জুড়িতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধা নিহত

  17-01-2018 09:21PM

পিএনএস ডেস্ক : মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলায় চা-শ্রমিক ও স্থানীয়দের (বাঙ্গালী) মধ্যে সংঘর্ষে এক মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার এ ঘটনা ঘটে। এতে পথচারীসহ উভয় পক্ষের ২০/২৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ৩ জনকে পাঠানো হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের জামকান্দি গ্রামের জনৈক জমির মিয়ার সাথে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় স্থানীয় সোনারূপা চা বাগানের শ্রমিক স্বপনের ছেলে সঞ্জুর একটি ঘটনার জের ধরে বিরোধ হয়।

এই সময় সঞ্জু লাইট (টর্চ লাইট) দিয়ে জমিরের উপর হামলা করলে তার মাথা ফেটে যায়। স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জুড়ীতে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। এদিকে আজ সকালে জমিরের দুই আত্মীয় সোনারতন নামক এক শ্রমিকের উপর হামলা করলে বাগানে পাগলা ঘন্টা বাজিয়ে ৪/৫শত শ্রমিক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে স্থানীয় (বাঙ্গালী) উপর হামলা চালায় ।

এদিকে জামকান্দি মসজিদের মাইকে হামলার ঘটনাটি জানানো হলে এলাকার লোকজন জড়ো হতে থাকেন। এসময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষের সময় জামকান্দি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী (৬৫), তার পুত্র শাহিন (৩৫), লিমন (১৮), হেলাল মিয়া (৪০), কাশেম মিয়া (৪০) ও আব্দুল আলী (৪০)সহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০/২৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে জুড়ী থানার পুলিশ এবং অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে কুলাউড়া সার্কেলের এএসপি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। আহতরা জুড়ী, কুলাউড়া ও সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। গুরুত্বর আহতাবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী, শাহিন ও লিমনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী মারা যান। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ঘটনার পরপরই জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ভাইস চেয়ারম্যানসহ, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এলাকায় অবস্থান করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন।

মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ারুল হক (ক্রাইম) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে বলেছেন প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে দুইজন লোকের ব্যক্তিগত বিরোধ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। আর বাগান ম্যানেজার বুঝতে পারে নাই তাই পাগলা ঘণ্টি বাজিয়েছেন। সংঘর্ষে স্থানীয় (বাঙ্গালী) এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।

জুড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অসিম চন্দ্র বনিক মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী (৬৫) নিহতের ঘটনার সত্যতা জানিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিকে বলেন, ঘটনার বর্ণনা দু ধরনের পাওয়া যাচ্ছে চা শ্রমিকরা বলছেন এক ধরনের আর বাঙ্গালীরা (স্থানীয়) বলছেন আরেক ধরনের। এর পিছনে জমি সংক্রান্ত কোন বিষয়ও থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন