শেরপুরে ঝড় বৃষ্টি আতঙ্কে অর্ধলাখ বোরো চাষী

  23-04-2017 03:16PM

পিএনএস, শেরপুর: সোনার রঙে ছেয়ে আছে ফসলের মাঠ। আর আকাশজুড়ে চলছে কালো মেঘের উঁকিঝুঁকি। তা মাঝে মধ্যেই প্রচণ্ড গর্জন হাঁকছে। সেই সঙ্গে বইছে কালবৈশাখী হাওয়া। ঝড়ছে বৃষ্টিও। এ অবস্থায় কৃষকের মনে স্বস্তি নেই। ঝড় বৃষ্টি আর কালবৈশাখীর থাবা থেকে রক্ষা করে ক্ষেতের উঠতি ফসল ঘরে তোলা নিয়ে এবার বগুড়ার শেরপুর উপজেলার অর্ধলাখ বোরো চাষি শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা অনেকটা আতঙ্কের মধ্যেই দিনাতিপাত করছেন।

বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান বলেন, বৈশাখের শুরু থেকেই আবহাওয়া ভাল যাচ্ছেনা। তাই এই মুহুর্তে মাঠের উঠতি ফসল নিয়ে তাঁরাও চিন্তিত রয়েছেন। এই উপজেলায় এখনও বোরো ধান কাটা শুরু হয়নি। সপ্তাহখানেক পর আগামজাতের ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে। এ অবস্থায় প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে- ক্ষেতের ধান ৮০থেকে ৮৫ভাগ পাক ধরা মাত্র ওইসব জমির ধান কাটতে হবে। এক্ষেত্রে ফলনেও কোন কমতি হবে না। এ জন্য তাঁর অফিসের লোকজন মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। এছাড়া বিষয়টি মাইকযোগেও প্রচার-প্রচারণা চালানোর চিন্তা করছেন বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২১হাজার ১৫০হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে আগামজাতের হাইব্রিড ধান রয়েছে ৪০০হেক্টর। আর ১১হাজার হেক্টর জমিতে উফসি জাতের বিভিন্ন ধান লাগানো হয়েছে। এছাড়া শেরপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রায় ৭০হাজার কৃষক পরিবার রয়েছেন। এরমধ্যে ৫০হাজার কৃষক কমবেশি বোরো চাষ করেছেন। তারা সবাই কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টির কবল থেকে ক্ষেতের উঠতি ফসল ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন বলে সূত্রটি জানায়।

এদিকে উপজেলার শাহবন্দেগী, বিশালপুর, কুসুম্বী, মির্জাপুর ও ভবানীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার ধান পাক ধরতে শুরু করেছে। তাই এখনও ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়নি। তবে বেশ কিছু এলাকার কৃষকরা তাদের অল্প পরিমান জমিতে লাগানো আগামজাতের ধানকাটা ও মাড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগামি ৪-৫দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে। মির্জাপুর ইউনিয়নের মাথাইলচাপড় গ্রামের মোনায়েম হোসেন জানান, তিনি চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান লাগিয়েছেন।

এরমধ্যে বিআর-২৮, পারিজাত, কাজললতা, মিনিকেট জাতের ধান রয়েছে। ইতিমধ্যে এসব জমির ধান পাক ধরতে শুরু করেছে। কিন্তু আবহাওয়ার যে অবস্থা তাতে এবার বোরো ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কিনা এনিয়ে চরম শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন বলে কৃষক মোনায়েম হোসেন জানান। একইভাবে সাধুবাড়ী গ্রামের শহিদুল ইসলাম সদের, গোলাম রব্বানী, ফজলুল করিম জানান, গেল ৩-৪দিন ধরে কাল বৈশাখীর হালকা বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে অনেক জমির ধান মাটিতে পড়ে গেছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে জমির আধাপাকা মিনিকেট ও কাজললতা ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই উঠতি ফসল নিয়ে তারাও চরম শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন বলে এসব কৃষকরা জানান।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন