পিএনএস, সুনামগঞ্জ:সুনামগঞ্জের বৃহত্তম বোরো ধানের হাওর 'শনির হাওর'টিও তলিয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জের সবক'টি হাওরই তলিয়ে গেল। রবিবার ভোরে হাওরপাড়ের সাহেবনগরের পূর্বপাশের বাঁধ ও জালখালি বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় শনির হাওর। এতে ডুবে গেছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। শনির হাওর তলিয়ে যাওয়ায় কার্যত সুনামগঞ্জ জেলায় শতভাগ ফসলহানি হয়েছে। এ অবস্থায় হাওরাঞ্চলের চারটি উপজেলায় অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের মধ্যে চলছে হাহাকার।
হাওরবাসীর দাবি, শনির হাওরের ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ২০০ কেটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। শনির হাওরসহ সুনামগঞ্জের সবক'টি হাওর তলিয়ে শতভাগ ফসলহানির পরও সুনামগঞ্জ জেলাকে কি দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হবে না- এ প্রশ্নই এখন হাওরবাসীর।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন এবং জামালগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে শনির হাওরের অবস্থান। কৃষি অফিসের হিসাব অনুযায়ী, এ হাওরের তাহিরপুর অংশে জমি রয়েছে ৮ হাজার হেক্টর। অন্য দুই উপজেলায় পড়েছে বাকি জমি।
গত ২৫ দিন ধরে তিন উপজেলারই হাজার হাজার কৃষক স্বেচ্ছাশ্রমে শনির হাওরের ৩ কিলোমিটার বাঁধ রক্ষায় প্রাণপণ লড়াই করছিলেন। তারা বস্তা দিয়ে বাঁধ উচুকরণ, ক্লোজার বাঁধ রক্ষা করার জন্য পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টাই বাঁধে ছিলেন। পাঁচ দিন ধরে কৃষকরা পালাক্রমে কেউ বাঁধে কাজ করছিলেন, কেউ জমির কাঁচাপাকা ধান কাঁটা চেষ্টা করছিলেন, কৃষদদের কাটা ধানও ছিল হাওরের পতিত জমিতে তৈরি খলায় (ধান মারাইয়ের জন্য শুকনো জায়গা)। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে সাহেবনগরের পূর্বপাশের বাঁধ ও জালখালি বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ শুরু হলে হাওর পাড়ের গ্রামগুলোয় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
রবিবার কৃষক পরিবারের আহাজারিতে শনির হাওরপাড়ের গ্রামগুলোর পরিবেশ ছিল বিষাদময়। কৃষকদেরকে কিছু জিজ্ঞেস করলেই কেবল কেঁদেছেন।
পিএনএস/আলআমীন
সুনামগঞ্জের 'শনির হাওর'টিও তলিয়ে গেছে
23-04-2017 04:02PM