ওরা আশ্রয়হীন এতিম, তাই ভালো ইফতার পায়না!

  28-05-2017 11:17PM

পিএনএস, (মো:আরিফ হোসেন) বরিশাল : ওরা আশ্রয়হীন এতিম। এদের মধ্যে কারো বাবা নেই, কারো মা নেই । আবার অকালে অনেকেই হারিয়েছে বাবা-মা দুই জন কেই। একেক জনের জীবনের গল্প একেক রকম। এদের পরিবারের কোনো খোঁজ নেই। বরিশাল নগরীর পলাশপুর ৫ নং ওয়ার্ডের ৭নং আর্দশ গুচ্ছগ্রাম এলাকায় গড়ে উঠেছে ছোট্ট শিশুদের নিয়ে একটি এতিম খানা। নাম দেয়া হয়েছে রহমানিয়া কেরাতুল কোরআন নুরানী হাফিজি মাদ্রাসার ও লিল্লাহ বোর্ডিং।

এই এতিমখানাই তাদের আসল ঠিকানা। রমজান মাস। তাই তারা পরিবারের সাথে রমজানে চায় একটু ভালো ইফতার খেতে, সবাই বাড়ি যেতে চাইলেও বাড়িই তাদের এতিমখানা। মাগফেরাতের মাস। এ মাসেও ভালো ইফতার জোটে না তাদের কপালে। কোনো দিন শুধু পানি মুখে দিয়ে ইফাতার করে। নামাজ শেষে সাদা ভাতের সাথে একটু সবজি দিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে রোজাদার এতিম শিশুরা।

ভোররাতের কথা বলা বাহুল্য। চলছে রমজান মাস। অ নেক সুহৃদয় ব্যক্তি সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ নিতে আসেনি কোন সংগঠন। সহযোগিতা পেলে এই রমজান মাসে ভালো কিছু দিয়ে ইফতার করতে পারতো এতিম শিশুরা। বর্তমানে এই এতিমখানার ছাত্র রয়েছে ১২০ জন। বছরে মাদ্রাসার পরিচালক নুরুল ইসলাম ফিরোজী সাহেব ছোট খাটো কয়েকটি মাহফিল করে এবং তার পত্তিক সম্পত্তি বিক্রয় করে ১০০ এতিম শিশুর পেট চালাচ্ছে তিনি।

এতে দেশের মানুষের ভালবাসা ছাড়া কিইবা পেয়েছেন। পেয়েছে কেবল একটি খেতাব “সাদা মনের মানুষ” তাতে তো আর এতিমদের পেট ভরেনা। কিন্তু চলমান রমজান মাসে বেকায়দার রয়েছে এতিমদের নিয়ে। জানা যায়, তার নিজের উদ্দেগে জমি বিক্রয় করে চালু করেন একটি এতিম খানা। আয় বলতে ফিরোজীর কিছু মাহফিল থেকে আসা কিছু অর্থ। এতিমদের রক্ষার্থে আশ্রয়হীনদের ব্যবস্থা করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি বাড়ির ভিটা বিক্রি করে নিজেই তাদের মা-বাবা। ছাত্রদের নিয়ে পড়েন বিপাকে। বর্তমানে এতিমসহ তার দুই ছেলেকে নিয়ে সবাই এক সাথে দিন রাত কাটান এখানে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই মানুষির গভীর ভালোবাসায় এখানে ঠাঁই মেলেছে ১২০ জন এতিম শিশুর। মাদ্রাসার পরিচালক নুরুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, ‘এতগুলো মুখে খাবার তুলে দিতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এসবের ব্যবস্থা করতে গিয়ে নিজের বসতভিটা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। বস্তির কিছু দিন খেতে খাওয়া মানুষ শিশুদের দেখাশুনা ও তাদের জন্য রান্নার ব্যবস্থা করেন। মাদ্রাসাটির পরিচালক কান্না করতে করতে, বলেন ভাই ছোট বাচ্চারা সারা দিন রোজা রেখে ইফতার করে কয়েটা মুড়ি অথবা পানি ভাত দিয়ে। তাদের দিকে ফিরেও কোন ব্যাক্তি তাকায়না। ভালো কোন ইফতারের মুখ দেথতে পায়না এতিমরা।

ভাই কি করবো আমাদের মাদ্রাসাটির নিজস্ব কোন জমি না থাকার কারনে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। কোন ব্যাক্তি যদি মাদ্রাসাটির জন্য ২ শতাংশ জমি দান করতে তাহলে আমাদের মাদ্রাসাটি আনেক এগিয়ে যেতো। তিনি আরো বলেন,বর্তমানে কোন সাহায্যে না পেলে আমার মনে হয় মাদ্রাসাটি চলানো আমার উপরে সম্ভব নয়।

স্থানীরা জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাহায্য পেলে এতিম শিশুদের একটু ভালো হতো।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন