বাধ্য হয়ে অসুস্থ শিশুটি পরীক্ষার হলে

  01-03-2017 01:22AM

পিএনএস, সাভার: আশুলিয়ার জিরানী বাজার এলাকায় বিকেএসপি পাবলিক স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির গুরুতর অসুস্থ এক ছাত্রীকে মাসিক পরীক্ষা দিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক এসকে ইনামুল বশারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি অভিভাবক মহলে জানাজানি হলে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। বিদ্যালয় প্রধানের এমন আচরণকে অমানবিক ও বিকেএসপি’র মতো নামিদামী প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর বলে অভিযোগ অভিভাবক ও সুশীল সমাজের।

ওই অসুস্থ ছাত্রীর বাবা সঞ্জীত কুমার অভিযোগে করে বলেছেন, ‘আমার মেয়ে প্রিয়াংকা ওই স্কুলের রজনীগন্ধা শাখার একজন নিয়মিত ছাত্রী। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাসায় খেলার সময় অসাবধানতায় পড়ে গিয়ে আহত হয় সে। এরপর তাকে স্থানীয় শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব (কেপিজে) হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তার ডান পা ভেঙে গেছে। পায়ে প্লাস্টার করার পর তাকে অন্তত তিন সপ্তাহ বেড রেস্টে থাকতে হবে, তা না হলে তার পায়ের ভাঙা হাড় জোড়া না লাগার আশংকা রয়েছে। ইনফেকশনও হতে পারে।’

তিনি আরো জানিয়েছেন, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রিয়াংকার স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসকে ইনামুল বশারের কাছে মেয়ের ছুটির জন্য আবেদন করেন তিনি। প্রধান শিক্ষক ছুটি মঞ্জুর করলেও প্রিয়াংকাকে মাসিক পরীক্ষা দিতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দেন। মেয়ে সুস্থ হওয়ার পরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে কিনা কিংবা অন্য কোনো উপায় আছে কিনা তা জানতে চান প্রিয়াংকার মা-বাবা। এর উত্তরে প্রধান শিক্ষক বলেন, তার জন্য আলাদা কোনো নিয়ম নেই, যত কষ্টই হোক না কেন তাকে সকল শিক্ষার্থীদের মতোই পরীক্ষার হলে এসে পরীক্ষা দিতে হবে। নিরুপায় হয়ে প্রিয়াংকার বাবা-মা তাকে অসুস্থ অবস্থাতেই পরীক্ষার হলে আনতে বাধ্য হন।

প্রিয়াংকার মা রিক্তা রায় অভিযোগ করে বলেছেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমার মেয়ের সাথে শুধু অমানবিক আচরণই করেননি, বরং গত তিনদিনে দুটি করে মাসিক পরীক্ষা চললেও ওই শিক্ষক প্রিয়াংকার কোনো খোঁজ নেননি।’ প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ প্রিয়াংকার মা প্রশ্ন রেখেছেন, ‘জীবন আগে নাকি পরীক্ষা আগে?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক এসকে ইনামুল বশার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘আমি ওই ছাত্রীর পা ভেঙে যাওয়ায় তার অভিভা্বকের কথায় তাকে ছুটি দিয়েছি এবং আমি বলেছি, মাসিক পরীক্ষা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়, আগে প্রিয়াংকা সুস্থ হোক, তারপর না হয় পরীক্ষা দিবে। এ ছাড়া তাকে ভ্যানে করে স্কুলে পরীক্ষার দিতে আনার সময় আমি তার মাকে বলেছি এভাবে না নিয়ে মেয়েটিকে কোলে করে আনলে সুবিধা হবে।’

এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহরিয়ার মেনজিস বলেছেন, ‘ওই ছাত্রীর নাম ঠিকানাসহ তার অভিভাবকরা আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন