লাউয়াছড়ায় বানরের আক্রমণে আতঙ্কে পর্যটকরা

  09-11-2018 07:20AM



পিএনএস ডেস্ক: বাইরে থেকে নিয়ে এসে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা একটি বানরের আক্রমণে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পর্যটকদের মধ্যে। ইতোমধ্যে অনেক পর্যটক এই বানরের কামড়ের শিকার হয়েছেন। এমনকি শিশুরাও বাদ যায়নি এই বানরের হাত থেকে। বানরের সুস্থতা নিশ্চিত না হয়ে অবমুক্ত করায় দায়িত্বশীলদের সমালোচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বছরখানেক আগে শ্রীমঙ্গল শহর থেকে এই বানরটিকে উদ্ধার করে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়। অবমুক্ত করার পর থেকেই বানরটি লাউয়াছড়ার পর্যটকদের হাঁটার ট্রেইলের পাশে বসে থাকতো এবং প্রায়ই পর্যটকদের আক্রমণ করতো। ইদানীং এই বানরটির আক্রমণে বেশ কয়েকজন পর্যটক আহত হয়েছেন। অনেকেই তার আক্রমণে শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন কিন্তু বনবিভাগ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী লাউয়াছড়া ঘুরতে এলে তারাও বানরটির আক্রমণের শিকার হন। তাদের একজন শিক্ষার্থী ইয়াসমিন হক জানান, রাস্তা ধরে হাঁটার সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই বানরটি আমাদের আক্রমণ করে এবং নখ দিয়ে আঁচড় দেয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেইভ আওয়ার আনপ্রোটেক্টেড লাইফের নির্বাহী পরিচালক বন্যপ্রাণী সংরক্ষক ও সেবক তানিয়া খান বলেন, বন্যপ্রাণীর সুস্থতা সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে এভাবে জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেয়া ঠিক না। এভাবে যদি কোনো প্রাণী কাউকে আক্রমণ করে তাহলে সেই প্রাণীকে দ্রুত রেসকিউ সেন্টারে নিয়া যাওয়া উচিত এবং সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়ার আগ পর্যন্ত বনে ফিরিয়ে না আনাই ভালো। আর পর্যটকদেরও বন্যপ্রাণীদের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত কারণ তাদের আচরণ আনপ্রেডিক্টবেল। পর্যটকরা বিনা কারণের বন্যপ্রাণীদের উত্ত্যক্ত করেন।

এ ব্যাপারে সহকারী বন সংরক্ষক রেঞ্জ আনিসুর রহমান বলেন, আসলে আমরা পর্যটকদের বারবার নির্দেশনা দেই বন্যপ্রাণীদের কাছে না যাওয়ার এবং খাবার না দেয়ার, কারণ বন্যপ্রাণীদের বাইরের খাবার দিলে তারা তাদের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলে। এরপরও যে বন্যপ্রাণীরা আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠে তাদের আমরা রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা প্রদান করি।

বানরটি একভাবে আক্রমণাত্মক হওার কারণ হিসেবে জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, বন্যপ্রাণীরা মানুষকে ভয় পায় তবে বানর বা হনুমানের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি মানুষের কাছাকাছি থাকতে থাকতে তাদের ভয়টা কেটে যায় এবং অনেক সময় কিছু মানুষ তাদেরকে বিরক্ত করে যার ফলে তারা মানুষকে শত্রু ভাবে। যেহেতু বানরটি আক্রমণাত্মক সেহেতু থাকে বন্দি রাখা উচিত।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন