চুরির অপবাদে গামছা বেঁধে মাদ্রাসাছাত্রীকে দুই শিক্ষিকার নির্যাতন

  11-08-2017 09:55PM

পিএনএস ডেস্ক :মাত্র ১শ’ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসাছাত্রী কামরুন নাহার সুমাইয়ার (৮) মুখে গামছা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের খাদিজাতুল কোবরা (রা.) মহিলা কওমী মাদ্রাসার তিন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। শুক্রবার নির্যাতিতা ছাত্রীকে মাদ্রাসার আবাসিক হল থেকে উদ্ধার করে তার মা তাকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

ছাত্রীর মা উপজেলার পশ্চিম শাওড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. কামাল হোসেন বেপারীর স্ত্রী রেনু বেগম জানান, সাড়ে তিন বছর আগে তার একমাত্র শিশু কন্যা কামরুন নাহার সুমাইয়াকে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। মাসিক তিন হাজার টাকা চুক্তিতে মাদ্রাসার আবাসিক হলে রাখা হয় তাকে।

রেনু বেগমের অভিযোগ, শুক্রবার সকালে মাদ্রাসার এক ছাত্রী গোপনে তাকে মুঠোফোনে জানায় মাদ্রাসার তিন নারী শিক্ষক সুমাইয়াকে বৃহস্পতিবার রাতে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। খবর পেয়ে তিনি শুক্রবার সকালে মাদ্রাসার আবাসিক হল থেকে গুরুতর আহতাবস্থায় তার শিশু সুমাইয়াকে উদ্ধার করেন। এ সময় মাদ্রাসা সুপার তাকে (রেনু) জানিয়েছে, অপর এক ছাত্রীর ১শ’ টাকা চুরির ঘটনায় সুমাইয়াকে শাসন করা হয়েছে। তবে কোন ছাত্রীর টাকা চুরি হয়েছে তা বলতে পারেননি তিনি।

নির্যাতিত মেয়ের বরাত দিয়ে রেনু বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টটার দিকে ১শ’ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসা সুপার এবং অপর দুই শিক্ষক সুমাইয়ার মুখে গামছা বাঁধে। এরপর সুপারের নির্দেশে এক শিক্ষক গুনে গুনে তার মেয়েকে ৬০টি ও বাংলা শিক্ষক ১০০টি বেত্রাঘাত করে। এতে তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরলেও তাকে রাতের খাবার দেয়া হয়নি। খবর পেয়ে সুমাইয়াকে উদ্ধার করে গুরুতর অবস্থায় গৌরনদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, মাদ্রাসা সুপার তার স্ত্রী। টাকা চুরির ঘটনায় ২ শিক্ষিকা রোকসানা ও হাফিজা ছাত্রী সুমাইয়াকে বেত্রাঘাত করায় তাদের মাদ্রাসা থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গৌরনদী মডেল থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনি লোকমুখে ছাত্রী নির্যাতনের কথা শুনেছেন। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে পুলিশ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন