শিবগঞ্জে ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ ফের শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে সোয়াত

  27-04-2017 08:32AM

পিএনএস, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িটিতে অভিযান বুধবার রাতের মতো স্থগিত ঘোষণা করেছিল পুলিশ। অপারেশন ঈগল হান্ট নামের ওই অভিযানটি বৃহস্পতিবার সকালে আবার শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।

বুধবার ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলেও এ পর্যন্ত হতাহতের বিস্তারিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ত্রিমোহনী এলাকার একটি বাড়ি সারাদিন ঘিরে রাখার পর বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ অভিযান শুরু করে পুলিশ। ওই বাড়িতে সন্তানসহ এক জঙ্গি দম্পতি রয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।

এর আগে ভোরে বাড়িটিতে তল্লাশি চালাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এরপর থেকেই ওই বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ।

বাড়িটির আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে রাখা হয়। সেখানে কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দেয়া হয়নি।

ঢাকা থেকে যাওয়া সোয়াত সদস্যরা পৌনে পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সাড়ে ৬টার দিকে সোয়াট অভিযান শুরু করে। এ সময় মুহুর্মুহু গুলি আর বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

পুলিশ এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’। রাত ৯টার দিকে অভিযান আজকের মতো সমাপ্ত ঘোষণা করে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যে বৃহস্পতিবার আবার অভিযান চালানো হবে।

রাত ৯টার দিকে পুলিশের কর্মকর্তা প্রলয় কুমার জোয়ারদার জানান, আজকের মতো অপারেশন ঈগল হান্ট স্থগিত। বৃহস্পতিবার আবার শুরু করা হবে। সেই অভিযান শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ কর্মকর্তা মাইনুল ইসলাম এর আগে জানান, ‘এখানে আবু নামের একজন রয়েছেন। তিনি এখানে মুদির ব্যবসা করলেও, ভেতরে ভেতরে জঙ্গি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা আছে। আরো কয়েকজনের এখানে আসা যাওয়া থাকতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ বুধবার সকালে যখন আমরা এখানে ঢুকতে যাই, তখন আমাদের উপর গুলি করা হয়। এখন সোয়াত টিম এসেছে, তারা অভিযান শুরু করেছে।’

বাড়ির বাসিন্দাদের সম্পর্কে তিনি জানান, আবুর সঙ্গে তার স্ত্রী আছে। আর কেউ কেউ বলছেন একটি বাচ্চা আছে, আবার কেউ কেউ বলছেন, তাদের সঙ্গে দুইটি বাচ্চা রয়েছে।

বাড়িটি ঘেরাও করার পর থেকেই আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলোর বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানে কাউকে যেতে বা বের হতে দেয়া হচ্ছে না।

ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আনোয়ার হোসেনের বাড়ি কয়েকটি বাড়ি পরেই। তিনি বলছেন, বাড়িটির বাসিন্দা আবু এই গ্রামেরই বাসিন্দা, ছোট বেলা থেকেই চেনেন। তিনি বাজারে মসলার ব্যবসা করেন।

‘কয়েকমাস আগে গ্রামের আরেকজনের তৈরি করা এই বাড়িটিতে আবু তার পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করে। তবে তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই’, বলছিলেন আনোয়ার হোসেন।

বিকালে ঢাকা থেকে সোয়াট টিম পৌঁছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌঁছে অভিযান শুরু করে। তাদের সহায়তা করছে জেলা আর রাজশাহী থেকে আসা পুলিশ সদস্যরাও।

এই নিয়ে গত দেড় মাসে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ১০টি বাড়িতে অভিযান চালালো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় অভিযানে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৮জন নিহত হয়েছে। আর গত একবছরে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে অর্ধশত ব্যক্তি।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন