আ.লীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ২৫

  11-08-2017 09:42PM

পিএনএস ডেস্ক : শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবলীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় আরও অন্তত ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নিহত যুবলীগ নেতার নাম ইকবাল হোসেন (২৫)। তিনি রাজনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি। সংঘর্ষে আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির গাজী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দাদন মীরবহরের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইউপি নির্বাচন নিয়ে আগে থেকেই তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। গত ইউপি নির্বাচনের পর ওই দুপক্ষের মধ্যে অন্তত ১০ বার সংঘর্ষ হয়েছে। এ নিয়ে নড়িয়া থানায় মামলাও রয়েছে।

রাজনগর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাকির গাজী। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দাদন মীরবহর ও সাবেক চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মালতের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্থানীয় রাজনীতিতে জাকির গাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমাইল হক ও দাদন মীরবহর স্থানীয় সাংসদ শওকত আলীর সমর্থক।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুরে জাকির গাজীর সমর্থকদের মারধর করে দাদন মীরবহরের সমর্থকেরা। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাকির গাজীর সমর্থকেরা দাদন মীরবহরের আন্দারমানিক বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে ও বোমা হামলা চালায়। তখন দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সংঘর্ষের সময় ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি ইকবাল হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ইকবালের বাড়ি পাশের রাজনগর মালতকান্দি গ্রামে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আমিন ফকিরের ছেলে।

ইকবালের বাবা আমিন ফকির বলেন, ‘আমরা বংশ পরম্পরায় আওয়ামী লীগ করি। এখন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে হায়েনারা আমাদের রক্ত পান করছে। অন্যায়ভাবে জাকির গাজীর সমর্থকেরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির গাজী বলেন, ‘দাদন মীরবহর ও আলিমুজ্জামান মালতের সমর্থকেরা আমার তিনজন কর্মীকে কুপিয়ে আহত করেছে। আমার সমর্থকদের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে। তখন সংঘর্ষ হয়েছে। ইকবাল কার হামলায় মারা গেছে তা আমার জানা নেই।’

দাদন মীরবহর বলেন, ‘জাকির গাজী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের ওপর হামলা-মামলা করছে। তাঁর সঙ্গে জামায়াত-বিএনপির লোকজন হাত মিলিয়েছে। তাঁদের নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এলাকা ছাড়া করার চেষ্টা করছে। তিনি আমার বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালিয়েছে। তাঁদের ছোড়া গুলিতে আমার এক কর্মী নিহত ও ২৫ কর্মী আহত হয়েছে।’

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম বলেন, নিহত ইকবালের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির চিহ্ন রয়েছে। গুলির কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের প্রাথমিক ধারণা। আরও ২৫ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এহসান শাহ বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন