নবীনগরে আ.লীগের নেত্রীকে হত্যা, আসামীদের গ্রেপ্তারের নিদের্শ স্থানীয় এমপি

  24-11-2017 06:56PM

পিএনএস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : জীবন করিলে গঠন, মরিলে হাসিবে তুমি, কাদিবে ভুবন এই শ্লোগান দেওয়ার ২ ঘন্টা পরই দুবৃত্তদের গুলিতে হত্যা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক স্বপ্না আক্তার (৪০)।

তিনি উপজেলা চারপাড়া গ্রামের মৃত লিল মিয়ার মেয়ে ও পাশ্ববর্তী মুরাদনগরের গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি গত বুধবার বিকালে উপজেলার সাতমোড়া ইউনিয়নের দশমোজা বাজারে ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীগের সম্মেলনে এই বক্তব্য রাখেন।

এলাকাবাসি ও দলীয় সুত্রে জানা যায়, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ওই সম্মেলন শেষে নিজ বাড়ি উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের চারপাড়া গ্রামে যাওয়ার সময় গত বুধবার রাত প্রায় ৯ টার দিকে নবীনগর-কোম্পানিগঞ্জ সড়কের চারপাড়া ব্রিজের নিকট দুবৃত্তরা স্বপ্না আক্তারের মাথায় গুলি করে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গত বৃহষ্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে প্রেরণ করেন।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার নিহতের ভাই মো. আমীর হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা করে। পুলিশ মো.জাহাঙ্গীর নামে এক সিএনজি ড্রাইভারকে আটক করে। পূর্ব শুক্রতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে বলে এলাবাসি জানান।

এ দিকে বিক্ষোব্দ জনতা নিহতের এলাকায় গত বৃহষ্পতিবার সকালে এই ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেন।

উপজেলা আ.লীগের সভাপতি স্থানীয় সাংসদ ফয়জুর রহমান বাদল, জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান (পিপিএম),উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালেহীন তানভীর গাজী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিত্ত রঞ্জন পাল,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এমগ হালিম, ঢাকা মহানগর(দঃ)আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামালসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ গত বৃহষ্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। বাদ আছর জিনদপুর ইউনিয়নের বড় বাঙ্গরা শাহী ঈদগাহ মাঠে বিশাল নামাজে জানাজা শেষে চারপাড়া গ্রামে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
স্বপ্না পারিবারিকভাবে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তার পিতা মৃত লিল মিয়া ওয়ার্ড আওয়ামী কৃষকলীগের সভাপতি ছিলেন।রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া স্বপ্না আক্তার তার বাবার হাতধরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। খুব অল্প সময়ে রাজনীতিতে সাংগঠনিক মেধার পরিচয় দিয়ে ২০০১ সালে উপজেলা আওয়ামীলীগের মহিলা সম্পাদিকা হন।

২০১৪ সালে তিনি আবারও উপজেলা আওয়ামীলীগের মহিলা সম্পাদিকা হন। ২০০৩ সাল নবীনগর পাশ্ববর্তী মুরাদনগর উপজেলার নগরপার গ্রামের ব্যবসায়ী মো. গিয়াস উদ্দিনের সাথে বিয়ে হয়। তাদের সুখের সংসারে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তার নাম ইফরান উদ্দিন জয়। সে লাউরফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্র । নিহতের ভাই আমীর হোসেন জানান, তার বোনকে এলাকার মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে গুলি করে হত্যা করেছে বলে তাদের বিচার দাবী করেন।

পুত্র ইফরান উদ্দিন জয় বলেন, আমার আম্মার রাজনীতি করাই কি অপরাধ। আমাকে যারা এতিম করেছেন তাদের ফাসি চাই।

ইন্সপেক্টর(তদন্ত)নাজির আহম্মেদ বলেন, নিহতের ভাই ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এটি পূর্ব শুত্রুতার জের কি না ,এর বাহিরেও অন্য কোন বিষয় আছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় গাড়ী চালক জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমপি ফয়জুর রহমান বাদল এ ঘটনা তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে প্রকৃত আসামীদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। খুনি যেই হউক দ্রুত তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন