মায়ের মৃত্যুর পর, অবশেষে বাবার কোলে ঠাঁই পেল ছোট্ট মাইশা

  25-04-2017 09:02PM

পিএনএস ডেস্ক : কচি কণ্ঠে বাবা ডেকে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে মাইশা আক্তার সোহানা নামের শিশুটি জানাল, বাবা, মা হাসপাতাল থেকে কোথায় চলে গেছে। আমি খুঁজে পাচ্ছি না। তুমি তাকে দেখেছ? সেকি তোমার ওখানে গিয়েছে? তিন বছরের সোহানা তার মা তানজিলা ফারুক সৌখিনের খবর জানতে বাবাকেই এ প্রশ্ন করে বসে।

হাসপাতালে মায়ের মৃত্যুর তিন দিন পর বাবাকে কাছে পেয়ে অবুঝ শিশুর প্রথম কথাই ছিল এটি। শিশু সোহানা মৃত্যু কী তা সে জানি না। তার মা যে চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে চলে গেছে। সেটি সে বুঝেনি।

শিশু কন্যা সোহানাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বাবা এস এম সোহাগ কান্নায় ভেঙে পড়েন। এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয় সেখানে। জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়াসহ উপস্থিত সকলের চোখে পানিতে ভরে উঠেছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের কক্ষে অবুঝ শিশু কন্যা সোহানা ও তার বড়ভাই সোয়াদকে তার বাবা এস এম সোহাগের কাছে হস্তান্তরের আগে এমন ঘটনায় সেখানে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। সে পরিবেশ স্বাভাবিক করতেই যেন জেলা প্রশাসক কোলে তুলে নেন সোহানা ও সোয়াদ দুই ভাইবোনকে। পরে তাদের জন্য আনা হয় নতুন পোশাক ও উপহার সামগ্রী।

এরপর এস এম সোহাগের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে সোহান ও সোয়াদকে তার বাবা এস এম সোহাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় সেখানে অন্যদের উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. এরাদুল হক, এনডিসি মো.পারভেজ মল্লিক, সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. নূরুল হুদা, ইউপি চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ, সোয়াদ ও সোহানের মামা সোহাগ হাসান বিশ্বাস সোহানার পালিত মা সাজেদা বেগম, সোয়াদেও আশ্রয় দাতা মো. আজাদসহ বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।

এ সময় জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মা হারা দুটি অবুঝ সন্তানকে তার বাবা সোহাগের তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অকালে মা হারা ওই দুটি শিশু বাবার কাছে থেকে কোনো অবহেলার শিকার হবে না বলে বিশ্বাস করি।

এর আগে দুপুরে ওই দুই শিশুর মামা সোহাগ হাসান বিশ্বাস আর্থিক সামর্থ না থাকায় দুই শিশুর ভরণপোষনের দায়িত্ব নিতে অপারগতা জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে তিন বছরের অবুঝ শিশু মাইশাকে রেখে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তানজিলা ফারুক ওরফে সৌখিন বেগম।


পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন