প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে মহাদেবপুরে এগিয়ে চলেছে পাঁচ জয়িতা নারী

  23-03-2018 04:38PM

পিএনএস, নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুরে নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে চলেছে পাঁচ জয়িতা নারী। জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক কার্যক্রম আওতায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদফতর বাস্তবায়ন করছে। নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের আগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে হলে নারীর সাফল্য, নারীর জীবন সংগ্রাম, নারীর উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ধারা অব্যাহত রাখতে মহাদেবপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন হতে ৫টি ক্যাটাগরিতে ৫জন জয়িতা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আমিনা খাতুন জানান, ‘অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জন কারী নারী’ নাটশাল গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী মোসা. লতিফা। পিতা ও স্বামির সয়-সম্পত্তি না থাকায় অতিকষ্টে দারিদ্রের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাজারে একটি চায়ের দোকানকে হাতিয়ার করে এক ছেলে ও চার মেয়ে সন্তানকে মানুষ করেন । এখন সে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি নারী।

‘শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী’ উপজেলা সদরের ঘোষপাড়া এলাকার রবি চন্দ্র পাহানের মেয়ে শিখা পাহান। পড়াশুনা করতে গিয়ে তাকে পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয়েছে। এক সময় লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হলে সে অনেক কষ্টে টিউশনি করে এমবিবিএস পাস করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার হিসেবে চাকরি করছেন এবং বর্তমানে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

‘সফল জননী' পীড়া গ্রামের মৃত নিমাই সরকারের স্ত্রী গীতা সরকার। অভাবের সংসারে অতি কষ্টে উপার্জন করে ৫টি মেয়ে সন্তানের মধ্যে ২টিকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। ৫ মেয়ে মধ্যে ৩ মেয়েকে সু-পাত্রের সাথে বিয়ে দিয়েছেন। ‘নির্যাতনের বিভাষিকা মুছে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী' চক-কন্দকপুর গ্রামের মৃত জসীম উদ্দীনের মেয়ে স্বামী পরিত্যাক্তা মোসা. মোর্শেদা। স্বামী তালাক দিয়ে অন্যাত্র বিয়ে করে ঘর-সংসার করছেন। মোর্শেদা নিরুপায় হয়ে এক সন্তানকে নিয়ে অন্যের বাড়ি কাজ করে জীবন চালিয়ে জমি কিনে নিজের বাড়ি বানিয়ে সুখে দিন কাটাচ্ছেন।

‘সমাজ উন্নয়নে অসাম্যন্য আবদান রেখেছেন যে নারী' লক্ষীপুর গ্রামের মো. খলিল সরকারের মেয়ে শারমিন সরকার । বাল্য বিয়ে, যৌতুক ও মাদকের কুফল সর্ম্পকে এলাকার জনগনকে সচেতন করেন। বর্তমানে তিনি ব্র্যাক কর্তৃক পরিচালিত পাঠদান কেন্দ্রে পাঠ দান করে এবং ছোট বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে উপার্জন করেন। বর্তমনের সে সচ্ছলতার সঙ্গে মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন এবং পিতার মাতার পরিবারে সুখ শান্তিতে বসবাস করছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোবারক হোসেন পারভেজ জানান, এভাবেই ৫জন নারী শ্রেষ্ঠ জয়িতা গ্রাম থেকে নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সামনে এগিয়ে চলেছে। তাদের সংগ্রাম অন্যান্য নারীদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এবং সামনে পথ চলার প্রেরণা যোগাবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন