বরিশাল সদর উপজেলায় একটি সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে হাজার শিক্ষার্থী

  22-08-2017 09:56PM

পিএনএস, বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের কর্নকাঠী ও চরকরনজির গ্রামের একটি ব্রিজটি প্রায় দশ বছর আগে ভয়াবহ সিডরে ভেঙ্গে গিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মেরামতের বা নতুন করে নির্মানের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ার কারনে চরম দুর্ভোগে রয়েছে ইউনিয়নের ২ গ্রামের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, ব্রিজের অভাবে কয়েক মিনিটের পথ দীর্ঘক্ষণ ঘুরে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। যানবাহনের অভাবে ওই এলাকার অসুস্থ রোগীদের সময়মত হাসপাতালে নেয়া যাচ্ছে না। সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিতে না পারায় চিকিৎসার অভাবে অনেক রোগীর মৃত্যুও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট ছোট স্কুলের শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের উপর দিয়ে পাড় হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীরা সাকো পাড়াপাড় করার সময় পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও পাট মন্ত্রি আঃ রহমান বিশ্বাষ যখন বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, সেই সময় ৭ নং চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহ্জাহান ভূঁইয়া মরা নদী নামে পরিচিত এই নদীটির উপরে ও তার পার্শ্ববর্তী খালের উপরে এ ব্রিজটি নির্মাণ করেছিলেন। এতে ইউনিয়নের দুই গ্রামের মানুষ সড়ক পথে যাতায়াতে সুবিধা হয়। কিন্তু ১ বছর পূর্বে ব্রিজটি আকস্মিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা বাদল আকন জানায়,আমার মেয়ে স্কুল থেকে আসার পথে ঐই সাকো থেকে পরে গিয়ে আহত হওয়ার পরে তার স্কুলে যাওয়া আসা বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু বাদল আকনই নয়,আরো অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের জীবনের ঝুঁকি থাকায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের কর্নকাঠী ও চরকরনজির গ্রামে দুইটির মানুষ এ ব্রিজের অভাবে সড়ক পথে যাতায়াত করতে পারছে না। সময়মত স্কুল ও কলেজে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। যে কারণে সমস্যায় পড়ে অনেকেরই লেখাপড়া বিঘ্ন ঘটছে। ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম খান বলেন, অনেক বছর থেকেই এই ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ন ছিলো আমরা সরকারের কাছে নির্মানের জন্য আবেদন করেছিলাম কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকার কারনে নির্মান করা সম্ভব হচ্ছেনা।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ কালে বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক গোলাম নবী খান সাগর বলেন, এই ব্রিজটির কারনে অনেক দিন থেকেই শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার সাধারন জনগন চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ কারনে বর্তমান সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি যাতে করে অতি দ্রুত এই ব্রিজটি নির্মান করা হয়। চরকাউয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্বে থাকা ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, এই মূহুর্তে চেয়ারম্যান হজ্বে রয়েছেন। তবে আমরা বিষটির সম্পর্কে অবগত আছি। জনগের র্দূদশা লাঘবে খুব শিগ্রই প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

এবিষয় চরকরনজি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও এস.এস.সি ভোকেশনালের প্রধান শিক্ষক রমেশ চন্দ্র দাস বলেন, এই ব্রিজটির কারনে আমার প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থী অনেকাংশে কমে গেছে। ইতি পূর্বে এটি নির্মানের জন্য মানবন্ধন সহ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছিরাম কিন্তু তিনি নির্মানের আশ্বাস দিলেও র্দীঘ দিন পরেও ব্রিজটি নির্মান না হওয়ায় এলাকাবাসী চরম হতাশা গ্রস্ত হয়ে পরেছে।

উপজেলা নিবার্হী প্রকৌশলী সৈয়দ মাইনুল মাহমুদের দপ্তরে সাক্ষাতের জন্য গেলে তিনি ঢাকা থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তবে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোনটি কেটে দেয়। বরিশাল সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, গত বছর বিষয়টি অবগত হয়ে সাময়িক ভাবে চলাচলের জন্য ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে ছিলাম। নতুন করে বরাদ্দ না আসায় সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল





@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন