নিম্নচাপ রূপ নিচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে, বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত

  28-05-2017 08:25PM

পিএনএস ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ রূপ নিচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে। এজন্য সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

রবিবার দুপুরের দিকে ঢাকার এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। এতে গরম কমে কিছুটা স্বস্তি এসেছে নাগরিক জীবনে।
যদিও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়াবদিরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের উপর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে। এতে চলমান তাপপ্রবাহ থাকবে না।

রবিবার (২৮ মে)বিকেলে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি মধ্য-বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরতনিম্নচাপটিসামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে রবিবারবিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এটি আরও ঘণীভূত হয়ে পরবর্তী ১৫ ঘণ্টার মধ্যে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘মোরা’। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ওমান) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে। ‘মোরা’ নামটি থাইল্যান্ডের দেওয়া।

আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান জানান, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৫০ কি.মি. যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করারও পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

তবে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আগামী ৩০ মে দুপুরের আগেই বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

প্রাকৃতিক নানা কারণে সমুদ্রের একটি অঞ্চলে কেন্দ্রাভিমুখী ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল বা লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে এ ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলটি শক্তি সঞ্চয় করে (বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়ে) সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও শেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, নিম্নচাপ হচ্ছে একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ৪১ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। গভীর নিম্নচাপের ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে।
কোন ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে বলে ঘূর্ণিঝড়।
১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত মানে হল, জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুযোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার যা সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।

রবিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

ফরিদপুর, যশোর, মংলা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, ভোলা এবং শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসহ চট্টগ্রাম বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং পরবর্তীতে কিছু অঞ্চলসমূহের উপর থেকে তা প্রশমিত হতে পারে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

পিএনএস : জে এ মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন