গোপীনগরে সন্তানের সামনে মা’কে ধর্ষণের অভিযোগ

  22-06-2017 10:15AM



পিএনএস, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পুর্ব গোপিনগর গ্রামে এক গৃহবধুকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার দুপুরে উপজেলার গোপীনগর এলাকায় গৃহবধুকে গণধর্ষনের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবীতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

স্থানীয়রা জানা যায়, গত সোমবার ( ১৯ জুন ) মধ্যরাতে উপজেলার একটি নির্জন দ্বীপের ন্যায় পরিত্যক্ত একটি ভাঙ্গা ছনের ঘরে ওই গৃহবধু ও তার দুই শিশু মোবাইদ (৪), এবং ছয় মাসের শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। এসময় তার স্বামী বাবুল মিয়া মাছ ধরার কাজে বাহিরে ছিলেন লে জানা গেছে।

ওই রাতে আনুমানিক একটার দিকে একই গ্রামের সিরাজুল ইসলামের পুত্র জামাল হোসেন (৩০), ইদ্রিস আলির পুত্র খাইরুল ইসলাম (৩০), ও অজ্ঞাত আরো দু’জন সহ মোট চারজন মিলে গৃহবধুকে মুখ বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষন করে।

ধর্ষনের পর তাকে মেরে ফেলার জন্যে গলায় চেপেও ধরেন। এসময় রাস্তা দিয়ে যাতায়াতরত এক পথিকের টর্চ লাইটের আলো দেখে ধর্ষণকারীরা নৌকাযোগে পালিয়ে যায়।

পরে গৃহবধুর ডাক চিৎকারে পথের মানুষটি এগিয়ে আসলে দেখতে পান গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধু কাতরাচ্ছেন। পরে গৃহবধুকে আহত অবস্থায় হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

এদিকে বুধবার দুপুরে ধর্ষণের ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যে স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য আরফান আলী ও মোস্তফা কামাল, মন্নাছ আলীর পুত্র মোঃ বাচ্চু মিয়া, ফুলমামুদের পুত্র মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় মৌলবি বাজারে সালিশ বসান। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সালিশ পন্ড হয়ে যায়।

এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ধর্ষিতার ৪ বৎসরের শিশু মোবাইদ বলেন, “আমার আম্মারে ঐ দিন রাতে ৪ জন লোক আয়সা অনেক নির্যাতন করছে। আমার আম্মা ও আমি চিক্কার করছি। কেই আয়ছে না। আমার আম্মারে তারা মাইরাল বার চাইছিন।”

স্থানীয় এক বৃদ্ধা বলেন, বাচ্চু, আরফান মেম্বার ও মফিজুলের নির্দেশে ধর্ষনের ঘটনাটি ধামাচাপা দিবার চেষ্টা চলছিল। ধর্ষনকারীরা চারজন ধর্ষনের কথা স্বীকার করেছে।

তিনি আরও বলেন, ধর্ষনকারী জামালের সাথে এমদাদুল, খাইরুল ও ফরহাদ এই তিনজন জড়িত ছিলো বলে জামাল তাকে জানিয়েছেন। এবিষয়ে ধর্ষিতার স্বামী বাবুল মিয়া বলেন, আমি মাছ মারার জন্যে বাহিরে গেছিলাম।

ঘটনার পর আমার মায়ের ফোন পেয়ে আমি বাড়িতে চলে আসি। এসময় আমার স্ত্রীকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ধর্ষনের সাথে উল্লেখিত ওই চারজন জড়িত ছিলো বলে জানান তিনি।

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার বিকালে সাংবাদিকদের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। তাদের নিরাপত্তার জন্য সন্ধ্যার পর পুলিশ পাঠিয়ে ভিকটিম ও তার স্বামীকে থানায় আনা হয়েছে। তাদের সাথে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তাবে ধর্ষনকারীরা পলাতক রয়েছে বলে জানান ওসি।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন