পিএনএস, সিলেট: বৃহস্পতিবার রাত থেকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলে আটকে ছিলেন ২৮ পরিবারের ৭৮ ব্যক্তি। প্রায় দুই দিন পর শনিবার দুপুরে জঙ্গিদের আস্তানা ওই ভবন থেকে তাদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে আসে সেনাবাহিনী।
বিকেলে উদ্ধার হওয়া বাসিন্দারা কথা বলেন গণমাধ্যমের সাথে। সবার চোখেমুখেই আতঙ্কের ছাপ। তবু বন্দিদশা থেকে ফিরে আসার স্বস্তি সবার মুখে। এই ফিরে আসাকে নতুন জীবন ফিরে পাওয়ার সাথে তুলনা করলেন তাদের অনেকে।
শনিবার সকাল ৯টায় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ শুরুর পর ওই জঙ্গি আস্তানায় জিম্মি হয়ে পড়া ৭৮ জনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে সেনাবাহিনী; তবে এখনো শেষ হয়নি অভিযান।
চারতলা ও পাঁচতলা দুই ভবন থেকে উদ্ধার ৭৮ জনের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ, ২৭ জন নারী ও ২১টি শিশু রয়েছে।
তাদের উদ্ধারের পর পাশের একটি ভবনে দিনভর নিরাপদে রাখার পর সন্ধ্যায় তাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা বলার সুযোগ করে দেয় সেনাবাহিনী।
এদের মধ্যে পিয়ালী চৌধুরী নামের এক স্কুল শিক্ষিকা বলেন, ফিরে এসে মনে হচ্ছে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। এই দুটো দিন খুব আতঙ্কে ছিলাম। বাসায় রান্নাবান্নাও হয়নি। বাচ্চারাও সবসময় কান্নাকাটি করতো।
এই ভবনের নিচতলায় থাকতেন গৃহিনী আশালতা ঘোষ। জঙ্গিরাও নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। আশালতা বলেন, শুক্রবার ভোরে বিস্ফারণের পরই টের পাই ওই বাসায় জঙ্গিরা রয়েছে। এর আগে তাদের ব্যাপারে কিছুই টের পাই নি আমরা।
তিনি বলেন, কাছাকাছি ফ্ল্যাটে হওয়ায় খুব আতঙ্কে ছিলাম।
জঙ্গি আস্তানাটি ঘিরে রাখার পর ওই দুই ভবন ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় আতঙ্কের মধ্যে ৩০ ঘণ্টার বেশি অবরুদ্ধ থাকার পর শনিবার সেনা অভিযানে উদ্ধার হয়ে ‘নতুন জীবন’ পেয়েছেন বলে মনে করছেন তিনিও।
একই মালিকের ওই দুই ভবনে একটির নিচ তলায় এক জঙ্গি দম্পতি রয়েছে, ধারণা থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাতে প্রথম অভিযান শুরু করে পুলিশ। এরপর যায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এবং সোয়াত; সবশেষে অভিযানের নেতৃত্ব নেয় সেনাবাহিনী।
পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম
‘আমরা যেন নতুন জীবন পেয়েছি’
26-03-2017 07:08AM