সেতুর অভাবে সাত গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে

  24-03-2018 09:12PM

পিএনএস, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ধবলগুড়িতে একটি সেতুর অভাবে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাত গ্রামের ছয় হাজার মানুষকে। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এতে বেশি করে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় ছয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ বিজিবি সদসদের। শুধু তাই নয় ওই সাঁকো ভেঙে শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী পানিতে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় ভুক্তভোগীরা।

উপজেলার সীমান্তবর্তী জুগিটারী গ্রামের ধরলা নদীর ছড়া কালটুর কুড়ার উপর একটি বেসরকারী সংস্থা সেতু নির্মান করে দিলেও তা ১৯৮৮ বন্যায় ভেঙ্গে যায়। তারপর থেকে ওই স্থানে প্রতিবছর বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন স্থানীয়রা। তবে ওই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় সর্বস্তরের মানুষদের। দীর্ঘ সময় ধরে এভাবে চলতে থাকলেও কোন সেতুর ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। একটি সেতুই পারে ওই এলাকার ছয় হাজার মানুষের ভোগান্তি দুর করতে।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আরডিআরএস বাংলাদেশ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা ১৯৮৫ সালে ওই গ্রামের ধরলা নদীর ছড়া কালটুর কুড়ার উপর একটি সেতু নির্মান করে। যার দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং প্রস্থ ১২ ফুট ছিলো। কিন্তু ১৯৮৮ সালের বন্যায় সেতুটি সম্পুর্ন বিধ্বস্ত হয়।

সরে জমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ছয় ও সাত নম্বর ওয়ার্ডের বিজিবির ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত ওই সেতু বিহীন খালটি জুগিটারীসহ সাতটি গ্রামকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। ওই সাত গ্রামের মানুষ ঝুকিপুর্ন সাকোঁটি পার হয়েই পাটগ্রাম উপজেলা সদর জেলা শহর এবং ধবলগুড়ি বাজারে যায়। সেতু না থাকায় জোংড়া ইউনিয়নের কাজিপাড়া, জুগিটারী, চর্তুরবাড়ি, মুসলিমপাড়া, ভাটিয়াপাড়া, বিজিবি ক্যাম্প, ডাঙ্গাপাড়া ও শালবন ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তবর্তী গ্রামসহ সাতটি গ্রামের মানুষদের রোগী শহরে নিতে ভীষণ ভোগান্তী পোহাতে হয়। এছাড়া প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার উপজেলার রসুলগঞ্জ বাজার হাটবার থাকে। সেখানেও কৃষি পন্য নিয়ে যেতে কৃষকদের কষ্টের শেষ থাকে না।

এদিকে ওই এলাকার ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীকে ঝুঁকিপূর্ন সাঁকো ব্যবহার করে আসতে হয় পাটগ্রাম উপজেলার কলেজ ও বিদ্যালয়ে। তাছাড়াও ওই এলাকার তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ে রয়েছে।

জুগিটারী গ্রামের ভ্যান চালক বাবুল ও কৃষক বছির আলী জানান, দীর্ঘ দিন থেকে এখানে কোন সেতু নেই। সেই ৮৮ বন্যায় সেতু ভেঙ্গে যায়। তার পর বাশের সাকো তৈরী করে এই গ্রামের মানুষদের যাতায়াত করতে হয়। তবে এভাবে আর কতদিন? আমরা কৃষি পন্য হাট বাজারে নিয়ে যেতে পারি না। নিয়ে গেলেও খরচ বেশী হয়। আমাদের অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই সেতুটি হলে এই গ্রামসহ সাত গ্রামের মানুষের সমস্যার সমাধান হবে।

চর্তুরবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন . ইতিমধ্যে ওই সাঁকো পার হতে গিয়ে তাঁর বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক মোটরসাইকেলসহ পানিতে পড়ে ডুবে যায়। এরপর একজন নারী শিক্ষকসহ প্রায় দিনে শিক্ষার্থীরা পানিতে পড়ে বইসহ খাতাপত্র ভিজে যায়। বর্ষা এলেই ঝামেলা।

কলেজ ছাত্র মাসুদ জানায়, বর্ষার সময় এই গ্রামের অনেক ছেলে মেয়ে সেতু না থাকায় ঠিক ভাবে স্কুল ও কলেজে যেথে চায়না। সাঁকোটি তৈরী হলেও পরে পারাপারে ঝুকি হয়ে যায়।

জোংড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ আলী বলেন, সেতুটি নির্মাণের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। ইতিমধ্যেই স্থানীয় এলজিডির উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী আমাকে জানিয়েছেন এটির একটি প্রকল্প অর্ন্তভুক্তির জন্য এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলেই দ্রুত সেখানে সেতু ণির্মানের কথা বলেছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিডি)) পাটগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী আবু তৈয়ব মোঃ শামসুজ্জামান জানান, সেতুটির নির্মাণের জন্য বিশ^ ব্যাংকের প্রকল্প তালিকাঅর্ন্তভুক্তির করা হয়েছে। তবে তা একনেট পাশ হলেই নকশা প্রণয়ের কাজও করা হবে। এরপর বরাদ্দ এলেই সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন