বরিশালে স্বামীকে খুঁজতে এসে নির্যাতনের শিকার স্ত্রী

  27-07-2017 12:11PM

পিএনএস, বরিশাল: বিয়ের পর স্বামীকে বরিশালে খুঁজতে এসে নির্যাতনের শিকার হলেন রোজিনা আক্তার (২২) নামে এক নারী। বুধবার সকালে উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতিতা রোজিনা মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৈতরা গ্রামের জয়নাল মৃধার মেয়ে।

হাসপাতালে শয্যাশয়ী রোজিনা জানায়, কাজের জন্যে ঢাকায় থাকার সুবাধে তার সঙ্গে পরিচয় হয় উজিরপুরের ওটরা ইউনিয়নের কেশবকাঠী গ্রামের এনায়েত হোসেনের ছেলে মাইনুল বাদশার। মাইনুলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে গত ৮ মে তাকে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেন মাইনুল। বিয়ের পর তারা দুইজনে ঢাকার ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। গত দশদিন আগে মাইনুল পালিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন।

রোজিনা আরো জানান, তার বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে স্বামী মাইনুলকে খুঁজতে মঙ্গলবার বিকেলে গ্রামের বাড়িতে উপস্থিত হলে জানতে পারেন মাইনুলের প্রথম স্ত্রী রয়েছে। এ সময় মাইনুলের বাবা-মা-ফুফু ও মাইনুলের প্রথম স্ত্রী রিনা বেগম নির্যাতন শুরু করেন। এ সময় তার হাঁটু থেঁতলে দেয় ও চুল ধরে টানাটানি করে এবং ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়ে হাতে শলা ঢুকিয়ে দেয়। একপর্যায়ে মাইনুলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায়ের চেষ্টা করে তারা।

আহত রোজি আরো জানান, বুধবার সকালে স্থানীয়দের কাছে জানতে পারেন মাইনুল তার প্রথম শ্বশুর বাড়ি শিকারপুরে আত্মগোপন করেছেন। পরবর্তীতে তার বৃদ্ধ পিতাকে নিয়ে শিকারপুরের মাইনুলের প্রথম শ্বশুর বাড়িতে গেলে সেখানেও তাকে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেনকে জানালে তিনি বিচার করতে পারবেন না বলে ফিরিয়ে দেন।

পরবর্তীতে কল্লাণ কুমার চন্দ্র নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক গুরুতর আহত রোজিনাকে বুধবার বেলা ১১টায় ইচলাদী বাসস্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

উজিরপুরের স্থানীয় সাংবাদিক কল্লান কুমার চন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পূর্বপশ্চিমকে জানান, সকালে পত্রিকা কেনার উদ্দেশ্যে ইচলাদি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি একজন নারী কান্নাকাটি করছে এবং উৎসুক জনতা ভিড় করে আছে। এসময় তাকে কান্নাকাটির কারণ জিজ্ঞেস করলে তার সতীন ও শ্বশুর-শাশুড়ি দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানায়। তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পেয়ে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেই এবং উজিরপুর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।

তিনি আরো বলেন, মেয়েটিকে থানায় নিয়ে গেলে কর্তব্যরত সেকেন্ড অফিসার এসআই মনির জানায় মেয়েটি ও তার বাবা ঘটনার আগের দিন একটি জিডি করেছেন এবং ওই জিডির কপি তাদের কাছে রয়েছে।

এ ব্যাপারে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম সরোয়ার জানান, মি. কল্লান নামে এক সাংবাদিক আমাকে ফোন দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার বিষয় সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। শুনেছি তারাই আবার বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করছেন। তবে এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন