মৌলভীবাজারে বন্যায় শহর প্লাবিত

  17-06-2018 02:15PM

পিএনএস ডেস্ক: মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শহরের অনেক এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। শহরতলী ও আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বারইকোনা এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়ায় মৌলভীবাজারের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসি মানুষ।

রবিবার সকাল থেকে পৌরসভাধীন বড়হাট এলাকায় মৌলভীবাজার-সিলেট রোডে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এর আগে, মৌলভীবাজার-রাজনগর-সিলেট রোডের রাজনগর উপজেলাধীন কদমহাটা এলাকায় বন্যার পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেলে এই রোডে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। এর ফলে সিলেটের সঙ্গে মৌলভীবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া জেলার রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

এদিকে দুপুরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের ভেতরে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য কুসুমভাগ এলাকায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে একটি বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তা দিতে দেয়নি। এলাকাবাসীর দাবি এখানে বাঁধ দিলে তারা আরও পানিতে তলিয়ে যাবে।

মৌলভীবাজার জেলা খাদ্য গুদামের ইনচার্জ মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, রাতে হঠাৎ বন্যা দেখা দেয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামের ভেতর প্রায় দুই হাজার মেট্রিকটন চাল ছিল, তা উদ্ধার করা যায়নি। কিছু চাউল উদ্ধার করা হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ায় এই চাল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে প্রশাসন।

মনুর বাঁধ ভাঙায় মৌলভীবাজার শহরের একাংশ প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ড ও তিনটি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্রমাগত পানি গড়াচ্ছে আশপাশের এলাকাগুলোতে। শহর ও শহরতলীর বাসাবাড়িতে তিন থেকে চার ফুট পানিতে ডুবে আছে।

এদিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম পাঁচটি আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করেছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো হলো মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরতলীর বড়হাট এলাকা, কুসুমবাগ, বড়কাপন, যোগীডর দুর্লভপুর, ঘরুয়া, বাহারমর্দন, সমপাশি, ভুজবল, খিদুর, দ্বারক, পাগুলিয়া এবং সদর উপজেলার হিলালপুর ও শেখেরগাঁও প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে, ভাঙনকবলিত এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের কর্মীরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে তৎপর রয়েছেন। তবে এসবের মধ্যেও আতঙ্কে বাসিন্দারা এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করছেন মালামাল নিয়ে। এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

মৌলভীবাজার পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী রণেদ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, তিন দিন ধরে বিপদসীমার ওপরে পানি থাকায় বাঁধ ফেটে বেশ বড় জায়গাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেনাবাহিনীসহ আমরা পানি আটকানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু বেগ বেশি হওয়ায় বস্তা ফেলেও তা ঠেকানো যায়নি। নৌকা দিয়ে পানিবন্দিদের উদ্ধার কাজ চলছে।
জেলার কুলাউড়া, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন