গৃহবধু হত্যার অভিযোগে শাশুড়ি আটক

  08-12-2018 08:21PM

পিএনএস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা আশুগঞ্জে উপজেলা মোছাঃ তানজিনা বেগম (২২) নামে এক সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে গলা টিপে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলাসদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। গতকাল শনিবার সকালে আশুগঞ্জের শরীয়তনগর এলাকার ফিরোজ মিয়ার কলোনী থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত তানজিনা হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার শিবপুর ডুপিবাড়ি এলাকার মোঃ রেনু মিয়ার মেয়ে এবং একই এলাকার মোঃ ফারুক মিয়ার পুত্র সিএনজি চালক মোঃ সোহাগ মিয়ার স্ত্রী। কাজের সূত্রে উক্ত কলোনীতে তারা পরিবারসহ ভাড়া থাকতো। নিহতের গলায় ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত ও স্বজনের অভিযোগ পারিবারিক কলহের জেরে শুক্রবার রাতে তাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শুশুর পলাতক থাকলেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শাশুড়ি মোঃ রুবিনা আক্তারকে আটক করেছেন। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

নিহতের পিতা মোঃ রেনু মিয়া জানান, প্রায় ৫-৬ বছর আগে তার মেয়ের সাথে এলাকার মোঃ ফারুক মিয়ার ছেলে সিএনজি চালক মোঃ সোহাগ মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। মেয়ের শুশুড় ফারুক আগে থেকে আশুগঞ্জে ধানের গালায় শ্রমিক এবং তার ছেলে নিহত তানজিনার স্বামী সোহাগ মিয়া আশুগঞ্জে সিএনজি চালানোর কারণে আশুগঞ্জে থাকতো। তাই বিয়ের পর তানজিনাও স্বামী-শুশুড়-শাশুড়ির সাথে আশুগঞ্জে চলে আসে এবং একই বাসায় বসবাস শুরু করে। তাদের প্রায় এক বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় তানজিনার পিতা জামাতা সোহাগকে বিভিন্ন স্বর্নালংকার ও বন্দোবস্তি জমিবাবদ প্রায় দেড়লক্ষ টাকা যৌতুক প্রদান করে। তিনি অভিযোগ করে জানান, বিয়ের পর বেশ কিছুদিন ভালভাবে চলাফেরা করলেও গত প্রায় এক বছর ধরে সোহাগের কিছু পরিবর্তন ঘটে এবং তার মেয়েকে মারধর করতে শুরু করে। ২-৩ মাস আগে বন্দোবস্তি জমিতে লগ্নিকৃত ৫০ হাজার টাকাও উঠিয়ে নিয়ে আসে। গত শুক্রবার রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে তাকে তানজিনার মৃত্যুর খবর জানানো হয়। সকালে তিনিসহ অন্যান্য কয়েক আত্মীয়কে নিয়ে আশুগঞ্জ আসে। মেয়ের লাশ দেখে তাদেও সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে স্বামী ও শুশুড় পালিয়ে যায়। তার অভিযোগ, তার মেয়েকে স্বামী সোহাগ ও শুশুড়-শাশুড়ি মিলে হত্যা করেছে। তিনি এ ঘটনায় সুষ্ট বিচার দাবী করে মামলা করবেন বলে জানায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ভক্ত চন্দ্র দত্ত বলেন, সুরতহাল রির্পোটে নিহতের গলায় ও ঘাড়ের পিছনে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরে শুক্রবার রাতে গলা টিপে হত্যা করা হতে পারে। লাশ ময়নাতন্তের জন্য জেলাসদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুও সঠিক কারণ ও সময় জানা যাবে। পুলিশ আসার আগেই স্বামী ও শুশুড় পালিয়ে যায়।

এব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ওসি মোঃ বদরুল আলম তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার কওে ময়নাতদন্তের জন্য জেলাসদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন