স্ত্রী হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা!

  15-12-2017 03:16AM

পিএনএস ডেস্ক: রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় স্ত্রী রুনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ভ্যানচালক স্বামী মান্নান আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মান্নান-রুনা দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে রিশন আহম্মেদ নাটোরের লালপুরে নানার বাড়িতে থেকে মঞ্জিলপুকুর কলেজে পড়েন। ছোট ছেলে সাব্বির হোসেন বাঘার কালিদাসখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করেছে এবং দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের ভ্যানচালক আবদুল মান্নান (৪৮) ও তার স্ত্রী কাজলী খাতুন রুনা (৪২) বুধবার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে রুনার চিৎকারে শুনে পাশের ঘরের লোকজন গিয়ে দেখে তিনি অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। তখন স্বামী মান্নান ঘরে ছিল না। তাৎক্ষণিকভাবে রুনাকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, ময়নাতদন্ত ছাড়া তা জানা সম্ভব নয় বলে জানান চিকিৎসক।এরপরই বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশের লিচুবাগান থেকে মান্নানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এব্যাপারে ছোট ছেলে সাব্বির হোসেন বলে, ‘বুধবার গভীর রাতে মায়ের চিৎকার শুনে দাদি আফরোজা বেগম ও আমি এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি মা অজ্ঞান হয়ে বিছানায় পড়ে আছে।’

এব্যাপারে বড় ছেলে রিশন আহম্মেদ বলেন, ‘দাদা রয়েজ উদ্দিন ৩৮ দিন আগে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। দাদার চেহলামের অনুষ্ঠান আগামী শুক্রবার। এরই মধ্যে তিন শতাধিক মানুষকে দাওয়াত করা হয়েছে। কিন্তু বাবার হাতে টাকা ছিল না। কীভাবে ওই অনুষ্ঠান পার করবে, তা নিয়ে বুধবার রাতে বাবা-মায়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে বাবা মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে থাকতে পারে। পরে বাবা লিচুগাছে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’

বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জানান, কাজলী খাতুন রুনাকে তার স্বজনরা বুধবার গভীর রাতে হাসপাতালে এনেছিলেন। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। এরপরও তার স্বজনদের অনুরোধে ইসিজি করে রুনার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান রেজা বলেন, মান্নান-রুনা দম্পতির মৃত্যু অবশ্যই অস্বাভাবিক। তবে নিহতদের ছেলে দাবি করেছে, মাকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার বাবা আত্মহত্যা করেছে।

তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদেরও ধারণা, স্ত্রীকে হত্যার পরই স্বামী লিচুগাছের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এরপরও ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিহতদের মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন