রামগতিতে ঘূর্ণিঝড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পাঁচশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

  22-10-2017 09:09PM

পিএনএস, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতিতে ঘূর্ণিঝড়ে ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৫টি মসজিদ, ৪টি পল্ট্রি খামার, অসংখ্য মৎস্য খামার সহ প্রায় পাঁচশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উপড়ে পড়েছে হাজারো গাছপালা।

গতকাল (শনিবার) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রামগতি উপজেলার মেঘনার উপকূলীয় বড়খেরী, চরগাজী, চর আবদুল্যাহ, চর আলগী, চর রমিজ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এ ঝড় বয়ে গেছে। খবর পেয়ে রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে ঝড়ের শুরু হওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে উপজেলার বিছিন্ন ইউনিয়ন চর আবদুল্যাহ থেকে প্রবল জোয়ারের পানিতে ভেসে আসে ১১টি মহিষ। বর্তমানে বড়খেরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছে ওই মহিষগুলো।

বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ ফেরদৌস, চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম সুমন ঝড়ে প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতি হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। তারা আরও জানান, ঝড়ে ইউনিয়নের কয়েক শ’ একর ফসলী জমি নষ্ট হয়ে যায়। এতে কয়েক’শ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো- রামগতি আছিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রামগতি বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রঘুনাথপুর পল্লীমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বড়খেরী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল মতিন বলেন, সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া ঝড়ে তার বসতঘরসহ ওই এলাকার অনেক পরিবারের বসতঘর বিধ্বস্ত হয়।

চরলক্ষ্মী এলাকার মো: জনি জানান, তিনি প্রায় চার একর জমিতে মৎস্য চাষ করেছেন। ঝড়ের প্রবল বাতাসে ও জোয়ারের পানিতে তার মৎস্য খামার সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরগাজী ইউনিয়নের সুরাইয়া বেগম নামের এক নারী ঘরচাপা পড়ে আহত হয়েছেন।

রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, আমি সরেজমিনে বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নে গিয়েছি, ঘুর্ণিঝড়ে অন্তত দুই ইউনিয়নের দুই শতাধিক ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আপদকালীন সময়ে বড়খেরী ও চর আলগী ইউনিয়নে দুটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঝড়ে মৎস্য খামার, পল্ট্রি খামার ও ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সবমিলিয়ে প্রায় পাঁচশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এবিষয়ে রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজগর আলী বলেন, মেঘনার উপকূলীয় অঞ্চল চর আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চরগাজী, চর আবদুল্যাহ, চর আলগী, চর রমিজ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এ ঝড় বয়ে গেছে। ঝড়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা আমান উল্ল্যা জানান, শনিবার সকালে রামগতি উপজলার উপর দিয়ে ঘুর্ণিঝড় বয়ে যায়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য তদারকি চলছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন