চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.১ ডিগ্রি

  17-01-2019 07:16AM

পিএনএস ডেস্ক : দেশের বিভিন্ন স্থানে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। অঞ্চল ভেদে কোথাও ‘তীব্র’, কোথাও ‘মাঝারি’ ও ‘মৃদু’ শৈত্যপ্রবাহ বইছে। সারা দেশের মানুষ শীতে কাবু, বিপর্যস্ত জনজীবন। অনেকটাই জবুথবু অবস্থা।

নিম্নআয়ের দরিদ্র ও বস্ত্রহীন মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। এই শীতে বেশি ভুগছে বয়স্ক ও শিশুরা। বিভিন্ন হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত শিশু ও বয়স্ক রোগীদের ভিড় বেড়েছে। শীতে বোরো ধান এবং আলুর ফলনে প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর (বিএমডি) বলেছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। মূলত এ কারণে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত আছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী- টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও মৌলভীবাজার অঞ্চলসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বলে। তাপমাত্রা যদি ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে তবে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আর ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে বলে মৃদু শৈত?্যপ্রবাহ। এ হিসাবে দেশের বেশির ভাগ স্থানে শৈত্যপ্রবাহ বইছে।

তবে বুধবার দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোগবালাই। কোল্ড ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানিসহ নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।

শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা। বয়স্ক রোগীদের মধ্যে শীতের কারণে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সংখ্যা বেড়েছে। অনেকে ডায়রিয়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে এ ধরনের রোগী বাড়ছে বলে জানা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, জেলায় শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। কেবল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই ভর্তি আছে ৯০টি শিশু। এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে বুধবার ১৮০ শিশু ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছে। ডাক্তার সংকটের কারণে চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে গেছে আরও ৫০ শিশু।

সদর হাসপাতালের শিশু কনসালট্যান্ট আসাদুর রহমান মালিক খোকন জানান, ‘শিশুরা শীতের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ছুটিতে থাকায় বুধবার প্রায় ৫০ জন শিশু রোগীকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন তাদের অভিভাবকরা।’

লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, দিনে হালকা রোদ থাকলেও সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়ছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। প্রচণ্ড শীতের দাপটে নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন নিম্নআয়ের লোকজন।

আর শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে শীতজনিত রোগ। গত দুই দিনে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২১ জন ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জনই শিশু।

সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমাইয়া আক্তার জানান, গত দুই দিনে শীতজনিত রোগে শিশু ওয়ার্ডে ১২ জন ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাই বেশি।

এছাড়া মেডিসিন ওয়ার্ডে শীতজনিত রোগে বিভিন্ন বয়সী আরও ৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন মজুদ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন