বরগুনায় প্রতিপক্ষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে স্ত্রী অপহরণ

  26-04-2017 01:52AM


পিএনএস, বরগুনা: বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের গুদিঘাটা গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে এসব অভিযোগ জানিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামী করে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী স্বামী মোঃ খলিলুর রহমান ফকীর (৩৫)। অভিযোগ আমলে নিয়ে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, জমিজমার বিরোধের জের ধরে ডৌয়াতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান (৩৫), তার ক্যাডার আমিন মোল্লা (৪৮), সেলিম হাওলাদার (৫২) এবং আঃ জলিলসহ (৪২) একটি সন্ত্রাসীদল গত শনিবার রাতে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মোঃ খলিলুর রহমানের বসতঘরে হামলা চালায়। এ সময় তার স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। একই সাথে তাদের ঘরবাড়ি ও দু'টি খড়ের গাদায় আগুন দিয়ে যায় তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোস্তফা ফকীরের কাছ থেকে জবরদখল করে নেওয়া দু'টি দোকান ঘর ভেঙ্গে গত শনিবার বড় করে ঘর তুলতে চেয়েছিলো সেলিম হাওলাদার ও তার লোকজন।

সে সময় মোস্তফা ফকীরের স্বজনরা ঘর তুলতে বাঁধা দিলে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমানের ক্যাডার বাহিনীর প্রধান মোঃ সেলিম হাওলাদার ও তার প্রধান সহযোগী আমীর মোল্লার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাদের উপর হামলা চালায় এবং দু'টি খড়ের গাদায় আগুন দিয়ে যায়।

এ বিষয়ে বামনা থানাপুলিশকে খবর দিলে ওইদিনই পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যায়। পুলিশে খবর দেওয়ার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গভীর রাতে তারা আরও একবার হামলা চালায় এবং ঘরের সবাইকে মারধর করে বাইরে বের করে তাদের ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

এ সময় মোঃ খলিলুর রহমানকে মারধর করে তার (খলিলুর রহমানের) স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে অপহরণ করে নিয়ে যায় আমিন মোল্লা ও সেলিম হাওলাদারসহ চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনী।


এ বিষয়ে মোস্তফা ফকীর ও তার ভাতিজা মোঃ খলিলুর রহমানের প্রতিপক্ষ সেলিম হাওলাদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ডৌয়াতলা বাজারে দীর্ঘদিন ধরে সেলিম হাওলাদার ওই দু'টি দোকান ঘরের মালিক ছিলেন। সম্প্রতি আদালতের মাধ্যমে ওই জমির মালিক হন মোস্তফা ফকীর।

এ বিষয়ে বিবাদ নিস্পত্তির জন্যে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোস্তফা ফকীরের জমির দাম নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু মোস্তফা ফকীর জমির মুল্য না নিয়ে জমি ফেরৎ চাইলে দু'পক্ষের মধ্যে বিরোধ আরও বেড়ে যায়। গত শনিবার গভীর রাতে কে বা কারা মোস্তফা ফকীরের ঘরে আগুন দিয়েছে তা তিনি জানেন না। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নিজেরাই নিজেদের ঘরে আগুন দিতে পারে বলে তার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মিজান।


বামনা থানার ওসি মোঃ শাহাবুদ্দিন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ওই বাড়ির দু'টি খড়ের গাদায় আগুন দেওয়ার কথা শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বামনা থানার পুলিশ। সেখান থেকে পুলিশ চলে আসার পরে গভীর রাতে কে বা কারা পূণরায় সেই বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়। বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন