পুলিশকে বিভ্রান্ত করছে আ'লীগ, তবুও পিছুপা নন থানার ওসি

  17-09-2018 07:55PM

পিএনএস, বগুড়া প্রতিনিধি : পুলিশ আসামি গ্রেফতারের পরপরই থানায় ছুটে যায় আওয়ামীলীগ নেতারা। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আসামি হয়ে যায় তাদের কর্মী। সরকার বিরোধী কর্মকান্ড ও নাশকতার ঘটনার মামলার আসামি যদি হন বিএনপি নেতা, টাকা দিলে তিনিও হয়ে যাচ্ছেন আওয়ামীলীগ অথবা কৃষকলীগের কর্মী। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার এইসব ঘটনা প্রতিদিনের রুটিনে পরিনত। আওয়ামীলীগের সহযোগি সংগঠন উপজেলা কৃষকলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন এক ব্যক্তি। সেই ব্যক্তি বিএনপির সহযোগি সংগঠন উপজেলা শ্রমিক দলেরও গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। দল থেকে পদত্যাগ বা কোনো দলে যোগদান ছাড়াই টাকার বিনিময়েই মিলছে দলীয় পদ। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়গুলোতে এসব ঘটনা অহরহ।

নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার নামুইট মহল্যার আব্দুস সাত্তার মহুরী। তিনি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও নন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট রাফী পান্না।

একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ককটেল হামলার সাথে বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তারের সম্পৃক্ততার তথ্য পেয়ে রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে নামুইট মহল্যায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানের বিষয়টি টেরপেয়ে সটকে যায় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার মহুরী। অভিযোগ উঠেছে, ককটেল হামলার মামলা থেকে বিএনপির এই নেতাকে রক্ষা করতে নানা অপচেষ্টা করে যাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান ও উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ রায়হান মানিক। সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তারের সাথে গোপন বৈঠক করেছেন তারা, এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় নেতারা। থানা পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে বিএনপি কর্মীদের আওয়ামীলীগ কর্মী দাবি করছে উপজেলা আওয়ামীলীগের কিছু নেতারাও। এদিকে, ৯ সেপ্টেম্বর রাতে নন্দীগ্রামে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জামায়াত-বিএনপির ৩৩ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেই মামলার আসামিদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রক্ষা করার চেষ্টা করছে স্থানীয় কয়েকজন নেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামীলীগের তিনজন নেতা বলেন, আসামি জামায়াত হোক আর বিএনপি হোক। মামলা হলেই কিছু নেতা সুযোগ পায়। পুলিশের বিরুদ্ধে ও আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার বিরোধী কর্মকান্ড ও নাশকতামূলক কান্ডে অর্থযোগান দেয়া সহ নেতৃত্ব দিয়েছে আব্দুস সাত্তার মহুরী। এখন টাকা নিয়ে এই বিএনপি নেতাকে আওয়ামীলীগ নেতা বা কর্মী পরিচয় দেয়া হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।

স্থানীয় নেতাকর্মী জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন। দুই উপজেলায় ব্যাপক জনপ্রিয়তায় রয়েছেন তিনি। কিছু নেতার অনৈতিক কাজের জন্য আওয়ামীলীগ এবং জেলা সভাপতির জনপ্রিয়তায় প্রভাব ফেলছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় নেতারা। এবিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামীলীগীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এপ্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে লাভ হবে না। কারো বিভ্রান্তিতে আমরা পিছুপা হচ্ছি না। ককটেল হামলার সাথে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পেয়েই বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তার মহুরীকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হয়। তবে অভিযানের বিষয়টি টেরপেয়ে সে পালিয়ে গেছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন