পিএনএস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মোঃ রাকিবুর রহমান রকিব : বিষাক্ত মাদকের নেশায় ডুবে থাকছে সরা্ইল উপজেলার উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর সহশ্রাদিক মানুষ। মাদকের নেশার ডুবে রয়েছেন মধ্যে বয়সী যুব সমাজ, স্কুল ও কলেজ ছাত্র, সরকারী কর্মকর্তা, শিক্ষক, ড্রাইবার, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ।
সরা্ইল উপজেলায় হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা,ও বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্য। তবে ইয়াবা, ফেন্সিডিল এবং গাঁজাসহ জুতার পেসটিনে নেশার চাহিদা এ উপজেলায় বেশী বলে এক অনুসন্ধানে জানা গেছে।
অভিভাবকের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এই মাদকদ্রব্য বিক্রি ও সেবন হলেও তারা দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরাইল মাদকের ব্যবসা করছেন এমন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এসব মাদক বিক্রির তালিকায় প্রভাবশালী পরিবারের সন্তানেরা জড়িত আছে বলে জানা গেছে।
প্রভাবশালীদের কারণেই প্রশাসন রয়েছে ‘নীরব’। দিনের পর দিন প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চলে আসার কারণেই গোটা সরা্ইল উপজেলা জুড়ে এখন মাদকে সয়লাব হয়ে আছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যা এবং এসব মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুল, কলেজের তরুণ ছাত্ররা। যার ফলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অভিভাবকেরা।
সরা্ইল বিশ্বরোড়ে মাদকের আখড়া বলে অভিহিত করেছেন অনেকেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, সরা্ইল উপজেলায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। তাছাড়া মাদকের ব্যবসায় লগ্নি আছে বেশ কয়েকজনের। মূলত প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তির টাকায় কেনা হয় মাদক। আর ডেলিভারী ম্যানের সাহায্যে মাদক বিক্রি হয় বিভিন্ন স্পটে।
প্রতিদিন গড়ে কয়েক লাখ টাকার মাদক বিক্রি হয় সরা্ইল উপজেলায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরা্ইলে মাদক দ্রব্য আসে বিজয় নগর, কসবা, অাখাউড়া থেকে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিশ্বরোড় হয়ে সরা্ইল আসছে মাদক। বর্ডার অঞ্চল থেকে ফেনসিডিল বেশী আসলেও চট্রগ্রাম থেকে আসে ‘ইয়াবা’ আর ‘গাঁজা’। সরাইলে ফেন্সিডিলের চেয়ে এখন ইয়াবার বিক্রি বেশী বলে এক অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক সরাইল ১২বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন ৩কোটি ২৫লক্ষ৭৫ টাকার মাদক দ্রব ধংশ করে।বিশ্বরোড় পুলিস ফাড়িঁতে এক ট্রাক গাঁজা আটক করেন।
রাত-দিন ঘুরে জানা যায়, যারা কিছুটা বিত্তশালী তারাই ফেন্সিডিলের দিকেই ঝুঁকে রয়েছে। আর ‘ইয়াবা’ ‘গাঁজা’র দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এ দুটি মাদকের দিকে নজর ও আকৃষ্ট সবার। সরা্ইল উপজেলায় একাধিক স্পটে মাদক দ্রব্য বিক্রি হয় বলে জানা গেছে। উপজেলার কালীকচছ ইউনিয়নের সুর্ষকান্দি – কলেজ পাড়া,রিপুজি বাড়ির আশেপাশের কয়েকটি গ্রাম, এছাড়াও সরা্ইল সদরএলাকার সকালবাজার রিশি বাড়ি, আলিনগর মোড়, বড্ডাপাড়া,অন্নদা স্কুলের পাঁশে, হাসপাতালের আশপাঁশে,মাইক্রোস্ট্যান্ড,নোয়াগাঁ ইউনিয়নের মুন্সী বাড়ির সাচ্চার পাড়, নোয়াগাঁ অাখিঁতারা রোড়ে সায়েবালি মাজারের পাশে,একাধিক স্পটে প্রকাশ্যেই মাদকের ব্যবসা হচ্ছে। তাছাড়া অনেকেই পুলিশী ঝাঁমেলা এড়াতে ভ্রাম্যমাণ থেকে মাদক বিক্রি করে আসছে।
নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় কয়েকজন PNS News24 প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেন, সরাইল উপজেলার প্রভাবশালী মাদক সম্রাট-মাদক ব্যবসায়ীর সহযোগীতায় সদর ৩ -৪ জন, মাদক দ্রব্য বিক্রির নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন বলে তারা অভিযোগ করেন। তারা সাংবাদিকদের আরো বলেন,তাহলে ওরা আমাদের মেরে ফেলবে ভাই।
সরেজমিনে রাত-দিন অনুসন্ধানে জানাযায়, অন্যদিকে সদর ইউনিয়ন এলাকারও বেশ কিছু ব্যক্তি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। পুলিশকে ম্যানেজ করে মাদক ব্যবসা চলে সরা্ইল এমন অভিযোগও রয়েছে। ফলে সরা্ইলে মাদকে ছড়াছড়ি হলেও মাদক ব্যবসায়ীরা থাকেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সরা্ইলে মাদকের ভয়াবহতা দিনের- দিন বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন রয়েছেন অভিভাবকেরা।অনেক সময় মাদক সেবিদের অথ্যাচারে মা- ছেলেকে পুলিশের কাছে তুলে দেয় এমন উদাহরণের শেষ নেই। মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে আইনের আওতায় আনার দাবী ভোগতবগী সরা্ইল উপজেলা বাসীর।
সরা্ইল থানারওসি (তদন্ত) মোঃ কামরোজ্জামান PNS News24 প্রতিনিধির কাছে জানান, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে চারজন গ্রাপ্তার করেছি, মাদকের ব্যপারে থানার ইনচার্স স্যার জিরো ট্রলার করার জন্য চেষ্টা করছে, মাদকের বিরুদ্ধে অভিজান চলমান থাকবে।
পিএনএস/আনোয়ার
সরাইলে মাদকের নেশায় ডুবে আছে যুব সমাজ
27-02-2017 12:25PM