‘জঙ্গি আস্তানা’ ঘিরে ব্যাপক গোলাগুলি-বিস্ফোরণ, ঘটনাস্থলে সোয়াত বাহিনী

  29-03-2017 01:53PM

পিএনএস, মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে দুটি বাড়ি মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে ঘিরে রেখেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও র‌্যাব । দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ব্যাপক চলছে। জঙ্গিরা ভিতর থেকে গুলির পাশাপাশি গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সোয়াত বাহিনী।

জানা গেছে, আস্তানা দুটি মৌলভীবাজারে পৌর শহরের বড়হাটে তিনতলা একটি ভবন এবং অন্যটি মৌলভীবাজার শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ফতেহপুরের খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজার এলাকায়।

সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ শেষ হওয়ার একদিন পরই এবার মৌলভীবাজারে দুটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখার ঘটনা ঘটল।

মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহাজালাল বলেন, ভোররাতের দিকে অভিযান শুরু করলে জঙ্গিরা প্রথমে গুলি করতে থাকে এবং পরে একের পর এক গ্রেনেড ছুঁড়তে থাকে।

মৌলভীবাজার পুলিশের এএসপি (সদর দপ্তর) বলেন, আমরা অভিযানে আছি। তারা ভেতর থেকে গ্রেনেড চার্জ করছে। এরপরও জঙ্গি কি-না কোন সন্দেহ আছে?

তিনি জানান, এরই মধ্যে রাত থেকে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে দু’টি আস্তানার বাড়ি দু’টি ও আশেপাশের এলাকা থেকে কৌশলে সাধারণ বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

পুলিশ দু’টি আস্তানাতেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। জঙ্গিদের কোণঠাসা করে তুলতে এরই মধ্যে সকল প্রয়োজনীয় কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

জানা গেছে, জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে পুলিশ ঘিরে রেখেছে সে দুই বাড়ির মালিক একই ব্যক্তি সাইফুর রহমান। তিনি সপরিবারে লন্ডনে থাকেন। মৌলভীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর জালাল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বড়হাট এলকায় তিনতলা ও খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজার এলাকার নাসিরপুর গ্রামের যে একতলা বাড়িটি রয়েছে সে দুটি বাড়ির মালিক সাইফুর রহমান।

এর মধ্যে নাসিরপুর গ্রামের জঙ্গি আস্তানা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে তিনটি গ্রেনেড ছোঁড়া হয়েছে। এছাড়া গোলাগুলিও চলছে।

নাসির নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সরকার বাজারের বাড়িটি ঘিরে ওই এলাকায় সকালে বিকট আওয়াজ শোনা গেছে। এরপর সকাল থেকে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

বড়হাটে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। নাশকতা এড়াতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। অভিযানস্থলের অদূরে দমকল ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে।

মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ দুটি আস্তানাতেই জঙ্গিরা রয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকেই আস্তানা দু’টি ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ। রাত থেকে কৌশলে আমরা এলাকাবাসীকে সরিয়ে নিতে পেরেছি।

তিনি আরো জানান, ভোররাতের দিকে অভিযান শুরু করলে জঙ্গিরা প্রথমে গুলি করতে থাকে এবং একের পর এক গ্রেনেড ছুঁড়েও মারছে।

মৌলভীবাজার পুলিশের এএসপি (সদর দপ্তর) বলেন, আমরা অভিযানে আছি। তারা ভেতর থেকে গ্রেনেড চার্জ করছে। এরপরও জঙ্গি কি-না কোন সন্দেহ আছে?

এদিকে মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাট ও সংশ্লিষ্ট কুসুমবাগ এলাকা এবং সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে পূর্ব দিকে দুই কিলোমিটার এলাকায় (নাসিরপুর গ্রামসহ) এই দুটি এলাকায় মাইকিং করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম জানান, বুধবার বেলা ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উল্লেখিত এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। জঙ্গি সন্দেহে ঘিরে রাখা দুটি বাড়ীর আশপাশের এলাকার সব বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছে আইন শৃংখলা বাহিনী।

স্থানীয়রা জানান, সেই দু’টি বাড়ির মালিক লন্ডন প্রবাসী সাইফুল ইসলাম। মৌলভীবাজার শহরের পৌরসভাধীন বড়হাটের আস্তানাটি একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি এবং খলিলপুর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের (ফতেহপুর)আস্তানাটি একটি একতলা টিনসেটের বাড়ি। এক বাড়ী থেকে অপর বাড়ীর দুরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার।

সাইফুল ইসলাম সপরিবারে লন্ডনে থাকেন। বাড়ি দু’টি দেখভাল করেন তার আত্মীয় জুয়েল মিয়া নামে একজন। কিন্তু তার কাছ থেকে কারা ওই দু’টি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলো তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

মৌলভীবাজারের বড়হাট ও ফতেহপুরের আস্তানা দু’টির জঙ্গিদের তৎপরতা সিলেটের ‘আতিয়া মহল’র জঙ্গিদের মতোই। এদের হাতেও তেমন অস্ত্র-বিস্ফোরক রয়েছে এবং সেই কায়দায় এখানকার জঙ্গিরা গুলি ও গ্রেনেড ছুঁড়ছে।

মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ দুটি আস্তানাতেই জঙ্গিরা রয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকেই আস্তানা দু’টি ঘেরাও করে রাখেছে পুলিশ। রাত থেকে কৌশলে আমরা এলাকাবাসীকে সরিয়ে নিতে পেরেছি।



পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন