মাল্টা চাষ ও নার্সারী ব্যবসায় সফল আক্তারুল

  19-07-2018 03:30PM

পিএনএস, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : দেশের লবণাক্ত উপকূলীয় উপজেলা খুলনার পাইকগাছা। লবণাক্ত মাটি আর বৈরী আবহাওয়ায় মাল্টা চাষ ও নার্সারী করে সফলতার পাশাপাশি আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বীও হয়েছেন আক্তারুল গাজী ।

আক্তারুল নিজ গ্রাম উপজেলার গদাইপুর ইউপি ভবনের সামনে খুলনা-পাইকগাছা প্রধান সড়কের পাশে ৬ বছর আগে প্রায় ৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও উদ্ভিত জাতীয় বৃক্ষের নার্সারী গড়ে তুলেছেন। স্থানীয় অন্য নার্সারী মালিক আমিন দপ্তরী তার ব্যবসা বন্ধ করে দিলে সেখান থেকে কিছু মাল্টা চারা ক্রয় করে নিজের নার্সারীতে রোপণ করেন। গত ৪ বছর ধরে তিনি প্রায় এক বিঘা জমিতে নার্সারী বাগান ও এক বিঘা জমিতে চারা তৈরী করে আসছেন। তার বাগানে উৎপাদিত মাল্টা গত ২ বছর নার্সারীতে মানুষদেরকে বিনা মূল্যে খেতে দেন। চলতি মৌসুমেও প্রচুর মাল্টা ফল ধরেছে। নার্সারীর ব্যবসার পাশাপাশি লবণাক্ত মাটিতে মাল্টা বাগান তৈরী করে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন।

তিনি বার্তা সংস্থা পিএনএসকে জানান, তার এক বিঘা মাল্টাবাগানে প্রায় ৩শ' মাল্টা গাছ রয়েছে। তার নার্সারী থেকে ১ ফুট উঁচু একটি মাল্টার চারা ২৫ টাকা ও ৫/৬ ফুট চারা প্রায় ৫শ' থেকে ৬শ'টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আক্তারুলের শিল্পী নার্সারীর চারা গুণগতমান ভালো ও মূল্য তুলনামূলক কম হওয়ায় বিক্রি এবং ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। চলতি মৌসুমে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা মাল্টা ও প্রায় ৮ লক্ষ টাকা মাল্টার চারা বিক্রি হবার আশা করছেন তিনি। নিজ প্রচেষ্টায় এ সফলতা অর্জন করেছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তার দেখাদেখি স্থানীয় অনেক নার্সারী ব্যবসায়ী মাল্টা চারা উৎপাদন করছে। এমনকি অনেকে বাড়িতে মাল্টা চারা রোপণ করেছে। উৎপাদিত মাল্টা সুস্বাদু। তবে কাঁচাও খাওয়া যায়। মাল্টা ফলের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি অন্যান্য উপাদান রয়েছে। স্থানীয় বাজারে কেজি প্রতি দেড়শত টাকা থেকে ১৮০ টাকা দরে মাল্টা বিক্রি হচ্ছে। উপজেলায় প্রায় শতাধিক নার্সারী বাগান রয়েছে। স্থানীয় নার্সারী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সরকার বৃক্ষরোপণে অধিকগুরত্ব দিলেও চারা উৎপাদন ও নার্সারী তৈরীতে সরকারি ভাবে কোনো সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় না। সহজ শর্তে ঋণ সহ বিভিন্ন প্রজাতির উন্নতমানের ফলদ, বনজ বীজ ও চারা সরবরাহ করতে সরকারে কাছে দাবী জানান তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম বার্তা সংস্থা পিএনএসকে জানান, উপজেলার নার্সারী গুলোতে উৎপাদিত চারা গুলো মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় চারা রপ্তানি হচ্ছে। নার্সারী ব্যবসায়ী ও কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার উপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া সুবিধা রয়েছে। বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় উপজেলায় ব্যাপক হারে মাল্টা চারা রোপণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া উৎপাদিত মাল্টার স্বাদও ভালো। কৃষি অফিস থেকে গাছ লাগানোর জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন