পাইকগাছায় ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও নেতাকর্মীদের মারপিটের অভিযোগ

  23-07-2018 05:52PM

পিএনএস, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনা জেলা পরিষদের মহিলা সদস্য নাহার আক্তার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক ব্যবসায়ী, নেতাকর্মী ও শ্রমিকদের নিজস্ব বাহিনী দ্বারা মারপিট অব্যাহত রেখেছেন। এমন কি স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের হেহ প্রতিপন্নসহ মামলা মকদমা দিয়ে সর্বশান্ত করছেন। কারনে অকারনে সালিশী নামে সাধারণ মানুষকে মারপিটের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এতে করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ঠ হচ্ছে বলে স্থানীয় নেতা কর্মীদের অভিমত।

সর্বশেষ উপজেলার মাহমুদকাটী বাজারে নাহার কর্তৃক এক ব্যবসায়ীকে মারপিট করা হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার বাজারের ব্যবসায়ীরা অর্ধবেলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানান। এর আগে রবিবার বিকালে শ্রমিক ও দলীয় নেতাকর্মীদের মারপিটের অভিযোগে নাহার আক্তারের শাস্তির দাবীতে বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বব্যবসায়ীদের তথ্য মতে জানাযায়, রবিবার সন্ধ্যার পর মাহমুদকাটী বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী জগবন্ধু দাশের দোকান থেকে এক ব্যক্তি কিছু মালপাত্র চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরাপড়ে। চোরকে আটক করে দোকানদার একটা চড় দিয়ে ছেড়ে দেয়। কিন্তু মারের ঘটনা জানতে পেরে তার বাড়ির লোকজন এসে দোকানদারের উপর চড়াও হয়। বাজার কমিটির মাধ্যমে সালিশ করার সিদ্ধান্ত করে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বাঁধসাধে জেলা পরিষদ সদস্য নাহার আক্তার! তিনি শালিস করার জন্য তার অফিসে নিয়ে যায় এবং সালিশের জন্য ব্যসায়ীকে লোক মারফত ডেকে নিয়ে হরিঢালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ এ এস আই নজরুল ইসলাম কর্তৃক ব্যবসায়ীকে মারপিট করা হয়। রাতেই বাজার ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেলা পরিষদ সদস্য নাহার আক্তার ও এ এস এই নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিবাদসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।

বাজার কমিটির সভাপতি বিপ্লব কুমার বলেন, মারামারির সময় আমি বাজারে ছিলাম না। আমি পরে জানতে পারি জগবন্ধু দাশকে মারপিটের ঘটনা। রাতেই বাজার কমিটি জরুরী মিটিং ডেকে উক্ত ঘটনার নিন্দা জানানো হয়। এর প্রতিবাদে সকল ব্যবসায়ী সোমবার এক বেলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠার বন্ধ রাখেন। আবারো মিটিং করে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদ সদস্য নাহার আক্তার বলেন, আমি সন্ধ্যার পর বাজারে যেয়ে দেখি অনেক লোকজন দোকানদার কে মারার জন্য জড়ো হয়েছে। আমি তাদের নির্বিত করার চেষ্টা করি কিন্তু ব্যর্থ হই। পরে এ এস আই নজরুল ও লোকজোনদের ডেকে আমার অফিসে নিয়ে আসি এবং নজরুল সাহেব ব্যবসায়ীকে চড় মারে। আমি কারো গায়ে হাত তুলি নাই। এ এস আই নজরুল ইসলাম বলেন আমাকে নাহার আপা ডেকে নিয়েছিলো এবং উত্তাপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে একটা চড় মেরেছিলাম। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বিপ্লব বলেন বিষয়টি আমি জানিনা। জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এদিকে রবিবার বিকালে পাইকগাছা জিরো পয়েন্ট নামক স্থানে শেখ জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, শনিবার (২১জুলাই) বিকালে কপিলমুনি বাজারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সমাবেশে যাওয়ার জন্য সোলাদানা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে যশোর-ব-১১৬৪ নং গাড়িটি রিজার্ভ করা হয়। গাড়িটি সোলাদানা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী নিয়ে কপিলমুনি যাওয়ার পথে সলুয়া মাদরাসা নামক স্থানে পৌছালে খুলনা জেলা পরিষদ সদস্য নাহার আক্তারের নের্তৃত্বে তার লোকজন গাড়িতে হামলা চালিয়ে ড্রাইভার রিপন, সুপারভাইজার আলমগীর ও হেলপার ফয়সালকে ব্যাপক মারপিট করে গাড়ি ভাংচুর করে।

এ ঘটনায় বক্তারা দ্রুত নাহার আক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে গাড়ি বন্ধ সহ ব্যাপক কর্মসূচি ঘোষণা করে। বিক্ষোভ সমাবেশে মালিক পক্ষে বক্তব্য রাখেন শেখ হারুনুর রশিদ হিরো, শেখ জাহিদুল ইসলাম, শেখ আরিফুর রহমান টুটুল, নিরাপদ অধিকারী ভব, শ্রমিক পক্ষে শেখ মিথুন মধু, শেখ আব্দুল জব্বার বাবলু, গাজী কালাম, শংকর কুমার সরদার, রেজাউল করিম খোকন, শেখ ফারুক হোসেন, আমিরুল শিকদার, জয়নাল সরদার, রবিউল ইসলাম, শুকুর জোয়াদ্দার, হাসান গাজী, বাবুল আক্তার, আইয়ুব আলী প্রমুখ। উল্লেখ্য, নাহার বাহিনী কর্তৃক গাড়ীর লোকজন সহ সোলাদানা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের দু’নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে শ্রমিকনেতা মিথুন মধু সমাবেশে জানান।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন