‘ভোট চাইতে আসুক মজা দেখাব’

  26-07-2017 08:52PM

পিএনএস ডেস্ক : ‘রাস্তায় ও ঘরের ভেতর পানি থাকায় কোথায়ও যেতে পারছি না। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। ঘরে-বাইরে এতো পানি তবুও এমপি-চেয়ারম্যানরা কোনো খোঁজখবর নিচ্ছে না। ভোট চাওয়ার সময় ঠিকই ভোট চাইতে আসে কিন্তু তারা মানুষের কষ্টের সময় পাশে দাঁড়ায় না। বৃষ্টির পানিতে মানুষ হাবুডুবু খাচ্ছে তারা কী জানে না? ভোটের সময় ভোট চাইতে আসুক মজা দেখাব।’

টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ থাকা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুরপাড় এলাকার জোবেদা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে কথাগুলো বলেন।

বুধবার দুপুরে ডিএনডি এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে জলাবদ্ধতার দৃশ্য দেখতে গিয়ে লালপুর পৌষাপুকুরপাড় এলাকার জোবেদা বেগমের সঙ্গে কথা হয়।

তিনি তার কষ্টের ছবি তুলতে নিষেধ করে বলেন, ‘বাবা রে তোমরা পানি ভেঙে আমাদের কষ্টের কথা জানতে এসেছ, জেনে যাও ছবি তোলার দরকার না। ঘরের ভেতর পানি, রাস্তায় পানি, যেদিকে তাকাই শুধু পানি আর পানি। একটু বৃষ্টি হলে রাস্তায় হাঁটু ও কোমর পানি হয়ে যায়। পানি ভেঙে কর্মজীবী নারী-পুরুষদের কষ্ট করে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। মানুষের এতো কষ্ট দেখেও টনক নড়ছে না এমপি-চেয়ারম্যানদের।’

একই কথা বললেন লালপুর এলাকার মুদি দোকানি ইসমাইল বেপারী। তার দোকানে পানি ঢুকে বিভিন্ন মালামাল ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, কি আর বলব- পানিতে ভাসছি। পেটের দায়ে দোকান খুলে মাচা বেঁধে বসে আছি। মানুষ পানি ভেঙে বাজার করতে আসতে চায় না। প্রতিদিন ৮-১০ হাজার টাকা বেচাকেনা করতাম। এখন পর্যন্ত দুই হাজার টাকাও বেচতে পারিনি। এভাবে যদি কয়েকদিন চলতে থাকে তাহলে মরণ হবে।


কুতুবপুরের রসুলপুর এলাকার ইব্রাহিম খলিল জানান, আমরা ডিএনডিবাসী বৃষ্টি হলেই এমন দশায় পড়ি। আপনারা লিখবেন আর এমপি-চেয়ারম্যানরা চোখ বুজে থাকবেন। আমাদের কোনো ফয়দা হবে না। আমাদের কষ্টের কথা না লিখে বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসিয়ে দেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকায় বন্যা না আসতেই বন্যার মতো পরিস্থিতি হয়ে গেছে। জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ডিএনডিবাসীর সমস্যা সমাধান হবে। সেনাবাহিনী কাজ করবে। জনপ্রতিনিধিরা সেনাবাহিনীর নাম বলে মুলা ঝুলিয়ে রেখেছে।

এলাকাবাসী জানান, টানা বৃষ্টিতে ফতুল্লার লালপুর, ইসদাইর, গাবতলী, সস্তাপুর, কায়েমপুর, তল্লা, লালখাঁ, রামারবাগ, তক্কার মাঠ, পিলকুনি, রসুলপুর, আদর্শনগর, দৌলপুর, আমতলা, মুন্সিবাগ, ভুইগড় ও মাহমুদপুরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া শহরের কলেজ রোড, দেওভোগ, কাশিপুর, এনায়েতনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ জানান, শিল্প-কলকারখানা ও বসতবাড়ির ময়লা ড্রেনে জমে থাকায় বৃষ্টি হলে ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। শিগগিরই ডিএনডিবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন