বেনাপোল সীমান্তে দুর্ভোগ ও হয়রানি, পরিত্রান চান যাত্রীরা

  24-03-2017 07:22PM

পিএনএস, বেনাপোল : চিকিৎসার জন্য বেনাপোল স্থল পথে ভারত গমনে সীমান্ত এলাকায় এসে লাইনে দাড়িয়ে অসহীন দুর্ভোগে পড়েন বয়েসের ভারে নুয়ে পড়া নড়াইলের পান্তরানী বালা,আরমান শেখ ও চন্ডিবালা। প্রচন্ড রোদ্রের মধ্যে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তারা। বৈধপথে ভারতে যেতে এত হয়রানি ও দুর্ভোগ কেন এ থেকে পরিত্রান চান যাত্রীরা। বেনাপোলে যাত্রী দুর্ভোগ যেন নিয়মে পরিনত হয়ে গেছে। নিরব রয়েছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

ব্যাবসা চিকিৎসা ভ্রমন লেখাপড়া চাকরী সহ বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন ৫হাজারের মতো দেশো বিদেশী নাগরিক বেনাপোল পেট্টাপোল স্থলবন্দর চেকপোষ্ট দিয়ে যাতায়াত করেন। গত ৫দিন ধরে কাষ্টম ও ইমিগ্রেশনে অনেকাংশে উৎকোচ বানিজ্য বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। কড়া নজরদারী করার অভিযোগ তাদের। যাত্রীরা বলেন-ইমিপূর্বে সকাল থেকে বিকালের মধ্যে হাজার হাজার যাত্রী নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতো। দালালী প্রথা বন্ধ হওযায় ঘুরে দাড়িয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাষ্টম। মাছ না পেয়ে সিপে কামড় এমন অবস্থার সুষ্টি হয়েছে। তবে ইমগ্রেশন ও কাষ্টমসে শৃঙ্খল্ াফিরেছে বলে জানান স্থানীয়রা। অনেক যাত্রীই বলেন-ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হয়েছে চেকপোষ্ট এলাকা। এমনটাই চান তারা। তবে দুপার ইমিগ্রেশনের ধীর গতির কথা বলেন যাত্রীরা। কতিপয় প্রশাসনের সদস্যদের দ্বারা যাত্রী লাঞ্চিত হওয়ায় ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।


দীর্ঘ লাইন দেখে-বেনাপোলে এসে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন অনেকে। শুক্রবার দিনভর ছিল দীর্ঘ লাইনে আটকা পড়া যাত্রীদের ভিড়। অনেক নারী ও শিশুরা মানব লাইনের পাশেই শুয়ে বসে কাটিয়েছেন সময়। যাত্রী হয়রানি ও দুর্ভোগ কমেনি। টানা ৫দিন ধরে চলছে এমনাবস্থা। বাড়ছে সীমান্তে দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যদের নির্যাতন ও দুর্বাবহার। চেকপোষ্ট সোনালী ব্যাংক বুথে হয়রনানি বেড়েছে বহুগুন। দায়িত্বরত ব্যাংকাররা যাত্রীদের কাছ থেকে নিচ্ছেন ২০থেকে ৫০ টাকা হারে চাঁদা। তাদের দাবীকৃত টাকা না দিলেই করা হচ্ছে নাজেহাল। এর ফলে বাড়ছে দুর্ভোগ। বুথের সামনে লাইনে দাড়িয়ে থাকছেন যাত্রীরা। দুর্ভোগের নতুন মাত্রা যোগ করেছেন ব্যাংকের সদস্যরা। প্রশানের দুর্বলতাকে দুষছে যাত্রীরা। টানা ৫দিনে সীমান্ত এলাকায় যাত্রী হয়রানি ও দুর্ভোগ চরমে উঠেছে এসবের পরিত্রান চান তারা।

দুর্ভোগে পড়া যাত্রীরা বলেন,বেনাপোলে প্রায় আসেন তারা। আনন্দ উৎসবে করেন ভারত ভ্রমন এবাবর এসে আনন্দ তাদের মাটি হলো। কষ্টের স্মৃতি নিয়ে ফিরছেন তারা।

আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট বেনাপোল- দিয়ে প্রতিদিন৫থেকে৭হাজার যাত্রী গমনাগমন করেন। ভারতীয় হাইকমিশনের সুদিষ্টিতে ভিসা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ছে-তবে গত ৫দিন ধরে লাগামহীন ভাবে চলছে যাত্রী হয়রানি দুর্ভোগ। কতিপয় বিএসএফের অকথ্য আচারনেহতবাক হন অনেকে। ওপারের ইমিগ্রেশন পুলিশের ধীর গতিকেও দুষছেন তারা। যাত্রীসেবা চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে এসব থেকে পরিত্রান চান তারা।

বাংলাদেশ ভারত চেম্বার অব কমার্সের উপ কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান ও আমদানি রফতানিকারক সমিতি বেনাপোল যুগ্নসম্পাদক আলহাজ্ব মহাসিন মিলন- বলেন, যাত্রী গমনাগমনে সরকারের বাড়ছে রাজস্ব আয়। পাসপোটধারী যাত্রীরা দুদেশের মেহমান। বেনাপোল সীমান্ত ইমিগ্রেশন এলাকায় এসব মেহমান(যাত্রীদের)দুর্ভোগ বিবেককে সাড়া জাগায়। দেশ ও জাতির ভাবমূর্তি ক্ষন্ন হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কতৃৃপক্ষের বিষয়টির গুরুত্বের সাথে দেখার জোর দাবী জানান তারা।

ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ-পাসপোর্ট যাত্রীদের বেনাপোল চেকপোষ্ট সোনালী ব্যাংক শাখায় ভ্রমন চ্যাক্স কাটতে যেয়ে হয়রানি হতে হচ্ছে চাওয়্ াহচ্ছে চাঁদা। এসময় টাকা না দিলে করা হচ্ছে হয়রানি ও দূব্যাবহার। এর ফলেও বাড়ছে লাইন-দুর্ভোগের স্বিকার হচ্ছেন তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানান এসব যাত্রীরা।

সকাল সাড়ে ৬টা থেকে যাত্রীদের জন্য ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যাত্রীদের সড়কের উপর লাইন পড়ে যায়। সন্ধা সাড়ে ৬টার পর বন্ধ হয়ে যায় সীমান্ত গেইট। গত ৫দিন ধরে সীমান্ত এলাকায় আটকা পড়ছে হাজার ও যাত্রী। হচ্ছেন হয়রানির স্বিকার। অনেকে সঠিক সময়ে যেতে পারছেন না গন্তব্যে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। কতিপয় অসাধু ইমিগ্রেশন পুলিশ ও বহিরাগত দালালদের অপতৎপরতা কমলেও যাত্রী দুর্ভোগ বাড়ছে। টাকার লেনদেন বন্ধ হলেও যাত্রী দুভোগ কমেনি বলে জানান স্থানীয়রা-যাতায়াত বৃদ্ধি সহ ডেক্স ও জনবল সংকটে বাড়ছে যাত্রী দুর্ভোগ। ভিড়ও বাড়ছে। যাত্রী হয়রানি ও দুর্ভোগ কমাতে কাজ করছেন তারা-জানান কাষ্টম ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা।


সুপাররিনটেনডেন্ট বেনাপোল কাষ্টম চেকপোষ্ট-মো: সফিউল্লাহ এবং বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন ওসি ভারপ্রাপ্ত ফজলুর রহমান বলেন-যাত্রী সেবায় আপ্রান চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। বৃহস্পতিবার রাতে নির্দিষ্ট সময়ের পরও আটকে পড়া কর্তৃপক্ষের পরামর্শে যাত্রীদের গমনাগমনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন ডেক্সে কর্মরতরা নিরলস ভাবে যাত্রী সেবায় কাজ করছেন বলে জানান স্থানীয়রা। এমনি ঘুষ ও দুনীতি পরিবেশে যাত্রীযাতায়ত চান বন্দর এলাকার মানুষ। তবে যাত্রী সেবার মান বাড়ানো দাবী জানান তারা।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন