ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ আরো ৮ জনের লাশ উদ্ধার

  30-03-2017 05:36PM

পিএনএস, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে খেয়া ট্রলার ডুবির ঘটনার ৩য় দিনে বৃহস্পতিবার নিঁখোজ আরো ৮ জনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স। এ নিয়ে গত ৩ দিনে ১২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের তালিকা অনুযায়ি এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৭ জন।

বৃহস্পতিবার যে ৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন, উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের কাছিকাটা গ্রামের মৃত. কাসেম আলী শেখের ছেলে আব্দুল মজিদ শেখ(৭৫), একই ইউনিয়নের কাছিকাটা গ্রামের নাসির শেখের ছেলে নাজমুল (৬), দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়নের আলতিবুরুজবাড়িয়া গ্রামের মৃত. আ.গফ্ফার হাওলাদারের ছেলে মো. সুলতান হাওলাদার (৫৫), একই ইউনিয়নের বুরুজবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল গফুর হাওলাদরের ছেলে মো. আনসার হাওলাদার(৫০), বলইবুনিয়া ইউনিয়নের বাশবাড়িয়া গ্রামের আলম চাপরাশির স্ত্রী সালমা (৩০) ও তার ছেলে সাজ্জাদ (২), হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের কালিাকাবাড়ি গ্রামের আব্দুস ছালাম শেখের ছেলে উপজেলা প.প. অফিসের ষ্টাফ মো. রফিকুল ইসলাম (৩৫), শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা গ্রামের মৃত. সামসুল হুদার (ব্যাংক কর্মকর্তা ) ছেলে রায়েন্দা পাইলট স্কুলের ১০ শ্রেনির ছাত্র আল-সামস আবির (১৭)।

অপরদিকে নিখোঁজ নিহতদের লাশের সন্ধানে পানগুছির তীরে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন স্বজনেরা। নিখোঁজদের সন্ধ্যান কার্যক্রমে দায়িত্বরত বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স-এর উপ-পরিচালক মো. মাসুদ সরদার জানান, তাদের কাছে থাকা তালিকা অনুযায়ী নিখোঁজ ২০ জনের মধ্য থেকে ১৩ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে, এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৭ জন ।

গত ৩ দিনেও যাদের লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি তারা হলেন, উপজেলার পল্লীমঙ্গল গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে রাহাত (১০ মাস), বারইখালী শহিদুল ইসলামের মেয়ে লাবনী (২০), উত্তর ফুলহাতা গ্রামের মহসিন হোসেন ছেলে হাসিব (৬), গোপালপুর চিংড়াখালী গ্রামের তবিবুর রহমানের স্ত্রী মুন্নি বেগম (৪০), উত্তর সুতালড়ী গ্রামের হাফেজ আব্দুল আজিজের স্ত্রী কামরুননেছা (৫৮), শরণখোলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের পুলিশ কনষ্টবল জাহিদ হোসেন লিটনের স্ত্রী নাছিমা (৩৫), পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার পশ্চিম বালিপাড়া গ্রামের খলিল তালুকদারের স্ত্রী নাছরিন (২৮)। তাদেরকে ইদ্ধারের জন্য নৌবাহিনী,কোষ্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স-এর সদস্যরা উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

ঘটনার দিন মঙ্গল ও বুধবার যে ৫ নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন, উপজেলার উত্তর পুটিখালী ইউনিয়নের উত্তর পুটিখালী গ্রামের মার্কেট এলাকার আ. হালিম হাওলাদারের মেয়ে ও গোপালগঞ্জের বাসিন্দা প্রবাসী নওয়াব আলীর স্ত্রী লিমা আকতার ওরফে রিমা (২৬), বহরবুনিয়া ইউনিয়নের ফুলহাতা গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রী নাদিরা বেগম (১৯), বলইবুনিয়া ইউনিয়নের কালিকাবাড়ি গ্রামের মহাসিন আলীর স্ত্রী বিউটি বেগম (৩৮), হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের গুয়াবাড়িয়া গ্রামের হাসেন হাওলাদারের স্ত্রী পিয়ারা বেগম (৫০) ও চিংড়াখালী ইউনিয়নের চিংড়াখালী গ্রামের মৃত. ইউনুস সরদারের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৭৫)।

এদিকে ট্রলার ডুবির ট্রাজেডিতে মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দু’ দিনের শোক পালিত হয়েছে। নিহতদের পরিবারের জন্য জেলা পরিষদের পক্ষ হতে ১৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় করনিয় সম্পর্কে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় তার কার্যালয়ে জরুরী সভা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান।

অপর দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ বুধবার বিকেলে ট্রলার দুর্ঘটনায় নিহত ও নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। তিনি নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নিখোঁজদের স্বজনদের সঙ্গে নদীর পাড়ে সময় কাটিয়ে তাদের সান্তনা দেন। এসময় উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এমদাদুল হক, মাষ্টার খ.ম লুতফর রহমান, ছাত্রলীগের সভাপতি ওবায়দুল ইসলাম টিটু, খান হাসিবুর রহমান, রাসেল হাওলাদার, মনির হোসেন রাজ্জাক, আবু ফয়েজ নিশাত তার সাথে ছিলেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন