা সম্ভব হচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের কারণে জীববৈচিত্র ও পরিবেশ ধব্বংসের পথে। ইতি মধ্যে রোহিঙ্গা কর্তৃক অসামাজিক কর্মকান্ড, সন্ত্রাসীদের নেটওয়ার্ক, মাদকের ব্যবহার বেচা বিক্রি, পতিতা ব্যবসা, ডাকাতি, ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। এতে উখিয়া টেকনাফের আইন শৃংখলার চরম অবনতি হচ্ছে । সীমান্ত পর্যটন ও বাণিজ্যিক উপ-শহর কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কের আশপাশের এলাকার শান্তিপ্রিয় জনগন এখন আতঙ্কে দিনযাপন করছে। পাশাপাশি দেশী-বিদেশী পর্যটকগণ সীবিচ এলাকা ভ্রমণ করতে ভয় পাচ্ছে বলে জানান ভ্রমণকারী পর্যটকবৃন্দ। ফলে দিনদিন পর্যটকদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

এছাড়া জেলে সম্প্রদায় তাদের একমাত্র জীবিকা নির্বাহের পথ সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে ভয় পাচ্ছে। খোজ খবর নিয়ে জানা-যায়, এদের মধ্যে অনেকে ইয়াবার বড় বড় চালানও মিয়ানমার থেকে নানা কৌশলে উখিয়া টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে নিয়ে আসছে এবং তাদের ঝুপড়ি বস্তিতে জমা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে। রোহিঙ্গারা যেভাবে অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে, সে পরিমান তাদের শাস্তি না হওয়াতে দিন দিন উখিয়া টেকনাফে রোহিঙ্গা কর্তৃক অপরাধ বাড়ছে । ঝাউবাগান এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্চেদ না করলে ভবিষ্যতে উখিয়া টেকনাফে রোহিঙ্গারা এদেশের স্থানীয়দের উপর হামলা করে নিজেদের অবস্থান শক্ত করবে বলে মনে করছে স্থানীয় সচেতন মহলের আশংকা । এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, ইনানী সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ইতিমধ্যে বেশকিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটা চলমান থাকবে।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল



@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন